Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বিমান অধরা, এখনও পর্যন্ত জোরালো ছিনতাই-তত্ত্বই

নিখোঁজ বিমান যাত্রীদের পরিবারের লোকেদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন ইন্দোনেশিয়ার ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা। ছবি: এএফপি।

নিখোঁজ বিমান যাত্রীদের পরিবারের লোকেদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন ইন্দোনেশিয়ার ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৪ ১৪:৫১
Share: Save:

সব ঠিক আছে, শুভরাত্রি— নিশ্চিন্ত এই বার্তা দিয়েই উধাও হয়ে গিয়েছিল বিমানটি। তার পর সপ্তাহ অতিক্রান্ত, এখনও বেপাত্তা মালয়েশীয় বিমানের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। সন্ধান চলছে। চলছে তদন্তও। যত দিন যাচ্ছে ততই ছিনতাই তত্ত্বের দিকেই ঝুঁকছে পর্যালোচনা।

শনিবার সরাসরি না হলেও সেই দিকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। এই তত্ত্বকে সামনে রেখে সব রকমের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হলেও মালয়েশিয়া সরকার স্পষ্ট ভাবে বলতে পারছে না ‘ছিনতাই’ হয়েছে। কারণ এই ‘দাবি’কে প্রতিষ্ঠিত করতে যে প্রমাণগুলির প্রয়োজন তার প্রায় কোনওটিই তাদের হাতে এসে পৌঁছয়নি। কাজেই সন্ধান পর্বও জারি রাখা হয়েছে। বিশ্বের প্রায় ২৫টি দেশ মিলে এই কাজে হাত লাগিয়েছে।

বিমানের জ্বালানি এবং শেষ সঙ্কেত পাওয়ার সময় থেকে হিসেব কষে বিমানটি ঠিক কত পথ উড়তে পারে তা আন্দাজ করে দু’টি সম্ভাব্য করিডরের কথা বলা হয়েছিল শনিবার। সেই মতো দক্ষিণ করিডরে সন্ধানের দায়িত্ব নিতে অষ্ট্রেলীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল মালয়েশিয়া। সোমবার অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট জানিয়েছেন, অনুসন্ধানের কাজে সাহায্য করছেন তাঁরা।

সন্ধান পর্বের পাশাপাশি তদন্তের কাজও চালানো হচ্ছে মালয়েশীয় সরকারের তরফে। শনিবার ওই বিমানের চালকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। বিমানটির রহস্যজনক গতিবিধির কথা মাথায় রেখে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, এমন কেউ বা কারা ওই বিমানে ছিলেন, যিনি বা যাঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গোটা ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন। সেই মতো, বিমানের যাত্রী তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের পরিচয় নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু হয়। তাঁদের মধ্যে কারও বিমান উড়ান সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা আছে কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে এ দিন তদন্তে মহম্মদ খাইরুল আমরি সেলামত নামের এক ব্যক্তির কথা উঠে এসেছে। তিনি ওই বিমানে ছিলেন।

মালয়েশীয় পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১১ সালে একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেকে ‘ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার’ বলে দাবি করেছিলেন খাইরুল। পুলিশ খবর নিয়ে জেনেছে, সুইত্‌জারল্যান্ডের একটি বিমান কোম্পানিতে কাজ করতেন তিনি। সেই কোম্পানির মালয়েশীয় দফতরের এক আধিকারিক এ দিন জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কোনও তথ্য বাইরে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ওই বিমানে মালয়েশিয়া থেকে বেজিং যাচ্ছিলেন খাইরুল। ওই সংস্থায় তাঁর কাজের ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও বড় জেটলাইনার বিমান চালানো এবং তাকে অন্য পথে চালনা করার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ খাইরুলের ছিল না বলেই মনে করছে পুলিশ।

এ দিন খাইরুলের বাবা সেলামত ওমর সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি কুয়ালা লামপুরে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন তাঁর ছেলে। সেই বাড়িতে সপরিবার ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেলে অফিসের কাজে বেজিং যাচ্ছে জানানোয় তা পিছিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে খাইরুল এমন কাজ করতে পারেন কি না সে প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি ওমর।

তদন্তে গতি এলেও, সন্ধানের কাজে আরও নজরদারি বাড়লেও কিন্তু বিমান রহস্য যেখানে ছিল সোমবার পর্যন্ত রয়ে গেল সেখানেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

malaysian airlines Airlines Flight 370
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE