Advertisement
E-Paper

রোম্যান্টিক লাইফ চলছে, কিন্তু আমি সিঙ্গল: রুদ্রজিৎ

রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়। ‘সাত ভাই চম্পা’ ধারাবাহিকের সেনাপতি রাঘবেন্দ্র হিসেবে দর্শকদের প্রিয় মুখ। অভিনয় ও ব্যক্তিজীবনের নানা কথা পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আলাপে মৌসুমী বিলকিস।রুদ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়। ‘সাত ভাই চম্পা’ ধারাবাহিকের সেনাপতি রাঘবেন্দ্র হিসেবে দর্শকদের প্রিয় মুখ। অভিনয় ও ব্যক্তিজীবনের নানা কথা পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি।

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ১২:৪৫
ধারাবাহিকের দৃশ্যে রুদ্রজিত্।

ধারাবাহিকের দৃশ্যে রুদ্রজিত্।

আপনি ধারাবাহিকের গল্পে কী করছেন?

আমার চরিত্রর নাম রাঘবেন্দ্র, সংক্ষেপে রাঘব। আমার চরিত্রটা প্রচণ্ড স্ট্রং একটা চরিত্র, যে প্রচণ্ড সাহসী, অনেস্ট আর যাকে ভালবাসে বা যাকে বন্ধু মনে করে তাকে সারাটা জীবন হেল্প করার চেষ্টা করে। যত বিপদ, যত ঝড়ঝাপটাই আসুক না কেন সে সাহায্য করে। রাঘব নিজের মা-বাবাকে ছেড়ে, সুর্যনগর ছেড়ে পারুলের জার্নিতে অংশ নেয়। কারণ, সে বুঝতে পারে পারুল আসলে সব কিছু হারিয়েছে। আর এক রানি তার পথে ক্রমাগত বাধা তৈরি করে চলেছে।

রাঘবেন্দ্র কি যুদ্ধ করছে?

হ্যাঁ, রাঘবেন্দ্র তো সেনাপতি। মাঝে মাঝেই যুদ্ধ করে। কখনও বেজি হয়ে, কখনও নিজের রূপে বা কখনও বাঘ হয়ে যুদ্ধ করে।

তা হলে আপনার অনেক রূপই কম্পিউটার গ্রাফিক্স?

হ্যাঁ। আমার ভয়েস ওভার থাকে কিন্তু চরিত্রগুলো সিজি-তে তৈরি করা হয়। এখন যে চরিত্রের রূপ নিয়েছে রাঘবেন্দ্র তা এক রাক্ষসের চরিত্র। কারণ পারুলের পরিবারের সবাইকে রাক্ষসকন্যা মণিমল্লিকা আটকে রেখেছে। তাদের উদ্ধার করতে তাই রাঘবেন্দ্রও রাক্ষস হয়েছে।

রাঘবেন্দ্র যুদ্ধ করতে গিয়ে শারীরিক কসরত করছে?

একদম। ফাইট মাস্টার আসেন। তিনি শুটিংয়ের আগে আমাদের নিয়ে প্র্যাকটিস করেন।

কখনও আঘাত লেগেছে?

হ্যাঁ। চোট তো লাগেই। কিন্তু দৃশ্যগুলো বিশ্বাসযোগ্য করতে গেলে এ সব তো করতেই হবে। একটা দৃশ্য ছিল যেখানে আমি পারুলকে জড়িয়ে ধরে হারনেসের ওপর দিয়ে এ পার থেকে ও পারে যাবো। তো আচমকা কেউ হারনেস টেনে দেয় আর আমার পেটে এসে লাগে। পেটে কেটে যায়। এখনও দাগ আছে।

আরও পড়ুন, #মিটু? ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও কিছু ইচ্ছের বাইরে হয় না, বললেন শর্বরী

পারুলের সঙ্গে রোমান্স চলছে?

রোমান্স বলতে একটা পিওর, সুইট লাভ, রাঘবেন্দ্র’র সঙ্গে পারুলের। পারুলের জার্নির সঙ্গে থাকতে থাকতে যতটা দেখানো সম্ভব। এই ভালবাসা এমন যেখানে কোনও স্বার্থ জড়িয়ে নেই।

অফ স্ক্রিনে রুশার সঙ্গে রোমান্স?

দেখুন, অন স্ক্রিন কেমিস্ট্রি তখনই ভাল হয় যখন অফ স্ক্রিন কেমিস্ট্রি ভাল থাকে। আমাদের না এত ভাল বন্ধুত্ব যে সেই বন্ধুত্বটাই অন স্ক্রিনে ফুটে ওঠে। তাকে রোমান্স বা কেমিস্ট্রি, যা-ই বলুন না কেন। পারুলের এখনকার চরিত্র করছে রুশা। ওর খোঁপায় চাইনিজ টাইপ একটা জুয়েলারি আছে। ওটা টেনে দিই। ওটা যেহেতু চুলের সঙ্গে আটকানো ওর চুলে লাগে। আমি ওটা ধরে বলি, ‘আমি বাইক চালাচ্ছি’। খুব রেগে যায়। এখন তো আমার রাক্ষসের লুক, আমার মাথায় দুটো সিং। সিং দুটো ধরে রুশা বলে, ও আকাশে উড়ছে। আমার উইগ টানে। তখন আমারও চুলে ব্যথা হয়। এ রকম খুনসুটি হয় আমাদের।


ভাগ্যবশত ‘মা দুর্গা’য় সুযোগ পাই বলে পুরুলিয়ায় ফিরে যেতে হয়নি, বললেন অভিনেতা।

রোম্যান্টিক লাইফ কেমন চলছে?

চলছে। কিন্তু আমি সিঙ্গল।

মহিলা ফ্যানরা কী বলছেন?

এক জন ফ্যানের একটা ক্রিয়েশন দেখলাম সোশ্যাল মিডিয়ায়। খুব ভাল লাগল। বাঘের সঙ্গে আমার মুখ মিলিয়ে একটা ক্রিয়েশন করেছেন। তাতে লিখেছেন, ‘বেটার টু লিভ ওয়ান ইয়ার অ্যাজ আ টাইগার, দেন হান্ড্রেড অ্যাজ আ শিব, রুদ্রজিৎ মুখার্জি। হি ইজ অ্যাজ পাওয়ারফুল অ্যান্ড ডেডিকেটেড টুওয়ার্ডস হিজ ওয়ার্ক অ্যাজ আ পাওয়ারফুল হান্টার টাইগার।’

অভিনয়ে আসার জার্নিটা কেমন ছিল?

আমি পুরুলিয়ার ছেলে। কলকাতায় এসেছি ২০১১-তে। তার তিন বছর পর বেঙ্কটেশ ফিল্মসের ‘মা দুর্গা’য় সুযোগ পাই। তার পর ‘অগ্নিজল’, ‘পটলকুমার গানওয়ালা’ আর এখন ‘সাত ভাই চম্পা’-তে কাজ করছি। প্রথম প্রথম আমিও সাধারণ ছেলেমেয়েদের মতো চেষ্টা করেছি, একটার পর একটা অডিশন দিয়েছি। ভাগ্যবশত ‘মা দুর্গা’য় সুযোগ পাই বলে পুরুলিয়ায় ফিরে যেতে হয়নি। তারও আগে ‘ওম শান্তি’ নামের একটা ফিল্মে একটা চরিত্র করেছিলাম। কিন্তু ওটা কোনও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল না।

আরও পড়ুন, রাক্ষসীর প্রেমে পড়েছেন কেউ? ‘মণিমল্লিকা’ বললেন…

প্রথম থেকেই ঠিক করেছিলেন অভিনেতা হবেন?

না না। আমাদের ফ্যামিলি অ্যাকচুয়ালি স্পোর্টস ওরিয়েন্টেড। আমার বাবা খুব ভাল ফুটবলার ছিলেন আর জেঠু ছিলেন ক্রিকেটার। আমার জ্যাঠতুতো দাদা আর আমি খেলাধুলো করতে খুব পছন্দ করতাম। আমার ইচ্ছে ছিল ক্রিকেটার হব। স্বপ্ন ছিল যে অন্তত রঞ্জি খেলব। ছোটবেলায় পাড়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম, নাটক করতাম। কিন্তু অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছে তখনও হয়নি।

বাড়ি থেকে মেনে নিল?

বাবাকে বলেছিলাম, গ্র্যাজুয়েশন করার পর কলকাতায় যাব। অভিনয় করব। বাবা পুরোপুরি আমাকে সাপোর্ট করেছিল। বাবা আমাকে তিন বছর সময় দিয়েছিল। তিন বছরের মধ্যে কিছু করতে না পারলে বাড়ি ফিরে পড়াশোনা শেষ করে অন্য পেশা খুঁজে নিতে বলেছিল। থ্যাঙ্ক গড যে তিন বছরের মধ্যেই আমি কাজ পেয়ে গেছি। আমার জীবনের হিরো আমার বাবা। তিনি আর্থিক ও মানসিক ভাবে সাপোর্ট না করলে আমি কলকাতায় দাঁড়াতেই পারতাম না।

কলকাতায় এসে প্রথম প্রথম কী করতেন?

প্রথমে আমি একটা ডান্স ক্লাসে জয়েন করি। ওয়েস্টার্ন ডান্স শিখতাম। থিয়েটারেও জয়েন করেছিলাম, গৌরীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের গ্রুপ ‘থিয়েটার প্লেস’-এ। সেখানে ছ’মাস কি এক বছর কাজ করি। তার পরেই ‘মা দুর্গা’য় ডাক পাই।


‘এখন সিনেমা দেখতে গেলে বা শপিং করতে গেলে বাচ্চারা, টিন এজাররা ‘সেনাপতি, সেনাপতি’ বলে চিৎকার করে।’

থিয়েটার এখনও করেন?

থিয়েটার এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে অনেক কিছু শেখা যায়, অনেক কনফিডেন্স পাওয়া যায়। অডিও ভিজুয়ালে শুটের সময় ভুল হলেও সেটা শুধরে নেওয়া যায়। কিন্তু থিয়েটারে রি-টেকের কোনও জায়গা নেই। সেখানে একটানা পারফর্ম করার দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়। এই মুহূর্তে শুটিংয়ের এত চাপ যে কোনও কিছুর জন্যই সময় নেই। ভবিষ্যতে সুযোগ ও সময় পেলে থিয়েটার করতে চাই।

এই চার ধারাবাহিকের কোন চরিত্র আপনার কাছে চ্যালেঞ্জের মতো ছিল?

‘মা দুর্গা’র শিবের চরিত্রটা। কারণ তখন আমি প্রথম কাজ করছি, অনেক ছোট আর ওই রকম একটা পৌরাণিক চরিত্র। কিন্তু টেলিকাস্ট শুরু হলে দেখলাম, আমি গ্রামে গেলেই গ্রামের মানুষজন আমাকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন। আমার থেকে বয়সে বড় মানুষরা প্রণাম করছেন। খুব খারাপ লাগত। কী করব বুঝতে পারতাম না। কিন্তু যখন ভাবতাম আমি চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে সফল হয়েছি তখন ভাল লাগত।

আরও পড়ুন, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ কি ঋতুপর্ণর বায়োপিক? মুখ খুললেন কৌশিক-প্রসেনজিত্

আর এখন?

এখন সিনেমা দেখতে গেলে বা শপিং করতে গেলে বাচ্চারা, টিন এজাররা ‘সেনাপতি, সেনাপতি’ বলে চিৎকার করে। মেয়েরা আমার সঙ্গে সেলফি তুলতে চায়।

রাঘবেন্দ্রর কোন লুকস ভাল লাগে?

হোয়াইট শার্ট-প্যান্ট-বুট জুতো পরে আমার একটা লুকস ছিল। ওটা সব থেকে পছন্দের। এখন আমার যে রাক্ষস লুকটা চলছে সামহাউ আমার একদম পছন্দ হচ্ছে না। ম্যাগি টাইপ কোঁকড়া চুল, ভ্রূ দুটো মোটা করে আঁকা, চোখের তলায় লাল। আর সেনাপতির সৈন্যরাও এই একই লুকস-এ। সবাই তাই গুলিয়ে ফেলে, চট করে আমাকে চিনতে পারে না। সব থেকে ভাল হল রাঘবেন্দ্র’র জন্তু-জানোয়ারের রূপ। আমাকে কিছুই করতে হয় না। শুধু ভয়েস ওভার দিতে হয়। বাকিটা আমাদের কম্পিউটার গ্রাফিক্স টিম করে দেয়।

(সিনেমার প্রথম ঝলক থেকে টাটকা ফিল্ম সমালোচনা - রুপোলি পর্দার বাছাই করা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগ। সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

TV Tollywood Celebrities
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy