দীর্ঘ চার ঘন্টার বৈঠক শেষে এসএসসির চেয়ারম্যানের আশ্বাস ছাড়া কিছুই পেলেন না ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীরা। ২০১৬-র প্যানেলে থাকা ওই শিক্ষাকর্মীরাই চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার এসএসসি ভবন অভিযান করেন। অভিযান শেষে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষাকর্মীরা। দীর্ঘ চার ঘন্টার বৈঠকে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা যে সমস্ত দাবি জানিয়েছেন—
১) দ্রুত সার্টিফায়েড লিস্ট প্রকাশ করতে হবে।
২) সিবিআই যে ২২ লক্ষ ওএমআর শিটের কপি উদ্ধার করেছে, সেই সমস্ত নথি এসএসসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৩) ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।
বৈঠক শেষে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, শিক্ষা দফতরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। সোমবার আইনজীবীদের পরামর্শ মেনেই ওই তালিকা প্রকাশ করা হবে, এমনটাই আশ্বাস এসএসসি চেয়ারম্যানের। যদিও বৈঠকের পর হতাশ চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তালিকা প্রকাশ করা না হলে ফের অবস্থানের পথেই হাঁটবেন ‘যোগ্য’রা।
‘যোগ্য’ হওয়া সত্ত্বেও কেন চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, সেই দাবিতেই এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন শিক্ষাকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ১,২৫৫ গ্রুপ-সি এবং ২,১৩৯ জন গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মীও। মে মাসে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় চাকরিহারা গ্রুপ-সি কর্মীদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অনড় সেই কর্মীরাই বুধবার এসএসসি ভবন অভিযান করেন। করুণাময়ী থেকে এসএসসি ভবন পর্যন্ত মিছিল করেন ‘যোগ্য’ শিক্ষাকর্মীরা।
চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের একাংশের আরও দাবি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন বা কাজ কোনওটাই বন্ধ হয়নি। অথচ, সাত বছর চাকরি করার পরেও শিক্ষাকর্মীদের সব হারিয়ে রাস্তায় বসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আন্দোলনকারী গ্রুপ-সি শিক্ষাকর্মী অমিত মণ্ডল বলেন, “অযোগ্যদের নানা রকম ভাবে সাহায্য করতে গিয়ে আমাদের মতো যোগ্যদের রাস্তায় নামিয়েছে সরকার। দ্রুত আমাদের চাকরিতে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক। অনেকের আর্থিক সমস্যা রয়েছে। এ ভাবে চলতে পারে না। সরকার আমাদের দাবি না মানলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামব।”