রাজনৈতিক দলের কাউন্টিং এজেন্টদের করোনা পরীক্ষা। তমলুক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
অষ্টম তথা শেষ দফার ভোটর হতেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকাশ হয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষা। তাতে তৃণমূল এবং বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ছবি সামনে এসেছে। তবে সেই ফলাফলকে গুরুত্ব না দিয়ে আপাতত আগামী কাল, রবিবারের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবার বিধানসভা ভোটে আলাদা ভাবে নজর কেড়েছে। কারণ, এখানে নন্দীগ্রামের মতো কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীলড়াই করেছেন, তেমনই তৃণমূল এবং বিজেপি’র প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা, রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। প্রার্থী তালিকায় রয়েছে তরুণ বাম নেত্রী মীনাক্ষী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও।
ওইসব হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশাপাশি, জেলার মোট ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের ফল নিয়েই রাজনৈতিকমহলে আগ্রহ তুঙ্গে। পূর্ব মেদিনীপুরের নিজেদের জয় নিয়ে আশাবাদী তৃণমূল এবং বিজেপি— উভয় শিবিরই। গণনার এক দিন আগে শুক্রবার মমতা ছিলেন কলকাতায় আর করোনার টিকা নিয়ে নিজের কাঁথির বাড়িতেই রয়েছেন শুভেন্দু। দু’জনই এ দিন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন।
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে এ দিন কেউ ব্যস্ত ছিলেন দলনেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়ায়, আবার কেউ ব্যস্ত ছিলেন নিজস্ব পেশায়। তমলুক বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এদিন সকাল থেকে পাঁশকুড়ায় নিজের বাড়িতে ব্যস্ত ছিলেন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে। দুপুরে তমলুকে তৃণমূল জেলা কার্যালয়ে এসে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন তিনি। বিকেলে তমলুক শহরের সুবর্ণ জয়ন্তী ভবনে দলের কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করেন সৌমেন। তিনি বলছেন, ‘‘আগামীকাল, শনিবার হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, চণ্ডীপুর, উত্তর কাঁথি ও দক্ষিণ কাঁথিতে গিয়ে দলের নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করব। গতবারের বিধানসভা ভোটের ফলের চেয়ে এবার জেলায় আমাদের ভাল ফলাফল হবে।’’
অন্য তারকা প্রার্থীদের মধ্যে নামকরা হলেন সোহম চক্রবর্তী এবং অশোক ডিন্ডা। তৃণমূলের পুর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র জানাচ্ছেন, সোহম ভোটের পর থেকে ফোনে এলাকার খোঁজ নিয়ে চলছেন। আপাতত তিনি কলকাতাতেই রয়েছেন। অশোক ডিন্ডা জেলার ছেলে। মাঝে সে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তবে এখন তিনি কলকাতার বাড়িতে।
অন্যদিকে, তমলুক কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা চিকিৎসক হরেকৃষ্ণ বেরা এদিন সকালে নিজের চেম্বারে রোগী দেখেছেন। এরপর তমলুক জেলা হাসপাতালে গিয়ে নিজের করোনা পরীক্ষা করান। বিকেলে দলের কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক করে ভোট গণনা নিয়ে পরামর্শ দেন। হরেকৃষ্ণ বলেন, ‘‘ভোটে লড়াই করেছি। তবে আমার চেম্বারে আসা রোগীদের না দেখে তো থাকতে পারি না। তাই আজও রোগী দেখেছি। আগামী কাল বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিতে যাব। জেতার বিষয়ে আমার কোনও সংশয় নেই।’’
কাঁথি উত্তর এবং পটাশপুর কেন্দ্রে জিতে বিধায়ক হওয়া তৃণমূলের প্রবীণ নেতা জ্যোতির্ময় কর এবার কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্রে লড়াই করেছেন। জ্যোতির্ময়বাবু এদিন ব্যস্ত ছিলেন দলের কাউন্টিং এজেন্টেদের নিয়ে বৈঠক করতে ও মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে। জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, ‘‘কাঁথি দক্ষিণ রাজনৈতিক লড়াইয়ের নতুন ক্ষেত্র। জনগণ যা রায় দেবে তা মেনে নেব।’’
পাঁশকুড়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব রায়চৌধুরী গতবার বিধানসভা ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। এবার প্রথম থেকেই সতর্ক ছিলেন ভোটের লড়াইয়ে। শুক্রবার কোলাঘাট বিডিও অফিসে করোনা পরীক্ষা করান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকেও যোগ দেন। বিপ্লব বলেন, ‘‘ভোটের ফলাফল নিয়ে আগেই হিসাব করেছি। জিতে যাব, এটুকু মনে জোর আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy