‘সেনদিদি’র সারা গায়ে বসন্ত। রোগের প্রকোপ এতটাই যে, প্রাণে বাঁচলেও একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায় তাঁর। তা হলে বাকি জীবন কতটা কষ্টের? মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস নিয়ে তৈরি সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ ছবিতে এই চরিত্রে অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। চরিত্র হয়ে উঠতে গিয়ে সোমনাথ কুণ্ডুর রূপটানে এক চোখ বন্ধ রাখতে হত তাঁকে। সদ্য অভিনেত্রীর সেই ‘লুক’ প্রকাশ্যে।
সারা মুখে বসন্তের দাগ। তার উপরে একটি চোখ নষ্ট। সুন্দরী অভিনেত্রী কি প্রথম দিন আয়নায় নিজেকে দেখে চমকে উঠেছিলেন?
অনন্যার কাছে জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার ডট কম। প্রসঙ্গ তুলতেই বললেন, “বসন্ত আমার হয়নি। সেনদিদি, মানে ছবির এক চরিত্রের হয়েছে। আমি সেই চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই বসন্তের দাগভর্তি মুখ দেখেও মন খারাপ হয়নি।” তবে তাঁর প্রচণ্ড সমস্যা হয়েছে এক চোখ বন্ধ করে অভিনয় করতে।
যেমন, সোমনাথের এই রূপটান নিয়ে তাঁকে টানা ১৪ ঘণ্টা থাকতে হয়েছে। “এক চোখ বন্ধ। আর এক চোখ দিয়ে ভাল করে কি সব দেখা যায়! সারাক্ষণ ধরে ধরে হাঁটতাম।” রূপটান তোলার পর আর এক প্রস্থ সমস্যা। একটি চোখ এতক্ষণ বন্ধ থাকায় দু’চোখ দিয়েই তখন অঝোরে জল ঝরত তাঁর। তার সঙ্গে মাথায় অসহ্য ব্যথা। এই নিয়েই অভিনয় করেছেন অনন্যা।
আরও পড়ুন:
“অভিনয়ের সময় চোখ আমাদের খুব সাহায্য করে। অনেক কিছু আমরা চোখের অভিনয় দিয়ে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। আমার সেই উপায়ও ছিল না!”, দাবি পর্দার ‘সেনদিদি’র। ফলে, সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় ভুগতেন, চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হতে পারছেন তো! এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে করতেন পরিচালক সুমনকে। “অভিনয়ের পর মনিটর দেখার অভ্যাস আমার নেই। ফলে, পুরোটাই নির্ভর করতাম লালদা’র (সুমন মুখোপাধ্যায়) উপরে। দাদা আমায় খুবই সহযোগিতা করতেন।”
উপন্যাসের অনেকটা জুড়ে ‘সেনদিদি’। পর্দাতেও কি তাই? অভিনেত্রী জানিয়েছেন, পর্দায় নির্দিষ্ট সময়ে গল্পের সিংহভাগ দেখাতে হবে। তাই পরিচালক নায়ক-নায়িকা ‘শশী-কুসুম’কে কেন্দ্রে রেখে গল্প বুনেছেন। এদের ঘিরে আবর্তিত বাকি চরিত্র। এক বারও কি মনে হয়েছিল, আপনি যদি ‘কুসুম’ হতেন? “জয়ার মতো নিষ্পাপ মুখ আমার নয়। ‘কুসুম’ চরিত্রের তুলনায় আমার বয়সও বেশি! তাই জানতাম, আমায় কুসুম মানাবে না”, সাফ বললেন ‘সেনদিদি’।