Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
rupa bhattacharya

Dilip-Rupa: দিলীপকে ‘ভণ্ড’ বলে বিজেপি ছেড়ে ফের বাম শিবিরে টলি-অভিনেত্রী

তিন বছর ধরে কাজ করার পরেও বিজেপি-র অন্দরে রূপা এবং তাঁর সতীর্থরা ব্রাত্য!

রুপা ভট্টাচার্য।

রুপা ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২১ ২১:২৮
Share: Save:

রাজ্য বিজেপি-তে একে একে নিভিছে দেউটি। প্রথমে বেসুরো বাবুল সুপ্রিয়। তার পরেই অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গী রূপা ভট্টাচার্য। সোমবার বাম দলের শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্তির মিছিলে হাঁটার পরে বুধবার নেটমাধ্যমে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রূপা। আনুষ্ঠানিক ভাবে দল ছাড়ার কথাও ঘোষণা করলেন তিনি। অভিনেত্রী সাফ জানিয়েছেন, যাঁরা যোগ দিয়েছেন তাঁরা জানেন, বিজেপি-র অন্দরেও লবিবাজি! সেখানে মুকুল রায়-ঘনিষ্ঠদের দিলীপ ঘোষ চেনেন না! তাই তিন বছর ধরে দলের হয়ে কাজ করার পরেও বিরোধী দলের অন্দরে রূপা এবং তাঁর সতীর্থরা নাকি ব্রাত্য! সেই অভিমান নিয়েই দলত্যাগ করে ফের বাম-মুখী তিনি।

রূপার অনুযোগের এখানেই শেষ নয়। দীর্ঘ পোস্টে তাঁর আরও দাবি, এক সময় বিজেপি প্রচার করেছিল, তৃণমূল চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল দল। সেখানে নীতি-শৃঙ্খলার নাকি বালাই নেই। রূপা নিজে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে দেখেছেন বিশৃঙ্খলা সেখানেও কম নেই! উদাহরণ হিসেবে তিনি পোস্টে জানিয়েছেন, ‘দু’বছর এই লবির জন্য ভয়ঙ্কর নাকানি চোবানি খেলাম সবাই। এর সঙ্গে গেলে ও রাগ করে। এ ডাকলে ও বলে, রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দেব।' রূপার ভাষায়, এই ‘রগড়ানি’ খেয়েই নাকি দল ছেড়েছেন অর্ধেক শিল্পী। রূপারা তখনও মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন!

বিজেপি ত্যাগের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কী কারণে বাম সমর্থক অভিনেত্রী হঠাৎ বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন? সেই উত্তরও তিনি দিয়েছেন। বলেছেন, সেই সময় তাঁকে ‘ধান্দাবাজ’ তকমা দিয়েছিলেন চেনাজানারা। যুক্তি, ‘২০১৯-এর ১৮ জুলাই আমরা যাঁরা একসঙ্গে যোগ দিয়েছিলাম তাঁদের দুটো ধান্দা ছিল। এক, বাংলায় নৈরাজ্যের অবসান হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যে যদি এক সরকার হয় তাহলে রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়বে। আমাদের রাজ্য থেকে দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিক, পরিযায়ী ইঞ্জিনিয়ার, পরিযায়ী কর্পোরেট, পরিযায়ী শিক্ষক এমনকি পরিযায়ী শিল্পীরা দলে দলে বাঁচার জন্য ঘর ছাড়বেন না। এটা একটা ধান্দা ছিল।' দ্বিতীয় ধান্দা ছিল নিজেদের ঘর বাঁচানো। রূপার মতে, ‘আমাদের বড় আর ছোট পর্দার দুনিয়ায় বহু শিল্পীর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল, সেটা সবাই জানেন। সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে আমরা কেন্দ্র সরকারের সাহায্য চাইছিলাম, যাতে রাজনৈতিক রং না দেখে শুধু যোগ্যতার নিরিখে এখানে শিল্পী-কলাকুশলী-প্রযোজক সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারেন। এটাই আসল ধান্দা ছিল আমাদের।'

আরও পড়ুন:

দিন যত এগিয়েছে, মোহভঙ্গ ঘটেছে প্রায় সবারই। অভিনেত্রীর দাবি, ২০১৯-এ দিল্লিতে যে দিলীপ ঘোষ তাঁদের গলায় উত্তরীয় পরিয়েছিলেন তার সঙ্গে বর্তমান বিজেপি রাজ্য সভাপতির আকাশ-পাতাল পার্থক্য। সেই দিলীপ এখনকার মতো ‘ভণ্ড’ নন। শিল্পীদের ‘রগড়ে’ দেওয়ার হুমকিও দিতেন না। একই সঙ্গে তিনি ভুলতে পারেননি তিন বছর ধরে দলে থাকার পরেও তাঁকে, বাকি কর্মীদের নির্বাচনে টিকিট না দেওয়ার খেদ। নির্বাচনের পরে তাঁদের শুনতে হয়েছে, তাঁরা দলের কেউ নন! পাশাপাশি, রূপা বিরোধিতা করেছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পর্যুদস্ত বাংলায় সিবিআই হানার।

এর পরেই তাঁর সিদ্ধান্ত, যাঁরা তাঁকে ‘শিল্পী’ বানিয়েছেন সেই জনগণের পাশেই থাকতে চান তিনি। যে ভাবে বাম দল রয়েছে শ্রমজীবী ক্যান্টিন, রেড ভলান্টিয়ার্সের মাধ্যমে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rupa bhattacharya Actress Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE