ফের শুরু হল ষুদ্ধ। ছবি: এপি।
আরও ২৪ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হল হামাস। কিন্ত ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের আবেদন মেনে ইজরায়েলের তরফে শনিবারের ১২ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতিকে আরও ১২ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন হামাস রাজি ছিল না। ফলে আকাশ, স্থল ও জলপথে গাজায় ফের আঘাত হানতে শুরু করে ইজরায়েল। স্থানীয় সময় অনুযায়ী রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চলার কথা ছিল। কিন্তু হামাস আবার রকেট ছোড়া শুরু করায় পাল্টা আঘাত হানে ইজরায়েল।
রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি রবার্ট সেরি জানিয়েছেন, দীর্ঘ আলোচনার পরে হামাস ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। ইজরায়েল এই প্রস্তাব মেনে নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন। রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু করার প্রস্তাব দেয় হামাস। কিন্তু অনেক টালবাহানার পরে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় ইজরায়েল। ফলে ঈদের আগে গাজায় শান্তি ফেরার আশা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। গাজায় একাধিক গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গিয়েছে। প্রয়োজনে গাজাকে পুনর্দখল করা হতে পারে বলে ইজরায়েলি প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। শনিবার ১২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির সুযোগে গাজায় শুরু হয় উদ্ধার ও রসদ সংগ্রহের কাজ। ওই সময়ের মধ্যে ১৫১টি মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। এতে গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০৩৪। প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ জন ইজরায়েলিও।
যুদ্ধবিরতির সময়ে গাজার রাস্তায় গাড়ি আর মানুষের ভিড় জমে যায়। ব্যাঙ্ক ও নানা বিপণির সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। অনেকেই তাঁদের ফেলা আসা ঘর দেখতে যান। কিন্তু বাড়ির খোঁজে গিয়ে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। কারণ, অধিকাংশ বাড়িই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যদিও এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইজরায়েল হামাসের সুড়ঙ্গগুলি ধ্বংসের কাজে নেমেছে। হামাসের তরফ থেকে শনিবার ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছিল। ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, রবিবার ভোরের দিকে হামাসের মর্টার আক্রমণে তাঁদের এক জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া, দক্ষিণ ও মধ্য ইজরায়েলের দিকে হামাস রকেটও ছুড়েছে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে একটি রকেট ‘এশাকোল রিজিওনাল কাউন্সিল’-এ আঘাত করে। তবে এই হামলায় কেউ হতাহত হননি। হামাসের জঙ্গি শাখা কোয়াসেম ব্রিগেড জানিয়েছে, তারা ইজরায়েল লক্ষ্য করে মাঝারি ও দূরপাল্লার রকেট ছুড়েছে। জবাবে শুরু হয়েছে ইজরায়েলি আক্রমণও। গাজা ফিরে গিয়েছে তার পরিচিত অবস্থায়।
অন্য দিকে প্যারিসে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। তবে ইজরায়েলি প্রশাসন সূত্রে আশু স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা খুবই কম। প্রায় একই মত হামাসেরও। মিশর ও ইজরায়েল তাদের উপর থেকে অবরোধ না তুললে তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে না বলে জানিয়েছে হামাস। তা ছাড়া দীর্ঘ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে গাজা থেকে ইজরায়েলি সেনা সরিয়ে নিতে হবে বলেও হামাসের দাবি। সামনে ঈদের কথা মাথায় রেখেই ২৪ ঘণ্টার নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে হামাস জানিয়েছে। এ দিকে প্যারিসের আলোচনায় মিশর, ইজরায়েল ও প্যালেস্তিনীয় কোনও প্রতিনিধি যোগ দেননি। ফলে এই আলোচনা থেকে কোনও সুখবর পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই ইজরায়েলের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy