হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
দলের নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ভরতপুর বিধানসভা এলাকায় ‘লিড’-এর সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। হুমায়ুন বলেন, “আমি আমাদের দলের প্রার্থী ইউসুফ পাঠানকে যে পরিমাণ লিড দেওয়ার কথা বলেছিলাম, সেটা পূরণ হবে বলে মনে হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন “বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ভরতপুর বিধানসভা একটা ভাল জায়গায় থাকবে, সেটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।”
ওই কেন্দ্রে দলীয় ভাবে ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করার এক দিন পরেই প্রকাশ্যে প্রার্থী নিয়ে মুখ খুলেছিলেন হুমায়ুন। সেই সময় তিনি দাবি করেন, “বহরমপুর কেন্দ্রে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকে পরাজিত করতে হলে গায়ক বা খেলোয়ার প্রার্থী দিয়ে কিছু হবে না। এখানে পোক্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিকেই প্রার্থী করতে হবে।” দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে এমন মন্তব্য করার পরে তিনি স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিলেন, “দলের কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে নয়, দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে আশানুরূপ ইঙ্গিত পেলে তবেই ইউসুফকে প্রার্থী হিসাবে মানব।” পরে বৈঠকও হয়েছিল এবং ইউসুফের হয়ে এলাকায় প্রচার করা থেকে সভা সমস্ত কিছু করেছেন হুমায়ুন। এমনকি ভরতপুর কেন্দ্রের ভরতপুর ১ ও ২ ব্লক তৃণমূলের দু’জন সভাপতির সঙ্গে মনোমালিন্য থাকার পরেও তিনি শুধু দলনেত্রীর কথায় ইউসুফের হয়ে ভোট করার জন্য বারবার ছুটে গিয়েছেন দু’জন ব্লক সভাপতির কাছে।
সোমবার ভোটের পরে মঙ্গলবার হুমায়ুনের কথায় গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় এলাকায় প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে যে বিভাজন দেখা দিয়েছিল সেটা এখনও ঠিক হয়নি। ভোটের কারণে সকলে মিলে সভায় পাশাপাশি বসে সভা করা হলেও মনের মিল হয়নি। হুমায়ুন বলেন, “লোকদেখানি মিলন হলেও অন্দরের মিল হওয়াটা জরুরি। আমাদের নেত্রী যখন আমাকে ইউসুফ পাঠানকে জেতানোর দায়িত্ব দিলেন সেই সময় থেকে একটা ঈর্ষা কাজ করেছে।” হুমায়ুন বলেন, “ভোটের সময় যে খরচ হয় সেটা বুথ স্তরে বিলি বণ্টন নিয়েও সমন্বয়ের অভাব দেখা গিয়েছে। এসবের কারণে আমি প্রায় ৫০ হাজারের বেশি লিড শুধু ভরতপুর বিধানসভা থেকে আশা করে ছিলাম, তার থেকে কম হবে বলে মনে হচ্ছে।”
বিধায়ক তাঁর নিজের কথাই বলেছেন বলে দাবি করে ভরতপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা একেবারে নিচুতলার কর্মী। টানা দু’মাস ধরে যে ভাবে ভোট নিয়ে প্রচার, সভা করেছি তাতে এলাকার মানুষ রাজ্য সরকারের উন্নয়নের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই, দলের সর্ব স্তরের নেতা ও কর্মীরা আমাদের নেত্রীর পাঠানো প্রার্থী ইউসুফ পাঠানকে জয়ী করার জন্য দিনরাত না মেনে পরিশ্রম করেছেন।” জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “ওই বিধায়কের প্রসঙ্গে যত কম কথা বলা হয়, ততই ভাল। নিজের বিধানসভা এলাকায় নিজে উদ্যোগী হয়ে ক’টা সভা করেছেন, দেওয়াল লিখন, পোস্টার করেছেন সেটা নিজে একবার ভেবে দেখুন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy