Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সিউড়িতে সিপিএম কর্মী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল

নিহত সিপিএম কর্মী শেখ হীরালালের দেহ ঘিরে শোকার্ত গ্রামবাসীরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিহত সিপিএম কর্মী শেখ হীরালালের দেহ ঘিরে শোকার্ত গ্রামবাসীরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৪ ১২:৫৭
Share: Save:

সিউড়ির সক্রিয় সিপিএম কর্মী শেখ হীরালালকে শুক্রবার খুনের ঘটনায় তৃণমূলের আট জন সমর্থকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। শনিবার যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী। অভিযুক্তরা হলেন শেখ ইজরাইল, শেখ জিয়াউর রহমান, শেখ হানিফ, শেখ আনিফ, শেখ নূর হক, শেখ নুর আলম, শেখ মানিক ও শেখ সেন্টু। তবে এখনও পর্যন্ত এঁদের কেউ গ্রেফতার হয়নি।

অন্য দিকে, ওই দিন সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় পাঁচ সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবারই এই পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১ (অন্যায় ভাবে আটকে রাখা), ৩২৭ (সরকারি সম্পত্তি নষ্ট), ১২০ বি(ষড়যন্ত্র)-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃতদের শনিবার আদালতে তোলা হয়। দোষীদের মধ্যে তিন জনকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজত ও বাকি দু’জনকে তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

শুক্রবার সিউড়ির চাঁদমারি ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী সভার কিছু দূরেই কালভার্টের নীচে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। সিউড়ি ২ ব্লকের সলখানা গ্রামের কাছে কালভার্টের নীচে প্লাস্টিকে মোড়া অবস্থায় এই শক্তিশালী বিস্ফোরক রাখা ছিল বলে জানায় পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় সিপিএম কর্মী শেখ হীরালালকে শাসক দলের কর্মীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ জানায় সিপিএম। গুরুতর জখম অবস্থায় হীরালালকে সিউড়ি সদর হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে কলকাতায় নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। এ দিন নিহতের দাদা জানান, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ও পুরনো আক্রোশ মেটাতেই খুন করা হয়েছে তাঁর ভাইকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই দিন বিস্ফোরক উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন হীরালাল। সেই সময় টাঙি, রড ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হন তৃণমূলের কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ষড়যন্ত্র করে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে শেখ হীরালালকে। কিন্তু এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। এ দিন তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, খুনের ঘটনায় তাদের কর্মীদের কোনও হাত নেই। পরিকল্পনা করে তৃণমূল কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে সিপিএম। ঘটনা প্রসঙ্গে এ দিন সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই দিন বিস্ফোরক পাওয়ার পর তৃণমূল সমর্থকেরা খুবই উত্তেজিত ছিল। সেই সময় এক জন লোককে পালিয়ে যেতে দেখে সন্দেহবশত তাঁকে মারধর করা হয়ে থাকতে পারে। তবে যাঁদের নামে এফআইআর করা হয়েছে তাঁরা কেউই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।’’

শুক্রবার বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনার পরেই সরব হন একাধিক তৃণমূল নেতা। মালদহের হোটেলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে এসি বিভ্রাটের পর শুক্রবার ফের সিউড়িতে নির্বাচনীর সভার আগে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে পরিকল্পনা করে খুনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই দাবি করেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE