Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sujan Chakraborty

Bengal polls : তৃণমূলের ইস্তাহার ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’তে ভর্তি, দাবি বিরোধীদের

তৃণমূলের ইস্তাহারে বছরে ৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সুজন চক্রবর্তী ও শমীক ভট্টাচার্য

সুজন চক্রবর্তী ও শমীক ভট্টাচার্য —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০২:১০
Share: Save:

বুধবার নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছে তৃণমূল। ইস্তাহারে তারা ১০টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। যার উপর নির্ভর করে ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা করছে ঘাসফুল শিবির। তবে বিজেপি-সহ অন্য বিরোধীদের কাছে তা ‘আকাশকুসুম গল্প’ বলেই মনে হয়েছে। এমনকি ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতিগুলি ‘মিথ্যা’ বলেও মনে করছে তারা।

তৃণমূলের ইস্তাহারে বছরে ৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার ওই ঘোষণাকে ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল গত ১০ বছরে কত চাকরি দিয়েছে তা আগে প্রকাশ করুক। তা হলেই পরিস্কার হয়ে যাবে এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে কি না। তা ছাড়া বাংলায় কর্মসংস্থানের কি হাল তা লকডাউনের সময়ই পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখেই আমরা বুঝেছি।’’

আবার তৃণমূলের ইস্তাহারকে ‘প্রতারণা’ বলে তোপ দাগেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহার এই কথাটার কিছু মানে হয় না। ওরা ইস্তাহারে যা বলে সেই অনুযায়ী চলে না। এটা একটা প্রতারণার শামিল। ২০১১ সালের ইস্তাহারে বলেছিল, বছরে ১০ লক্ষ বেকারের চাকরি দেবে। সেটা থেকে এখন কমে ৫ লক্ষ হয়ে গেল। অর্থাৎ সরকার অর্ধেকে নেমে এসেছে বলা চলে। ক’দিন পর আর থাকবেই না।’’

তৃণমূলের ইস্তাহারে ন্যূনতম মাসিক আয় সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। যা নিয়েও কটাক্ষ করে বিরোধীরা। শমীকের মতে, ‘‘ভোটের জন্য এই ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে। পরিবার পিছু যে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা অতি সামান্য। একটি পরিবারের তা দু’দিনও চলবে না। ভোট পাওয়ার জন্য এটা না করতেই পারতেন।’’ একই সুর শোনা যায় সুজনের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘এটা তো ভিক্ষা দেওয়া। মানুষ ভিক্ষা চাইনি, চেয়েছে অধিকার। ওরা তো ২০ টাকার পাউচ দিতে অভ্যস্ত। এখন কর্মসংস্থান না দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার কথা বলছে। এটা মানুষ ভাল ভাবে নেবে না। এটা একটা অত্যন্ত খারাপ পদক্ষেপ।’’

রাজ্যবাসীর জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ বার ইস্তাহারে তৃণমূল বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়ার কথা বলছে। এ নিয়ে শমীক প্রশ্ন তোলেন, ‘‘লকডাউনের সময় কেন্দ্রের পাঠানো ভাল চাল সরিয়ে রেখে খারাপ চাল দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে অনেক মানুষ প্রতিবাদও করেছেন। তখন দুয়ারে দুয়ারে কেন রেশন পৌঁছে দেননি? এখন কীসের প্রয়োজনে দুয়ারে যাবেন মানুষ সব জানে।’’

ভোট পাওয়ার জন্য তৃণমূলের এটা বাহানা বলে মন্তব্য করেন সুজন। বলেন, ‘‘দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার কথা এখন বলছে। আর আমরা লকডাউনের সময় দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার জন্য চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু সরকার তা শোনেনি। লকডাউনের সময় জরুরি মনে করল না। এখন মনে করছে। আসলে এটা যে বাহানা সেটা সবাই বোঝে।’’

তৃণমূলের ইস্তাহারে বার্ধক্য ভাতা, তাজপুর বন্দর, বাংলা আবাস যোজনা, অশোকনগরে তেল উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। এ সবই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প বলে দাবি করেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘ইস্তাহারে যা ঘোষণা হয়েছে তা সবই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। কেন্দ্র সরকারের সাহায্য একটিও পূরণ করা সম্ভব নয়।’’ তৃণমূলের ইস্তাহারে শিল্পনীতি, জমিনীতির কথা এবং গত ১০ বছরে কত বিনিয়োগ হয়েছে তার কোনও উল্লেখ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE