কল্কি কেঁকলা, বলিউডের ছকভাঙা অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এই ছকভাঙার অভ্যাস তাঁর শুধু পর্দায় নয়। বরং নিজের জীবনেও। প্রথম সম্পর্ক ভাঙার পর কল্কি বিয়ে করেন গাই হার্শবার্গকে। ২০২০ সালে তাঁরা জন্ম দেন কন্যা স্যাফোর। আর তা নিয়েই যত আলোচনা।
কল্কি মেয়ের জন্ম দিয়েছিলেন জলের মধ্যে। পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলিতে অস্ত্রোপচারের পরিবর্তে স্বাভাবিক প্রসবের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে জলের মধ্যে প্রসবের ঝোঁক ক্রমশ বাড়ছে। এই পদ্ধতিকে প্রাচীন এবং নিরাপদ বলে মনে করেন কল্কি। যদিও তিনি দাবি করেছেন, ভারতে অনেকেই তাঁর এই সন্তানপ্রসবের পদ্ধতিকে কটাক্ষ করেছেন।
কল্কির বড় হয়েছেন পুদুচেরিতে। তাঁর দাবি, তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তাই চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানের জন্মও হোক প্রকৃতির মধ্যেই। জলের মধ্যে সন্তান প্রসবের বিষয়টিকে খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া বলে মনে করেন তিনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কন্যার জন্মের পর অনেকেই ভেবেছিলেন এটি নিশ্চয়ই কোনও ধর্মাচার বা ধর্মবিশ্বাস থেকে উদ্ভূত প্রথা। কল্কি বলেন, “কেউ কেউ ভাবেন এর সঙ্গে ‘ডাইনি বিদ্যা’র কোনও যোগ থাকলেও থাকতে পারে।” অভিনেত্রী মনে করেন, এই ভুল ধারণা থেকেই অনেকে প্রসবের এই সহজ ও আরামদায়ক পদ্ধতিটি বেছে নিতে চান না।

২০২১ সালে ছোট্ট মেয়েকে ‘ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি মোদের বাড়ি এসো’ গান গেয়ে শুনিয়ে সমাজমাধ্যমে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন কল্কি। ছবি: সংগৃহীত।
কল্কি বলেন, “আমার মনে হয়, এটা প্রাথমিক পদ্ধতি হওয়া উচিত সন্তান প্রসবের। জলপ্রসব শরীরের জন্য অনেক সহজ ও আরামদায়ক। প্রাকৃতিক ভাবে সন্তানের জন্ম হচ্ছে। এ নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সন্তানের জন্যও এই পদ্ধতি নিরাপদ।” কল্কি দাবি করেন, গর্ভেও অ্যমনিয়োটিক তরলের মধ্যে মাসের পর মাস বেড়ে উঠেছে ভ্রূণ। তাই প্রসবের পর জলে পড়লেও তার মারাত্মক চমকে যাওয়ার কথা নয়। প্রসূতিরও এই পদ্ধতিতে খানিক আরাম পাওয়ার কথা।
জলপ্রসব বা ‘ওয়াটার বার্থ’-এ সাধারণত জলাশয়ের মধ্যে প্রসব হয়। আধুনিক প্রসবে একটি বাথটবে গরম জল ভরে প্রসূতিকে রাখা হয়। অনেকেই মনে করেন প্রসবকালীন বেদনা থেকে রেহাই দিতে পারে জলের উষ্ণতা। তা ছাড়া জলের মধ্যে থাকায় শিশুর নির্গমনও সহজ হতে পারে, ফলে প্রসূতি কম কষ্ট পান। কল্কি বলেন, “এই পদ্ধতি অনেক আরামদায়ক। আমি তো মনে করি এটাই প্রসব পদ্ধতি হওয়া উচিত।”
পাশাপাশি কল্কি এ-ও বলেন, মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাঁর কথায়, “জানি না কেন মানুষ জলপ্রসবের কথা ভাবেন না! অনেকেই বিষয়টি জানেন না। এমনটা নয় যে এটা খুব অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। হাসপাতালেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। তবে একটু খরচ সাপেক্ষ।
২০২০ সালে মেয়ে স্যাফোর জন্মের পরই অভিনেত্রী একটি বই লিখে ফেলেছিলেন, “এলিফ্যান্ট ইন দি উম্ব”। সে সময়ও মাতৃত্বের স্বাভাবিকতা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, পুরনো চেহারায় ফিরে যাওয়ার কোনও তাড়া তাঁর নেই।