১১ দিনের লাগাতার যুদ্ধ। চওড়া হাসি অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর আর তাঁর স্বামী শোয়েব ইব্রাহিমের মুখে। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে অভিনেত্রী হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন। ১১ দিন মায়ের থেকে দূরে তাঁদের একরত্তি সন্তান। দীপিকা বাড়ি ফিরতেই আনন্দে আত্মহারা সে-ও। হাসপাতাল থেকে দীপিকার ছাড়া পাওয়ার মুহূর্ত ক্যামেরায় ধরে রেখেছেন শোয়েব। পরে ভ্লগের মাধ্যমে সেই ভিডিয়ো ভাগ করে তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসক-নার্সদের। ধন্যবাদ জানিয়েছেন দীপিকার অনুরাগীদের। শোয়েবের মতে, তাঁদের প্রার্থনাতেই মারণরোগের বিরুদ্ধে জিতে ফিরেছেন তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী। যদিও দীপিকার দাবি, তাঁর প্রাথমিক যুদ্ধ শেষ। এখনও অনেক পথ যেতে হবে তাঁকে।
প্রায়ই উপর পেটের ব্যথায় ভুগতেন দীপিকা। গত মাসে ব্যথা বাড়ায় তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। নানা পরীক্ষার পর চিকিৎসক তাঁকে জানান, লিভারে টেনিস বলের আকারে একটি ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হয়েছে, যা ক্যান্সারবাহী। এর পরেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মুম্বইয়ের প্রথম সারির হাসপাতালে অভিনেত্রী স্ত্রীকে ভর্তি করান শোয়েব। ১৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকের দল জানান, বিপন্মুক্ত দীপিকা। ইদের আগের দিন আইসিইউ থেকে সরিয়ে তাঁকে ব্যক্তিগত কেবিনে পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার তাঁকে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেন।
শোয়েবের ভ্লগে হাসপাতালের দিনযাপনের মুহূর্ত বন্দি। ব্যক্তিগত কেবিনে অদূরে দীপিকার শয্যা। যেখানে অস্ত্রোপচারের পর কিছুটা সুস্থ হয়ে থাকতেন অভিনেত্রী। একই ঘরে কিছুটা দূরে একটি সোফা সেট। এখানেই শোয়েব বসতেন, বিশ্রাম নিতেন। অস্ত্রোপচারের পর দীপিকা যখন কিছুটা ধাতস্থ তখন তাঁর হাত ধরে লম্বা করিডরে হাঁটাতেন তিনি। এ ভাবেই ১১ দিন দম্পতির অস্থায়ী ঠিকানা হয়ে উঠেছিল হাসপাতাল। শুক্রবার সেখান থেকে মুক্তি। তখনও দীপিকার ঘাড়ে বড় ব্যান্ডেজ! যা দেখে শিউরে উঠেছেন অনুরাগীরা। শোয়েব অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন সকলকে। জানিয়েছেন, চিকিৎসকেরা অনেকের হাতে চ্যানেল করেন অনেকের ঘাড়ে। ক্রমাগত হাতে চ্যানেল করার ফলে তাঁর হাত ফুলে গিয়েছিল। তাই তাঁরা হাতের চ্যানেল খুলে ঘাড়ে লাগান। এতে ভয়ের কিছু নেই।
শোয়েবের ভ্লগের পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন দীপিকাও। হাসপাতাল ছাড়ার আগে চিকিৎসকদলের সঙ্গে দেখা করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। ছবি তোলেন নার্সদের সঙ্গে। জানান, এঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তিনি ম্যালিগন্যান্ট টিউমারমুক্ত। পাশাপাশি এও জানান, তাঁকে নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে তাঁকে। লড়াই এখনও বাকি। তবু বিশ্বাস টলেনি তাঁর। দীপিকা পোস্টে লিখেছেন, “১১ দিনের লড়াই জিতেছি। আশা, আগামী দিনেও সফল হব।”