রাঁধতে ভালবাসেন ঋত্বিক চক্রবর্তী? বাড়িতে অবসরে হাতা-খুন্তি নাড়েন? তাঁর সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবি ‘রান্নাবাটি’ দেখে নাকি কৌতূহল জেগেছে দর্শকমনে। প্রশ্নও উঠেছে, সুযোগ পেলেই তাঁর ‘পর্দার মেয়ে’ ইদা দাশগুপ্ত সমাজমাধ্যমে ডুবে থাকে। বাস্তবে ঋত্বিকও কী ভাবে এই সমাজমাধ্যমে মগ্ন হয়ে থাকেন?
ঋত্বিকের কি কাজ কমে গিয়েছে? তাই বিতর্ক ছড়িয়ে খবরে থাকার চেষ্টা? আনন্দবাজার ডট কম প্রসঙ্গ তুলতেই হেসে ফেলেছেন ঋত্বিক। নিজস্ব ভঙ্গিতে বলেছেন, “আমার হাতে কাজ কম না বেশি সেটা খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের উপরে ছেড়ে দিলাম। রইল বাকি বিতর্ক। আমি বিতর্ক ছড়াতে মোটেই সমাজমাধ্যমে লিখি না।” তাঁর মতে, সমাজমাধ্যমে আঁচড় কাটার অধিকার তাঁর আছে। তিনি তা-ই সমসাময়িক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। “লেখাতেই শুরু, লেখাতেই আমার ভাবনা শেষ”, বক্তব্য তাঁর। আরও যোগ করেছেন, “আমার কোথাও কিছু প্রমাণ করার নেই। সমাজমাধ্যম আমার কাছে ‘পারফর্ম’ করার জায়গা। সেটাই করি। দেখি, পারি কি না। এর বেশি কিচ্ছু নয়।”
নতুন করে যাতে বিতর্ক না বাধে তার জন্য এর পরেই ফিরে গিয়েছেন ছবির প্রসঙ্গে। অনেক বছর পরে আবার পরিচালক প্রতীম ডি গুপ্ত আর সোহিনী সরকারের সঙ্গে কাজ করে খুশি। ২০১৭-র পর ২০২৫-এ আবার মাছের ঝোল রান্নার প্রসঙ্গ। সোহিনীর অনুরোধে…, বলতেই মুখের কথা কেড়ে নিলেন। ঋত্বিক বলে উঠলেন, “কথায় আছে, পেট দিয়ে নাকি বাঙালির হৃদয় ছোঁয়া যায়। ভালমন্দ খাবারে আমরা গলে জল। সেখানে ডাল-ভাত-মাছের ঝোলের প্রসঙ্গ আসবেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, আগের ছবির বিখ্যাত শেফ মায়ের মতো মাছের ঝোল রাঁধতে পারেনি। এই ছবির নায়ক ‘শান্তনু’ রাঁধতেই জানে না। আর বাঙালির কাছে সহজ রান্না মাছের ঝোল। পর ক্ষণেই রসিকতার ঢঙে সাবধানবাণী, “ভাল রান্না যেমন হৃদয় জুড়তে পারে, খারাপ রান্না কিন্তু বিচ্ছেদ ঘটায়।”
আরও পড়ুন:
কথাপ্রসঙ্গে উঠে এসেছে অভিনেতার পারিবারিক জীবন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের মতো করে তাঁর বাবা গুছিয়ে রাঁধতে পারেন না। তিনি রান্নাঘরে পা রাখা মানে হুলস্থূল ব্যাপার। কিন্তু তিনি যেটুকু রাঁধতেন, আঙুল চেটে খেতেন বাকিরা। ঋত্বিকের কথায়, “আমি অবশ্য রান্নাবিলাসী নই। আবার রাঁধতে পারি না, সেটাও নয়। যেমন, ছেলের টিফিন অনেক সময়েই বানিয়ে দিই। উপমন্যু কিন্তু রসিয়ে সেই টিফিন খায়।” এই অভিজ্ঞতার তাই ছাপ পড়েছে ছবিতেও। ঋত্বিকের হাতা-খুন্তি নাড়ার ধরন বলে দিচ্ছে, তিনি অপটু নন।
সুন্দরী নায়িকারা পাশে থাকলে রান্নার দৃশ্যে অভিনয় কি আরও প্রাণবন্ত হয়? প্রশ্ন শুনে জোরে হাসি বড়পর্দার ‘শান্তনু’র। পাল্টা রসিকতা করতেও ছাড়েননি। তাঁর কথায়, “নায়িকারা একসঙ্গে দৃশ্যে থাকলে বোঝা যেত সেটা। কিন্তু রান্নাবান্নার দৃশ্যে কেবল সোহিনীই ছিল। আর ওর সঙ্গে অনেক কাজ করার কারণে এমনিতেই রসায়ন জমে যায়।” এ প্রসঙ্গে ঋত্বিকের যুক্তি, বিরসা দাশগুপ্ত-বিদীপ্তা চক্রবর্তীর মেয়ে ইদা বরং এই সব দৃশ্যে তাঁকে বেশি সহযোগিতা করেছে। “অভিনয় ইদার রক্তে। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিণত সেই ক্ষমতা। অভিনয় করেইনি এক ফোঁটা! ১৪ বছরের মাতৃহীন এক কিশোরীর আচরণ যেমন হওয়া উচিত, ঠিক তেমনই পর্দায় ফুটিয়েছে। এই বয়সের ছেলেপুলেরা যেমন হয়, একটু জেদি, সমাজমাধ্যম তাদের অবসর বিনোদনের অন্যতম হাতিয়ার।” দাবি করেছেন, এই ছবি করতে গিয়ে ইদার সঙ্গে ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে তাঁর।