E-Paper

বিড়ি মালিক নন, প্রার্থীতে খুশি কংগ্রেস

জঙ্গিপুরের ভোট যুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে চর্চায় ছিল অনেকের নাম। হাওয়ায় ভাসছিল এক বিড়ি মালিকের নামও।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩০
জঙ্গিপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তজা হোসেন।

জঙ্গিপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তজা হোসেন। নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের লড়াইতে কংগ্রেস জঙ্গিপুরে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানকে। এআইসিসি আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করলেও বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী জঙ্গিপুরের প্রার্থী হিসেবে মোর্তজা হোসেন ওরফে বকুলের নাম ঘোষণা করেছেন। তখনই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন, বহরমপুরে ফের দাঁড়াচ্ছেন তিনিই। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে লড়বে সিপিএম, ভগবানগোলা উপনির্বাচনে জোটের হয়ে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস।

জঙ্গিপুরের ভোট যুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে চর্চায় ছিল অনেকের নাম। হাওয়ায় ভাসছিল এক বিড়ি মালিকের নামও। কিন্তু কংগ্রেসে নিচুস্তরের কর্মী ও নেতারা বিড়ি মালিককে এ বারে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোর বিরোধী ছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, কংগ্রেস দলের মধ্যে থেকেই প্রার্থী বাছাই করতে হবে। মোর্তজার মনোনয়নে কর্মীদের দাবির প্রতিই সিলমোহর দিল দল।

বছর ৫১ বয়সের মোর্তজা হোসেন কংগ্রেসের প্রয়াত কৃষিমন্ত্রী আব্দুস সাত্তারের ভাই সিরাজুল ইসলামের নাতি। লালবাগ মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি। লালগোলার দু’দু’বারের জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। এ বারে জেলা পরিষদে দাঁড়িয়ে জয় হাতছাড়া হয়েছে বামেদের সঙ্গে ওই আসনে জোট না হওয়ায়। কংগ্রেস ২২ হাজার এবং সিপিএম ১৯ হাজার ভোট পাওয়ায় ত্রিমুখী লড়াইয়ে ২৬ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী হয় তৃণমূল। লোকসভায় অবশ্য সিপিএমের সঙ্গে জোট প্রার্থী হিসেবেই জঙ্গিপুরে লড়বেন মোর্তজা হোসেন।

কংগ্রেস নেতা আব্দুস সাত্তার লালগোলা থেকে ৭ বার বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন। হয়েছেন রাজ্যের কৃষি ও ক্ষুদ্র সেচমন্ত্রীও। হয়েছেন বিরোধী দলের নেতাও। তাঁর ছেলে আবু হেনা লালগোলা থেকে জিতেছেন ৬ বার। এ বারের লোকসভায় কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তজা আব্দুস সাত্তারের ভাই সিরাজুল ইসলামের নাতি। কংগ্রেস ঘরানায় বড় হয়েছেন। রাজনীতিতে হাতেখড়ি ১৯৯৮ সালে গ্রাম পঞ্চায়েতে লালগোলার প্রধান হিসেবে। ২০০৩ ও ২০১৩ সালে জেলা পরিষদ সদস্য হন দু’বার। ২০১৩ সালে হন জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ। লালগোলার কংগ্রেস রাজনীতিতে মোর্তজা হোসেন এক জন স্বচ্ছ মুখ হিসেবে পরিচিত। আব্দুস সাত্তারের পরিবারের ছেলে হিসেবে লালগোলা, সাগরদিঘি ও রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কিছুটা প্রভাবও রয়েছে তাঁর। তৃণমূল প্রার্থী মিষ্টভাষী খলিলুর রহমানেরও যথেষ্ট স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। স্বভাবতই এ বারে কিছুটা হলেও নির্বাচনী লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে খলিলুরকে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খলিলুর রহমান ৫.৬২ লক্ষ ভোট পান জঙ্গিপুরে। কংগ্রেস ও সিপিএম আলাদা ভাবে লড়াই করে। তাদের সম্মিলিত ভোট দাঁড়ায় ৩.৫১ লক্ষ। বিজেপি পায় ৩.১৭ লক্ষ ভোট।

কংগ্রেস প্রার্থী মোর্তজা হোসেন বলছেন, “তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানকে আমি চিনি না। নিশ্চয় দেখা হবে প্রচারের পথেঘাটে। তবে নির্বাচনে লড়াই তো হবে রাজনৈতিক ভাবে দলের সঙ্গে দলের। উনি বিড়ি মালিক আর আমি বিড়ি শ্রমিকের প্রতিনিধি। সাগরদিঘির নির্বাচনে তৃণমূল নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করার। কথা রাখেননি তাঁরা। বিড়ি শ্রমিকেরা না খেতে পেয়ে মরতে বসেছেন। কিন্তু বিড়ি মালিকেরা ফুলে ফেঁপে উঠছেন ক্রমশ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Jangipur Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy