Advertisement
E-Paper

দাপাল বাহিনী, ববি ব্যাকফুটেই

টি টুয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নেমেই হোঁচট খেলেন বন্দরের তৃণমূল প্রার্থী ববি হাকিম। চেতলায় নিজের খাস তালুকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁর গাড়ির লালবাতি খুলে ধরিয়ে দিল চালকের হাতে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০১:০০
ভোট-আলাপ। শনিবার, খিদিরপুরে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

ভোট-আলাপ। শনিবার, খিদিরপুরে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

টি টুয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নেমেই হোঁচট খেলেন বন্দরের তৃণমূল প্রার্থী ববি হাকিম।

চেতলায় নিজের খাস তালুকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁর গাড়ির লালবাতি খুলে ধরিয়ে দিল চালকের হাতে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে অসহায় বন্দরের বিদায়ী বিধায়ক।

শুরুতেই কেমন যেন তাল কেটে গেল।

ততক্ষণে খবর এসে গিয়েছে যে, বন্দর কেন্দ্রে প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করেছেন জোট-প্রার্থী রাকেশ সিংহ। বুথে বুথে হানা দিয়ে ভুয়ো ভোটার ধরছেন। কোথাও আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সজাগ করে দিচ্ছেন। বহিরাগতদের খুঁজে বের করছেন।

রাকেশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাপটে সকাল থেকেই ব্যাকফুটে ববি-বাহিনী। ১৩৩, ১৩৪ এবং ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে দেখা মিলল না মুন্না বাহিনীর। মুদিয়ালি রোডের বাসিন্দা মেয়র পারিষদ শামসুজ্জামান আনসারির অফিসেও সকাল থেকে তালা।

দুপুরের পরে কৌশল বদল করলেন ববি। সাদা স্করপিও ছেড়ে পায়ে হেঁটে ঢুকে পড়লেন বস্তিতে বস্তিতে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে ভোট দিতে যাওয়ার আর্জি জানাতে শুরু করলেন বন্দরের বিদায়ী বিধায়ক।

এর পরেই আসতে লাগল একের পর এক বুথ দখলের অভিযোগ। জোট প্রার্থী রাকেশ সিংহ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ পাঠালেন। তাতে ফলও হল। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হল পুলিশ। ফের পিছু হটতে লাগল ববি-বাহিনী।

সকাল থেকে কিছু বুথে ইভিএম খারাপ হয়ে যাওয়ায় ঘণ্টাখানেক ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। এ বার নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানোর পালা ববির। কমিশনের কাছে তাঁর আবেদন ভোট যন্ত্র খারাপের জন্য অনেক মানুষ ভোট দিতে পারেননি। ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেওয়া হোক। কমিশন অবশ্য ববির আর্জি খারিজ করে দেয়।

এ দিন রামকমল স্ট্রিটে সিপিএমের আঞ্চলিক কমিটির অফিসে বসে প্রাক্তন মেয়র পারিষদ ফৈয়াজ আহমেদ বলছিলেন, ‘‘ভোট আমাদের দিকে পড়েছে বলেই মনে হচ্ছে। দেখছেন না বিদায়ী বিধায়ক দরজায় দরজায় ঘুরতে শুরু করেছেন!’’

তবে আর এক জোট নেতা কংগ্রেসের মোক্তার আহমেদ কেমন যেন চুপচাপ। মোক্তারের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, ‘রাকেশের সঙ্গে মনে হয় ‘দাদা’ (মোক্তার) নেই।’ মোক্তার নিজে কিন্তু বলেছেন, ‘‘আমি দলের প্রার্থীর সঙ্গেই আছি।’’

ববি বাহিনীর ব্যাকফুটে যাওয়ার অবশ্য অন্য একটা কারণও রয়েছে। ২১ এপ্রিল কলকাতার প্রথম দফার ভোটে জোড়াসাঁকো-পোস্তা এলাকায় ‘দাদাদের’ দমন করেছিলেন ডিসি ডিডি-২ নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। এ দিন বন্দর সামলানোর দায়িত্ব নিয়ে বন্দরের তিনটি থানা এলাকা দাপিয়ে বেড়ালেন নগেন্দ্র।

শাসক দলের কোনও কোনও অংশ থেকে পুলিশের অতি সক্রিয় ভূমিকার সমালোচনা করা হলেও, বন্দরের ভোটাররা কিন্তু খুশি। গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডের বাসিন্দা মোহন সর্দার এসেছিলেন হরিমোহন ঘোষ কলেজে ভোট দিতে। তিনি বললেন, ‘‘সল্টলেকে নির্বিঘ্নে ভোট করিয়ে পুলিশ প্রমাণ করেছে তারা চাইলে পারে। ফের বন্দর এলাকায় সেই ভূমিকাতেই দেখা গেল পুলিশকে।’’

তাঁর বাহিনী যতই ব্যাকফুটে থাকুক এ দিন বন্দরের ভোট নিয়ে ববির প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষ যদি চায় আমাকে ভোট দেবে। আমি আমার কাজ করেছি। আমার কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।’’

তাঁর প্রতিপক্ষ রাকেশ সিংহ ভোট শেষে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘১৯ মে ফিরহাদ (ববি) বুঝে যাবেন তিনি আর বন্দরের বিধায়ক নেই।’’

assembly election 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy