Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
CRPF Jawan

WB Election: নন্দীগ্রামে ভোট মিটতেই খোশমেজাজে বিজেপি শিবির, চুলচেরা বিশ্লেষণে ডুবে তৃণমূল

বুথভিত্তিক ভোটের পরিমাণ-সহ ভোটারদের প্রকৃত অবস্থান নিয়ে নিখুঁত হিসেবনিকেশে ব্যস্ত শাসকদলের নেতৃত্ব।

ভোটদান শেষে প্রবীণা কে বুথের বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান।

ভোটদান শেষে প্রবীণা কে বুথের বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ছবি পিটিআই।

সুমন মণ্ডল 
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২১ ০২:০৫
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী দ্বৈরথ শেষ। এ বার অপেক্ষা ফল ঘোষণার। এখন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোরদার জল্পনা। এরই মধ্যে ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে যুযুধান দুই শিবিরে। এক দিকে দারুণ ফলের আশায় পদ্ম শিবির প্রায় খোশমেজাজেই সময় কাটাচ্ছে। অন্য দিকে দলনেত্রীর জন্য চুলচেরা বিশ্লেষণে মগ্ন ঘাসফুল শিবির। শুক্রবার দুই শিবিরের হাল হকিকৎ খতিয়ে দেখতে গিয়ে নন্দীগ্রামে দুই শিবিরের ছবিই ধরা পড়েছে আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা গত কয়েকদিন যেখানে অস্থায়ী আস্তানা তৈরি করেছিলেন, সেই রেয়াপাড়া শিব মন্দির বাসস্ট্যান্ডের পাশেই দেখা মিলল পদ্মশিবিরের কয়েক জনের সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একদা সিপিএম পরিচালিত নন্দীগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি দুর্গাশঙ্কর গিরি। বাম শিবির ছেড়ে তিনি এখন ‘রাম’-এর সেনাপতি। দুর্গাশঙ্কর বললেন, ‘‘সব হিসেবনিকেশ শেষ হয়ে গিয়েছে। এ বারের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে দাদা (শুভেন্দু অধিকারী)-ই জিতছেন।’’

নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তাঁর যুক্তি, যে সময় রাজ্যে বামেদের স্বর্ণযুগ ছিল, তখন নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকে বিরোধীদের থেকে প্রায় ১৪ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকত বামেরা। এখন সেই বাম ভোটারের পুরোটাই চলে গিয়েছে পদ্ম শিবিরে। গত কয়েকটি নির্বাচনে তৃণমূল এই এলাকায় ভাল ফল করলেও তা নিছকই গা-জোয়ারি ভোট ছিল বলেই দাবি তাঁর। এ বার যে ভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, তাতে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুভেন্দু পাঁচ অঙ্কের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেবেন বলেই দাবি দুর্গাশঙ্করের। এ ছাড়া নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ভেকুটিয়া, হরিপুর, সোনাচূড়া, গোকুলনগর, নন্দীগ্রাম এই পঞ্চায়েতগুলোর ভোটাররা গেরুয়া শিবিরের হাত শক্ত করেছে বলেই দাবি তাঁর। বাকি ৫টি পঞ্চায়েত— কালীচরণপুর, কেন্দামারী জালপাই, দাউদপুর, মহম্মদপুর ও সামসাবাদ এলাকায় তৃণমূল কিছুটা ব্যবধান বাড়ালেও এই ব্লক থেকে অন্তত চার সংখ্যার ব্যবধানে জয় আসবে বলে আশাবাদী বিজেপি শিবির। তাই ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর বিজেপি আর নতুন করে কাটাছেঁড়া করতে আগ্রহী নয়।

অন্য দিকে, ভিন্ন তৎপরতা দেখা গিয়েছে তৃণমূল শিবিরে। বুথভিত্তিক ভোটের পরিমাণ-সহ ভোটারদের প্রকৃত অবস্থান নিয়ে নিখুঁত হিসেবনিকেশে ব্যস্ত শাসকদলের নেতৃত্ব। প্রতিটি পঞ্চায়েতের এক একটি বুথ থেকে রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ চলছে জোর কদমে। কোন বুথে কেমন পরিস্থিতি তা নিয়ে একটা রিপোর্ট তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তিনিই নন্দীগ্রাম থেকে বিপুল ভোটে জিতবেন। তা হলে এত পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন পড়েছে কেন? নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাস বলছেন, ‘‘দলনেত্রীর জয় নিশ্চিত। পাঁচ অঙ্কের ব্যবধানে মমতা জিতছেন।’’ নিশ্চিত হলেও দলের নিয়ম মেনে ভোট পরবর্তী বিশ্লেষণ জরুরি বলেই জানিয়েছেন স্বদেশ। তাঁর মতে, ‘‘ভোটপর্বে কোনও খামতি থেকে গিয়েছে কি না, কোথাও সমস্যা হয়েছিল কি না সে সব রিপোর্ট তৈরি করা প্রয়োজন। পরবর্তী কালে এই হিসেবনিকেশ দলকে শক্তি জোগাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE