Advertisement
E-Paper

জয় শ্রী রাম বা বন্দে মাতরম বলে মানুষকে বোকা বানানোর দরকার নেই: দেব

সাউথ সিটির ২৯ তলার অফিসে বসে আছেন যে মানুষটা, ভোটের ময়দানে গত প্রায় দেড় মাস ধরে যিনি ‘কুল’ তকমা পেয়েছেন। তিনি দেব। দীপক অধিকারী যখন রেকর্ডারের সামনে, রাজনীতির প্রসঙ্গ তো থাকবেই... সাউথ সিটির ২৯ তলার অফিসে বসে আছেন যে মানুষটা, ভোটের ময়দানে গত প্রায় দেড় মাস ধরে যিনি ‘কুল’ তকমা পেয়েছেন। তিনি দেব। আগামী ৫ জুন মুক্তি পাবে ‘কিডন্যাপ’। সাক্ষাত্কারের বিষয় মূলত সেটাই হবে ঠিক ছিল। কিন্তু দীপক অধিকারী যখন রেকর্ডারের সামনে, রাজনীতির প্রসঙ্গ তো থাকবেই!

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০৯:০০
অভিনেতা দেব।

অভিনেতা দেব।

ট্যানড হয়ে গিয়েছেন তো…
(হাসি) এই গরমে কি ফর্সা হয়ে যাব? মাঠেঘাটে পরিশ্রম করা লোক আমরা, ট্যান তো হবই।

এক মাস ধরে টানা প্রচার, এত এনার্জি কোথা থেকে পাচ্ছেন?
বিকজ অব দ্য এজ। আমি সব সময় বলি এটা। আমি তো কিছু পেতে, কোনও স্বার্থ নিয়ে পলিটিক্সে আসিনি। আমি মানুষের কাছে পৌঁছতে চেষ্টা করেছি। অনেস্টি থাকলে এনার্জি এমনিই চলে আসে। আমি পাঁচ বছর সত্ থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আর মানুষের ভালবাসা, আশীর্বাদ তো আছেই। যেখানেই যাচ্ছি, মানুষ ভালবাসছে। সে যে দলেরই হোক। এটাও ভাল লাগে।

কেমন হল ভোট?
খুব ভাল ইলেকশন হয়েছে ঘাটালে। ওভারঅলও ভাল। এক দিনে যতটা সম্ভব এরিয়া টাচ করার চেষ্টা করেছি।

আপনার এলাকায় তো সে দিন শুধু আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ খবরে ছিলেন?
হ্যাঁ। (হাসি) পুরোটাই ভারতী ঘোষ ছিলেন।

আরও পড়ুন, হিরোইনের ক্রেডিটও হিরোকে দেওয়াটা ঠিক নয়, বলছেন রুক্মিণী

বিপরীতে শান্ত ছিলেন আপনি। এটা কি পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি?
যদি এটা স্ট্র্যাটেজি বলেন, তা হলে এটা সবাই করুক, সেটা দেখতে চাই। ইন্ডিয়া শুড বি কুল, কাম, পিসফুল। দিস ইজ হোয়াট মাই কন্ট্রিবিউশন টু দ্য পলিটিক্স। যদি জিতি এ ভাবেই জেতা যায়। আমরা আলটিমেটলি তো সবাই জেতার জন্য লড়ছি। তার জন্য বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে হবে বা রাজীব গাঁধীকে চোর বলতে হবে, তা তো নয়। আমরা যা করছি সবটাই জেতার জন্য। আমি প্রথম দিন থেকে জেতার জন্য আসিনি। কাজ করার জন্য এসেছি। তার জন্য কুকথা বলতে হবে, তা তো নয়। আমার ৪৫ দিনের ক্যাম্পেনে কোথাও দেখাতে পারবেন না, আমি কোনও খারাপ কথা বলেছি। যেটা খামতি আমার দলকে বলেছি। মমতাদি তো কাজ করছেন। এন্ড অব দ্য ডে বিরোধী দলের প্রতি, প্রার্থীর প্রতি ভালবাসা, সৌজন্য থাকতে হবে। তবেই আমরা একটা ভাল ভারত দেখতে পাব।


প্রচার মঞ্চে হাত মেলাচ্ছেন দেব।

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। কে বা কারা করেছেন, তা তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু ওই দিন ওই ঘটনায় আপনার দলের তরফে কোনও প্ররোচনা বা উস্কানি ছিল বলে মনে করেন?
দেখুন, দিদি যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, চারটে লোক জয় শ্রী রাম বলছে। এফেক্টস্ হ্যাভ আফটার এফেক্টস্। কিছু করার নেই। ফলে মোদী যখন যাবেন, তার বিরোধীরা ব্ল্যাক প্ল্যাকার্ড দেখাবেন না? ওটা যদি নিয়ম হয়, তা হলে এটাও নিয়ম। পুরোটাই তো ভোটের জন্য। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন? মোদীজি, অমিতজি কিন্তু দিল্লিতে ভাষণ দিচ্ছেন। আর মার খেয়েছে কলকাতার চারটে ছেলে। যে দলেরই হোক। মার খেয়েছে সাধারণ মানুষ। ছাত্রছাত্রীরা। ব্যথা সারতে ওদের এক মাস লেগে যাবে। কিন্তু যাঁদের জন্য হল, তাঁরা এসি রুমে বসে আছেন। আমি বলব, ভোটটাকে ভোটের দিন পর্যন্ত ভাবুন। তার জন্য মারপিটটাকে আমি সমর্থন করি না।

ভোটের প্রচারে ভাষা নিয়ে প্রচুর আলোচনা চলছে…
সেটাই তো বলছি। এ বার অনেক প্রেশার ছিল। তার মধ্যে গরম। এত নোংরামো দেখছিলাম…আমি প্রথম থেকে মানুষকে ইন্সপায়ার করতে চেয়েছি। আমার মনে হয়েছে রাজনীতির মধ্যে ভালবাসা কোথাও মরে গিয়েছে। সেটা আবার তুলে আনতে হবে। আলটিমেটলি যদি জিতি ২৩ তারিখ আমি বুঝিয়ে দেব, এ ভাবেই রাজনীতি করা যায়। এ ভাবেই ভোটে জেতা যায়। যদি মার্জিন কম আসে, আমি জানি এই প্রশ্নটা হবে, দেবের মার্জিন কমেছে। আমি বলব, বেশ হয়েছে। এ ভাবে রাজনীতি করে যদি মার্জিন কমে কমুক। ওই ভাবে রাজনীতি করে মার্জিন বাড়িয়ে লাভ নেই। যদি কুকথা বলে, চিত্কার করে মার্জিন বাড়াতাম, তা হলে কোনও ডিফারেন্স থাকত না। ২০১৯-এর নির্বাচনের পর সব কটা দলের বসা উচিত। হোয়্যার দে ওয়েন্ট রং। দে নিড টু কারেক্ট দেমসেলভস। জয় শ্রী রাম বলে বা বন্দে মাতরম বলে মানুষকে বোকা বানানোর দরকার নেই। এ সব করে ভোট বাড়ানোর জন্য আমরা সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছি। সোশ্যাল মিডিয়াতে বোকা বানাচ্ছি। টাকা দিয়ে ওগুলো স্পনসর করা হয়নি। সেই ফাঁদে পা দিয়ে আমরা নিজের বন্ধুকে শত্রু করে তুলছি। আমি প্রথম দিনও লিখেছিলাম টুইটারে, ইলেকশন যে দিন হল সে দিনও লিখেছি, তুমি একটা দলকে সমর্থন করো মানে বিরোধী দলগুলি তোমার শত্রু নয়। এটাই আমি সবাইকে বোঝাতে চাইছি। অন্য একটা এক্সপিরিয়েন্স বলব?

