তাঁকে নগ্ন হতে হবে না। তাঁর সহ-অভিনেতা পর্দায় নগ্ন হবেন। তিনি শুধু ওই দৃশ্যে থাকবেন! তাতেই মহা আপত্তি অরুণা ইরানির! সপাট রাজ কপূরকে বলেছিলেন, “এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করতে পারব না। আমায় ক্ষমা করবেন!” হতবাক প্রয়াত পরিচালক-প্রযোজক। বিস্মিত ওই ছবির নায়ক ঋষি কপূর। তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে ফেলেছিলেন, নগ্ন হতে হবে না। তাও কেন আপত্তি অরুণার?
প্রবীণ অভিনেতাদের সাক্ষাৎকার মানেই অতীত যাপন। অরুণা সম্প্রতি মুখোমুখি এক অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারে। এ কালের অভিনয়, অভিনেতা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উঠে এসেছে তাঁর সময়ের কথা। তখনই তিনি ভাগ করে নিয়েছেন দুটো অভিজ্ঞতা।
রাজ কপূর ‘ববি’ বানাচ্ছেন। নায়কের ভূমিকায় তাঁর ছেলে ঋষি। দৃশ্যটা এমন, স্নানশেষে নগ্ন ঋষি বেরিয়ে এসে পিছন ফিরে চুল মুছবেন। নায়কের পিছন দিক ক্যামেরায় ধরা হবে। ওই মুহূর্তে ঘরে পা রাখবেন অরুণা। অনেক কষ্টে অভিনেত্রীকে রাজি করিয়ে দৃশ্যগ্রহণ করেছেন পরিচালক। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি ঘেমে নেয়ে একসা! কিছুতেই স্বাভাবিক অভিনয় করতে পারছি না। শেষে রাজজি অনেক বুঝিয়ে আমায় স্বাভাবিক করেছিলেন।” অরুণা এর পরে ঋষির সঙ্গে আরও কাজ করেন। শুটিংয়ে দু’জনে মুখোমুখি হতেই অভিনেতা পুরনো প্রসঙ্গ তোলেন। জমে থাকা কৌতূহল প্রকাশ করে বলেন, “নগ্ন হওয়ার কথা তো আমার! আপনি অত লজ্জা পেলেন কেন? কেনই বা অভিনয় করতে চাইছিলেন না?” অভিনেত্রী সে দিন তাঁর অস্বস্তির কারণ সবিস্তার জানান তাঁকে।
আরও পড়ুন:
অভিনেত্রীর জীবনের প্রথম ঘটনাটি মজার। দ্বিতীয় ঘটনা ততটাই আশঙ্কার। তিনি তখন একটি ছবির সেটে। শুটিংয়ে ব্যস্ত। আচমকাই তাঁর স্তনে অস্বস্তি। কী যেন জমাট বেঁধে আছে। ক্রমশ সেই অস্বস্তি শরীরে ছড়িয়ে পড়তেই চিকিৎসককে জানান বিষয়টি। অরুণার কথায়, “সে সময়ে ক্যানসার নিয়ে ততটাও সচেতনতা ছড়িয়ে পড়েনি। ফলে, চিকিৎসক ততটাও পাত্তা দেননি। বলেছিলেন, ছোট একটা টিউমার মতো হয়েছে। তেমন কিছু না।” পরে সেটিই ক্যানসারে রূপান্তরিত হয় বলে জানান তিনি। রোগনির্ণয়ের পর চিকিৎসক অভিনেত্রীকে কেমোথেরাপির পরামর্শ দেন। সে দিন তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ শোনেননি। তিনি জানতেন, কেমো নিয়ে চুল ঝরে যায়। “তখনও নিয়মিত অভিনয় করছি। চুল ঝরে গেলে কী করে অভিনয় করব?”, যুক্তি ছিল তাঁর। সঠিক চিকিৎসার অভাবে ২০২০ সালে দ্বিতীয় বার ক্যানসার কাবু করেছিল অরুণাকে।