ভাইফোঁটা হলে বোনফোঁটা কেন নয়? প্রতি বছর ভাইফোঁটার আগে এই তরজা ভেসে ওঠে। এই নিয়ে অবশ্য খুব একটা ভাবিত নন টলিপাড়ার অভিনেত্রী এনা সাহা। “ভাইফোঁটা তো কী হয়েছে? এতগুলো বোন থাকতে কিসের অভাব?” পাল্টা প্রশ্ন এনার। বোনেরা এই দিন একজোট হন। তবে সবাই বিশেষ ভাবে ফোঁটা দেন বোনেদের মধ্যে একজনকে।
এনারা তিন বোন। ভাইফোঁটায় তুতো ভাইবোনেরাও একজোট হন। তুতো ভাইদের কপালে ফোঁটা দেন সব বোনেরা। সেই সঙ্গে এক তুতো বোনকেও ফোঁটা দেন পরিবারের মেয়েরা। এনা নিজেই বলেন, “তুতো ভাইদের তো ফোঁটা দিই অবশ্যই। কিন্তু এক বোনকেও আমরা ফোঁটা দিই। ও মেয়ে হয়েই জন্মেছে। কিন্তু ও নিজের যৌন পরিচিতিকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেছে। নারীসুলভ সত্তা ওর নেই। ও নিজেকে ছেলে বলেই মানে। ওকে আমরা সব বোনেরাই ফোঁটা দিই।”
এনা জানান, এই বোন তাঁর মামার এক মেয়ে। নিজের যৌন পরিচিতি অন্য ভাবে আবিষ্কার করলেও এখনও কোনও রূপান্তরের কথা ভাবেননি তিনি। এনার কথায়, “ও কোনও রূপান্তরের দিকে যায়নি। খুবই ছোট এখনও, মাত্র ২১ বছর বয়স। ওকে ভাইফোঁটা দিই। কারণ আমরা ওর এই ভাবনাকে উৎসাহ দিই। আসলে এই বয়সটায় নানা রকমের ভাবনা মাথায় আসে। শরীর এক, মন অন্য— স্বাভাবিক ভাবেই নানা রকমের আবেগ তাড়া করে বেড়ায়। তাই আমরা ওর জীবনদর্শনকে সমর্থন করি।”
একজোট বোনেরা।
রাখি হোক বা ভাইফোঁটা, বোনেরা সব সময় একসঙ্গে থাকেন। বলা ভাল, প্রতিটি দিনই পরস্পরের পাশে থাকেন, জানান এনা। তাঁর স্বীকারোক্তি, “আসলে বছরের প্রতিটা দিন একসঙ্গে থাকাই সব। আমরা জানি, বিশেষ দিন তো বটেই, রোজ আমরা পরস্পরের জন্য আছি। আমরা তিন বোন আর আমাদের দুই তুতো বোন। পাঁচটা মেয়ে। পাঁচজনই আমরা সুন্দরী। আমরা যখন একসঙ্গে বেরোই, খুব আনন্দ করি।”
পাঁচ বোনের মধ্যে নাকি রয়েছে এক বিশেষ নিয়মও। এই নিয়মের বাইরে কোনও ভাবেই পা রাখা যাবে না। কী সেই নিয়ম? এনা জানান, জীবনে কোনও পছন্দের মানুষ এলে, সবার আগে বাকি বোনেদের জানাতে হবে। এখানেই শেষ নয়। রয়েছে আরও একটি নিয়ম। “কোনও পুরুষকে একজনের পছন্দ হলে, তাঁর দিকে অন্য কোনও বোন অন্য দৃষ্টিতে তাকাতে পারবে না। সেই পুরুষ যতই সুন্দর হোক না কেন,” হাসতে হাসতে বলেন এনা। তবে একজন পুরুষের যদি দুই বোনকে পছন্দ হয়ে যায়, তা হলে সেখান থেকে সবারই সরে আসা উচিত বলে মনে করেন এনা। অভিনেত্রীর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “পুরুষদের নিয়ে আমাদের মধ্যে যেন কোনও দ্বন্দ্ব তৈরি না হয়। ওরা যা করুক, যেমনই হোক, আমরা বোনেরা একসঙ্গে থাকব।”
বোনেদের ঘরোয়া আড্ডা।
দুই বোন থাকলেই সমাজের তৈরি করে দেওয়া নানা প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ উঠে আসে। কে বেশি সুন্দরী, কে বেশি গুণী? এই সব প্রশ্নের সঙ্গে ‘শালি আধি ঘরওয়ালি’র মতো প্রবাদকে তোয়াক্কাই করেন না এনা ও তাঁর বোনেরা। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনও প্রতিযোগিতাই নেই। আমরা সব সময়ে পরস্পরের পাশে। আমাদের তুতো ভাই রয়েছে। কিন্তু আমরা পাঁচ বোন কখনও ভাইয়ের অভাব বোধই করিনি। কখনও মাথাতেই আসেনি। আমাদের বাবা-মাও আমাদের মাঝে আসেন না। বোনেদের মধ্যে ঝগড়া হলে, সকলের মধ্যে বয়সে আমি বড় বলে আমিই সবটা মিটিয়ে দিই।”
এ বার ভাইফোঁটা নিয়ে খুব বেশি পরিকল্পনা নেই এনার। কারণ, পরিবারে খুব শীঘ্রই বাজছে বিয়ের সানাই। অভিনেত্রী মামার বড় মেয়ের বাগ্দান পর্ব সারা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে ভাইফোঁটার আগের রাতে পাঁচ বোন মিলে প্রেক্ষাগৃহে ‘থামা’ দেখে এসেছেন।