আরও পড়ুন, হায় আল্লা, এটা কী করে করব: জয়া আহসান

প্লিজ…
১৩ তারিখ একটা খুব সুন্দর মেসেজ এসেছে এক সিপিএম নেতার। নাম বলছি না। উনি লিখেছেন, তোমার দলের আইডিয়োলজিতে হয়তো আমার সমর্থন থাকবে না। কিন্তু মানুষ হিসেবে, ২০১৯-এ সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিখেছে এমন যদি কোনও পলিটিসিয়ান থাকে, সেই পুরস্কার আমি তোমাকে দিলাম। আমি জানতে চাইলাম, কেন মনে হল? আমাকে বলল, তুমি যে ভাবে রাজনীতি হ্যান্ডেল করেছ, তোমাকে ফলো করছিলাম, আমরাও চাই ভারতের ছবিটা এ রকম হোক। এগুলো ভালও লাগে শুনে। এটাই তো পাওয়া।

ভোটের ময়দানে আপনার দুই ফিল্মি সহকর্মীর সঙ্গে কথা হয়েছে?
নুসরতের সঙ্গে কথা হয়েছে।

আর মিমি?
আমার ফোন থেকে ওর নাম্বারটা ডিলিট হয়ে গিয়েছে হয়তো।

লিখব এটা?
হ্যাঁ, কী আছে, লিখবেন।


শেষ প্রচারে দেব। ছবি: ফেসবুক থেকে গৃহীত।

আপনি ট্যানড হয়েছেন যেমন, হাতেও বেশ কিছু দাগ রয়েছে। এটা কি প্রচারের সময় ভক্তদের থেকে পাওনা?
(হাসি) আমি কেশপুরেরই ছেলে। ঘাটালেরই ছেলে। ওখানে তো আমি দেব নই। জনপ্রতিনিধি। আমি তো ওখানে ছাতা নিয়ে ঘুরব না। আমি মানুষের কাছে যাব। এখনও আমার হাতে প্রচুর মার্ক আছে, যেগুলো দেখছেন, এ সব ভালবাসার ছোঁয়া।

আপনার সহকর্মী মিমি কিন্তু প্রচারে গ্লাভস পরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন…
(হাসি) পলিটিক্সে নতুন হলে যা হয়। আমিও ২০১৪-এ একটা ভুল করেছিলাম। ভুল কমেন্ট করেছিলাম। ভুল বুঝেছিলাম। সেই ভুল শুধরে নিয়েছি। স্বীকার করে নিয়েছি। ভুল হলে সেটা স্বীকার করাই ভাল।

আরও পড়ুন, বিয়ে করেছি, কলকাতায় পরে অনুষ্ঠান করব, মুখ খুললেন শ্রাবন্তী

শ্রীকান্ত মোহতা কেমন আছেন?
হঠাত্ এই প্রশ্ন?

ইন্ডাস্ট্রিতে উনি আপনার বন্ধু তো।
আমি কী করে জানব? আমার মণির সঙ্গে কথা হয়েছে। শ্রীকান্তের জন্য খারাপ লাগে। লেটস হোপ ফর দ্য বেস্ট।

শ্রীকান্তের খারাপ সময়ে ওঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন?
খুব সেনসিটিভ সময় তো। আমি ফোন করলে যদি ভাবে আমি ওদের ওপর হাসছি…। আমি ভেবেছিলাম গিয়ে দেখা করব। মণিকে বলেওছিলাম। মণি বলেছিল, তুই ইলেকশনে লড়ছিস। পলিটিক্যাল হয়ে যাবে। আই উইল পাস ইওর মেসেজ।

আরও পড়ুন, মানুষ হিরোদের চোখে জল দেখতে পছন্দ করে না: প্রসেনজিৎ

শ্রীকান্তের কথা কেন জানতে চাইলাম, বলি। অনেকেই বলেন, শ্রীকান্তের পরামর্শে বা চাপে আপনি বাধ্য হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। রাজনৈতিক কেরিয়ারের কয়েকটা বছর পেরিয়ে এসে কী মনে হয়, সেই সিদ্ধান্ত কি ঠিক ছিল?
আমি যে উত্তরটা দিচ্ছি, লিখবেন কিন্তু।

অবশ্যই…
বন্যার মধ্যে যখন আপনি থাকবেন, তখন বন্যা কী ভাবে হয়েছিল, সেটা ভাববেন? নাকি নিজে এবং চারপাশের মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন?

থ্যাঙ্ক ইউ। ২৩ মে এবং ৫ জুন— দুটোর জন্যই শুভেচ্ছা।
থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

Celebrity Interview Dev Tollywood Celebrities Upcoming Movies Bengali Movie দেব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy