Advertisement
E-Paper

লাগাতার হামলা, গাজায় মৃত ৬০৪

মুহুর্মুহু যুদ্ধবিমান, ড্রোনের আক্রমণ। সঙ্গে গোলাবর্ষণ এবং সেনার হামলা। প্রাণ হারাচ্ছেন শিশু-সহ সাধারণ নাগরিকরা। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলি। শহরের অনেকাংশ ধ্বংসস্তূপ। চার দিকে হাহাকার। প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ত্রাণশিবিরে উপচে পড়ছে ভিড়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ১৯:২৭
ধ্বংসের সাক্ষী। রাতভর ইজরায়েলি হানার পরেও দাঁড়িয়ে আছে আল-সালাম টাওয়ার। ছবি: এপি।

ধ্বংসের সাক্ষী। রাতভর ইজরায়েলি হানার পরেও দাঁড়িয়ে আছে আল-সালাম টাওয়ার। ছবি: এপি।

মুহুর্মুহু যুদ্ধবিমান, ড্রোনের আক্রমণ। সঙ্গে গোলাবর্ষণ এবং সেনার হামলা। প্রাণ হারাচ্ছেন শিশু-সহ সাধারণ নাগরিকরা। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলি। শহরের অনেকাংশ ধ্বংসস্তূপ। চার দিকে হাহাকার। প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ত্রাণশিবিরে উপচে পড়ছে ভিড়। গত কয়েক দিনের গাজার ছবিটি সোমবারেও একই রকম ছিল। এ দিন মৃত প্যালেস্তিনীয়দের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬০৪, যার মধ্যে ১২০ জন শিশু। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সাধারণ নাগরিক। প্রাণ হারিয়েছে সাত ইজরায়েলি সেনাও।

সোমবারও মূলত গাজার উত্তরে শেজাইয়া প্রদেশে অভিযান চালায় ইজরায়েল। এ দিন মধ্য গাজায় আল আকসা হাসপাতালের তৃতীয় তলে ইজরায়েলি সেনার ছোড়া গোলা এসে পড়ে। এতে পাঁচ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটার, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ক্ষতি হয়েছে বলে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। রেডক্রস এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে। রেডক্রস জানিয়েছে, হাসপাতালটি এর আগেও কয়েক বার আক্রান্ত হয়েছে। হামলায় জীবনদায়ী যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে রেডক্রসের অভিযোগ। যদিও ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, হাসপাতাল চত্বর থেকে বার বার রকেট হানার জবাবে এই হামলা করা হয়েছে। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে অন্য প্যালেস্তিনীয় অঞ্চল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও। জেরুজালেমে আন্দোলনকারীদের দমন করতে ইজরায়েলি নিরাপত্তারক্ষীর ছোড়া গুলিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। অন্য দিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণশিবিরে আশ্রিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ। প্রায় ১২ লক্ষ প্যালেস্তিনীয় পানীয় জলের অভাবে ভুগছেন বলে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে।

ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, স্থল অভিযান চালাতে গিয়ে তাদের এক জন সেনা নিখোঁজ হয়েছে। গত কালই হামাস এক ইজরায়েলি সেনাকে বন্দি করার দাবি করেছিল। দেখানো হয়েছিল তাঁর পরিচয়পত্রও। কিন্তু ইজরায়েল সে দাবি নস্যাৎ করে দেয়। নিখোঁজ সেনাই সেই ব্যক্তি কি না তা জানা যায়নি। তবে হামাসের দাবি সত্য হলে এই সংঘর্ষের অভিমুখ পাল্টে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। এ দিন হামাসের নেতাদের বাড়ি লক্ষ করেও হামলা চালানো হয়। তবে এ ক’দিনের অভিযানের পরও হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করা যায়নি। এ দিনও দক্ষিণ ইজরায়েলের একাধিক শহর লক্ষ করে রকেট ছোড়ে হামাস। এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’হাজার রকেট ছুড়েছে হামাস। জবাবে ইজরায়েল প্রায় ৩০০০ লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সুড়ঙ্গপথে ঢুকে হামাসের উপর হামলা করার চেষ্টা। ইজরায়েলি সেনার প্রকাশ করা ভিডিও থেকে দেখা যাচ্ছে, হামাসের একটি দল সুড়ঙ্গপথে ইজরায়েলে ঢুকে সেনার একটি গাড়ি লক্ষ করে মর্টার আক্রমণ করছে। এতে চার জন ইজরায়েলি সেনা নিহত হন। জবাবে বিমান হামলায় ১০ জঙ্গির মৃত্যু হয়।

এই সুড়ঙ্গগুলি বন্ধ করতেই স্থলপথে অভিযানের আদেশ দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু। সেই হামলা চালাতে গিয়েই রবিবার ১৩ জন ইজরায়েলি সেনার প্রাণ যায়। ২০০৬-এর লেবানন অভিযানের পরে এই যুদ্ধেই এক দিনে সবচেয়ে বেশি সেনার মৃত্যু হল। তবে এর মধ্যে ২৩টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা হিয়েছে বলে নেতানেয়াহু জানিয়েছেন। এই খবরে ইজরায়েল জুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে। অনেক বাড়িতে ইজরায়েলি জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। তবে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াই সংখ্যাগরিষ্ঠের মত বলে ইজরায়েলি প্রশাসনের দাবি।

মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি গাজার জন্য ৪ কোটি ৭ লক্ষ ডলারের ত্রাণ পাঠানোর কথাও ঘোষণা করেছেন। কায়রো সফররত মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরিকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। কায়রোয় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে জন কেরির আলোচনা হয়েছে। মিশরের একাধিক আধিকারিকের সঙ্গেও কেরির আলোচনা হওয়ার কথা।

gaza death death toll rises
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy