Advertisement
E-Paper

লুঙ্গি মানেই কি বিশেষ সম্প্রদায়! কোন কারণে প্রেক্ষাগৃহে বাধা জয়রাজকে? সরব ঋদ্ধিও

লুঙ্গি দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তুলে ধরেন অনেকে। সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে বলেই কি এই পোশাক পরে নাটকের প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৫ ১৮:২২
Actor Joyraj Bhattacharya could not enter an auditorium for his attire and Riddhi Sen shared his views

জয়রাজকে বাধা প্রেক্ষাগৃহে, কী বললেন ঋদ্ধি? ছবি: সংগৃহীত।

‘মার্ক্স ইন কলকাতা’ নাটক দেখতে গিয়েছিলেন নাট্যকর্মী জয়রাজ ভট্টাচার্য। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহের দরজা থেকেই তাঁকে ফিরে আসতে হয়। কারণ, তাঁর পরনে ছিল লুঙ্গি। পোশাকের কারণে তাঁকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ঘটনাটি তিনি তুলে ধরেছিলেন সমাজমাধ্যমে। যে নাটকের নাম ‘মার্ক্স ইন কলকাতা’, তার ব্যবস্থাপনায় এই পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। যদিও নাট্যদলকে দায়ী করতে চাননি জয়রাজ।

নাটক দেখতে যাওয়ার জন্য লুঙ্গিকেই কেন পোশাক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন? এর পিছনে কি নির্দিষ্ট কোনও কারণ বা পরিকল্পনা ছিল? আনন্দবাজার ডট কমকে জয়রাজ বলেন, “আমি সাধারণ ভাবেই লুঙ্গি পরে থাকি। এর পিছনে কোনও বিশেষ ভাবনা নেই আমার। কোনও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট তৈরি করারও উদ্দেশ্য ছিল না। আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, আমি লুঙ্গি পরে খুব স্বচ্ছন্দ বোধ করি। শুধু কলকাতা নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমি লুঙ্গি পরে গিয়েছি। এর পিছনে কোনও বিশেষ বার্তা ছিল না।”

তবে লুঙ্গি পরার জন্য সমাজমাধ্যমে আগেও তিনি কটাক্ষ ও ঘৃণার শিকার হয়েছেন বলে জানান জয়রাজ। লুঙ্গি দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে তুলে ধরেন অনেকে। সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে বলেই কি এই পোশাক পরে নাটকের প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি? এই প্রশ্ন করতেই জয়রাজের বক্তব্য, “আমার অনুমান, সেই জন্যই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু নিশ্চিত বলতে পারব না। তার কারণ, বাধা দেওয়ার জন্য সম্প্রদায়গত ভেদাভেদের কথা বলেননি। তবে পোশাক নিয়ে তো ভেদাভেদ ছিল বটেই।”

এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয় আর এক নাট্যকর্মী ঋদ্ধি সেনের সঙ্গেও। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না, কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়কে লুঙ্গি প্রতিনিধিত্ব করে বলে এমন ঘটেছে। এর আগেও এমন ঘটেছে। শ্রেণিগত ভেদাভেদ প্রকট করার জন্য কিছু তথাকথিত ড্রেস কোড থাকে। ব্রিটিশ শাসন চলে যাওয়ার পরে শহরের নামজাদা ক্লাবগুলোতেও এই ধরনের নিয়ম আছে। গোল গলা গেঞ্জি পরে সেখানে যাওয়া যাবে না। পা ঢাকা জুতো পরতে হবে। ঔপনিবেশিক ঘোরের মধ্যে শ্রেণি বিভাজন রয়েছে। প্যান্ট পরতে হবে, ধুতি বা লুঙ্গি পরা যাবে না।”

প্রায় একই ঘটনা ঘটেছিল কলকাতার এক নামী রেস্তরাঁ ও শপিং মলে। রেস্তরাঁটিতে এক গাড়ির চালককে তাঁর পোশাকের জন্য বাধা দেওয়া হয়েছিল। আর ধুতি পাঞ্জাবি পরে মধ্য কলকাতার এক শপিং মলে ঢুকতে পারেননি তিনি। জয়রাজ বলেন, “আমি শুধু লুঙ্গি পরি, এমন নয়। আমি কিন্তু ধুতি পাঞ্জাবিও পরি। দেশজ পোশাক পরতে আমি পছন্দ করি। পুরুষদের পোশাকের মধ্যে লুঙ্গি ও ধুতি খুবই জনপ্রিয় এবং স্বাচ্ছন্দ্য দেয়।”

তবে এই গোটা ঘটনার জন্য নাট্যদল ‘স্বপ্নসন্ধানী’কে দায়ী করতে রাজি নন জয়রাজ। নিজে নাট্যকর্মী বলেই নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে এই নিয়ে কোনও বাগ্‌বিতণ্ডা চাননি। নিঃশব্দে ফিরে এসেছেন। তবে বিষয়টি জানানো প্রয়োজন বলে সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন। “এর দায় কোনও ভাবেই নাটকের দলের নয়।” এই প্রসঙ্গে সরাসরি ঋদ্ধি সেনের সঙ্গেও কথা হয়েছে জয়রাজের।

ঋদ্ধি বলেন, “আমাদের কাছেও এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত। নাট্যদল হিসাবে এমন ঘটনার মুখোমুখি আমরা হইনি আগে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। সমাজমাধ্যমেও জয়রাজদার থেকে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই প্রেক্ষাগৃহে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সেটা আমরা লিখিয়ে নিয়েছি। এমন ভুল বোঝাবুঝির জন্য যেন আর কাউকে হেনস্থা হতে না হয়।”

উল্লেখ্য, ‘মার্ক্স ইন কলকাতা’ নিয়ে প্রথম থেকেই আগ্রহ ছিল নাট্যপ্রেমীদের মধ্যে। এই নাটকের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কার্ল মার্ক্সের ভূমিকায় জয়ন্ত কৃপালনি ও মেফিস্টোর চরিত্রে সৃজিত মুখোপাধ্যায়।

Riddhi Sen Joyraj Bhattacharjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy