শহর থেকে গ্রাম, ছড়িয়ে পড়ছে লক্ষ্মী ছেলেমেয়েরা!
মাটির সরা ভর্তি কাগজের টুকরো। কমণ্ডলু থেকে বিন্দু বিন্দু জল ফেলতেই তাতে আগুন জ্বলে উঠল। তার পর এল মানুষের মাথার খুলি। তার মুখে সিগারেট ধরে জ্বালিয়ে দিতেই চোঁ চোঁ করে তিন টানে সিগারেট শেষ! এ সব হচ্ছে কী!
ব্যাখ্যা করলেন দুই তরুণ। এ সবই পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেটের খেল! কমণ্ডলু থেকে জল নয়, গ্লিসারিন ঢালা হয়েছিল তাতে। সিগারেটেও মেশানো ছিল রাসায়নিক, তাই নিজেই জ্বলে গিয়েছে। কিন্তু এই সব বুজরুকি দেখিয়েই গ্রামে গঞ্জের মানুষকে বোকা বানায় এক দল জালিয়াত। কখনও সাধুসন্তের বেশে, কখনও গুরু হয়ে স্থায়ী আসন গড়ে তারা মানুষকে ধর্মের দাস বানিয়ে রাখে। এ সবের থেকে দূরে থাকার সচেতনতা তৈরি করতে চাইলেন নবীন তিন মুখ। উজান গঙ্গোপাধ্যায়, পূরব শীল আচার্য এবং ঋত্বিকা পাল। উইন্ডোজ-এর প্রযোজনায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘লক্ষ্মী ছেলে’ নিয়ে হাজির হবেন তাঁরাই।
আমন্ত্রণ ছিল পথনাটক দেখতে যাওয়ার। কিন্তু কোথায় কী! মুষলধারে বৃষ্টি। সন্ধ্যায় ডুবতে থাকা শহরের এক কোণে অনেকটা সময় নিয়ে জড়ো হলেন ‘লক্ষ্মী ছেলে’-র দল। পর্দায় তাঁরা আমির হুসেন, গায়ত্রী চট্টোপাধ্যায় এবং শিবনাথ দত্ত। কী উপস্থাপন করলেন তাঁরা? রাজনৈতিক পথনাটক? না। আগামী ২৫ অগস্ট ছবি মুক্তির প্রচারটুকুই করলেন। তবে অন্য ভাবে।
পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “একটা অন্য রকম কিছু করতে চেয়েছিলাম। যেহেতু অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কার নিয়ে কাজ হচ্ছে, এটা আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনো উচিত। আমাদের অতটা ক্ষমতা হবে না। বহু বছর আগে ‘জানে ভি দো ইয়ারো’ ছবির মুক্তির আগে ছোট ছোট স্পেসের মধ্যে পথনাটিকার আকারে প্রচার চলেছিল। আমার এবং শিবপ্রসাদ-নন্দিতাদির মনে হয়েছে একটা অন্য আঙ্গিকে মানুষের কাছে যাওয়া যায়। আর বিনোদন হচ্ছে সেই মাধ্যম যেখানে চোখের সামনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার সুবিধা রয়েছে। আমরা প্রমাণ দিতে চেয়েছি বুজরুকি দিয়ে কী ভাবে মানুষকে ভুল বোঝানো হয়।”
যদিও এই নিয়ে ছবিটা নয়— দাবি কৌশিকের। একটা অন্য গল্পের মধ্যে এগুলো বসানো রয়েছে। যা দেখতে হলে প্রেক্ষাগৃহে আসতে হবে। ছবির ঝলক মুক্তি পেয়েছিল গত মাসেই। তাতে চার হাত, দু’পা নিয়ে জন্ম নেওয়া এক শিশুকন্যার স্বাভাবিক জীবনের জন্য লড়তে দেখা যায় আমির হুসেন ওরফে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে উজানকে। ছিল আরও নানা রোমাঞ্চকর মোড়ে রহস্য উদ্ঘাটনের ঝলক। চিত্রনাট্য নিয়ে যদিও মুখ খোলেননি দলের কেউ-ই।বাবার পরিচালনায় প্রথম ছবি উজানেরও। জানালেন, মুক্তির আগে অবধি প্রতিনিয়ত এ ভাবেই প্রচার চলবে। মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে ভিড়ের মধ্যেও মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। পৌঁছে যাচ্ছেন শহরতলিতে। এতে আরও সমৃদ্ধ হবে লক্ষ্মী ছেলেমেয়েদের দল, এমনটাই মনে করছেন পরিচালক। তাই অভিনব প্রচার কৌশল বেছে নিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy