Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

অল্প বয়সে সাফল্যে পিআর কতটা কাজে লাগল? ঋদ্ধি বললেন...

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ‘নগরকীর্তন’ মুক্তির দোরগোড়ায়। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দর্শক সিনেমা হলে দেখতে পাবেন ‘পুঁটি’-কে। এই ‘পুঁটি’, অর্থাত্ ঋদ্ধি সেন ছবি মুক্তির আগেই পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ‘পুঁটি’র গল্প তো বটেই, আনকাট ঋদ্ধিও ধরা দিলেন একান্ত আড্ডায়।কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ‘নগরকীর্তন’ মুক্তির দোরগোড়ায়। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দর্শক সিনেমা হলে দেখতে পাবেন ‘পুঁটি’-কে। এই ‘পুঁটি’, অর্থাত্ ঋদ্ধি সেন ছবি মুক্তির আগেই পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ‘পুঁটি’র গল্প তো বটেই, আনকাট ঋদ্ধিও ধরা দিলেন একান্ত আড্ডায়।

ঋদ্ধি সেন।

ঋদ্ধি সেন।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:১৫
Share: Save:

জাতীয় পুরস্কারের খবরটা প্রথম কে দিয়েছিলেন?

মা। আসলে অনেকেই দিয়েছে। বেস্ট মেকআপ আর কস্টিউম প্রথমে জানতে পারি। তার পর জুরি। ফাইনালটা মা জানায় ফোন করে।

আর আপনি প্রথম কাকে জানিয়েছিলেন?

আমি ফার্স্ট ফোনটা কৌশিককাকুকে করেছিলাম। তত ক্ষণে জেনে গিয়েছিল কৌশিককাকু। বাবা-মা জানত একসঙ্গেই। তার পর আমি বান্ধবী, মানে সুরঙ্গনাকে ফোন করি। ও প্রথমে তো বিশ্বাসই করতে পারছিল না। তার পর নাকি ১৫-২০ মিনিট একা চুপচাপ বসেছিল ওলাতে। তার পর থিতিয়েছে…।

সেলিব্রেশন হয়েছিল নিশ্চয়ই…

সে দিন সবথেকে মজা হয়েছিল, বাবা, মা সবাই সেলিব্রেট করেছিল। সুরঙ্গনা বাড়ি থেকে কেক বানিয়ে এনেছিল। আর আমি সারাদিন শুটিং করেছিলাম। তার পরের দু’দিনও শুটিং করেছিলাম টানা। তবে আমার মনে হয় এর থেকে ভাল সেলিব্রেশন হতে পারে না। যে কাজের জন্য পুরস্কার পাওয়া, খবর পাওয়ার পর ১০ মিনিট গ্যাপ দিয়ে আবার সেই কাজেই ফিরে যাওয়া…।

আরও পড়ুন, আর একটু বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সেক্সটাকে ব্যবহার করতে হবে, বলছেন রাহুল

জাতীয় পুরস্কার তো দাদু (শ্যামল সেন) দেখে যেতে পারলেন না…

দুই দাদুই। এটা আমার আফশোস। দুই দাদু, অর্থাত্ শ্যামল সেন এবং মায়ের বাবা দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায় দেখে যেতে পারেননি। শ্যামল সেনকে তো কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাইনি। অনেক গল্প শুনেছি। এই পুরস্কারটা যাঁদের নিয়ে ছবিটা করা তাঁদের এবং আমার পুরো পরিবারের জন্য…।

বয়স কত আপনার?

এই তো, ২১ হবে।

এত অল্প বয়সে এত সাফল্য, শুধু জাতীয় পুরস্কারের কথা কিন্তু বলছি না…

না না, আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড। যে সব চরিত্র পেয়েছি সেগুলো বলছেন তো?


‘নগরকীর্তন’-এ পুঁটির লুকে ঋদ্ধি।

অফকোর্স…

সত্যিই। দেখুন, ২০১৩ থেকে সিনেমায় কাজ করছি। এটা ২০১৯। আমার যা বয়েস সকলেই এই বয়সে একটা ট্রানজিশনের মধ্যে দিয়ে যায়। চেহারা পাল্টে যায়। গলা পাল্টে যায়। মুখ বদলে যায়। সেখানে আমি এত ইন্টারেস্টিং সব চরিত্র পেয়েছি, আই স্টিল কান্ট বিলিভ ইট। সেটা ‘চিলড্রেন অফ ওয়ার’ হোক, ‘ওপেন টি…’ হোক, ‘লোডশেডিং’ হোক। বা ‘ইলা’, ‘নগরকীর্তন’।

পিআর কতটা কাজে লাগল?

জিরো।

কী বলছেন! এটা তো নাকি পিআরেরই যুগ…

(হাসি) আমার প্রথম ছবি ছিল ‘কহানি’। শান্তিকাকু (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়), খরাজকাকু (খরাজ মুখোপাধ্যায়) রেফার করেছিল। বাবা-মা করেনি।

আরও পড়ুন, বয়ফ্রেন্ড অভিমন্যুর সঙ্গে বড় কাজ করব না, বললেন মানালি

কিন্তু শান্তিলাল বা খরাজ আপনাকে কৌশিক এবং রেশমির ছেলে হিসেবেই তো চিনতেন।

হ্যাঁ। কিন্তু ওরা জানত, ঋদ্ধি থিয়েটার করে। মজার ব্যাপার, সে সময় বাবাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কী রেমুনারেশন নেবে ঋদ্ধি। বাবা বলেছিল, ক্লাস এইটে আবার রেমুনারেশন কী? কাজটা করুক। আমি ‘কহানি’র জন্য কোনও রেমুনারেশন নিইনি।…বাংলার কথায় পরে আসছি। হিন্দি ছবিগুলোর কথা বলি। আমার বাবা-মা না কখনও হিন্দি ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে, না কখনও কনট্যাক্ট করেছে। কাজটা চেন রিঅ্যাকশনের মতো আমার কাছে এসেছিল। ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ দেখে ‘চৌরঙ্গা’ আসে। সেটা দেখে ‘পার্চড’। তার পর ‘ভূমি’।

আর বাংলায়?

হুম। কলকাতা। যেখানে ইন টপিক নেপোটিজম। দেখুন, এমন তো বহু পরিচালক বা প্রযোজক আছেন যাঁরা নিজের ছেলেমেয়েদের ডিরেক্ট প্রোমোট করার চেষ্টা করেছেন। সারা ভারতে। কিন্তু পয়েন্ট হল, এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে ওয়ান টাইম ফিল্ম হয়েই থেকে গিয়েছে। আবার লঞ্চ করার ফলে রণবীর কপূর, আলিয়া ভট্টের মতো অভিনেতারাও বেরিয়েছে। আমার পয়েন্ট হল, এটা এমন একটা জিনিস, অ্যাডভান্টেজের তুলনায় বেশি প্রবলেম ক্রিয়েট করে।

কেন?

কারণ তুলনা হয়, সেটা একটা এক্সট্রা প্রেশার। আর ২০১৯-এ ওয়েব বা সব কিছু এত হাতের কাছে চলে এসেছে যে মানুষ ওই জায়গাটা সেলিব্রিটি কিডকে দিতে রাজি নয়। দেওয়া উচিতও নয়।


‘নগরকীর্তন’-এর দৃশ্যে ঋত্বিক এবং ঋদ্ধি।

পিআর তা হলে একেবারেই করেননি বলছেন?

না! পিআর আমি তো নিজে করিনি। বাংলা ছবি তুলনায় কম পেয়েছি হিন্দির থেকে। ‘ওপেন টি…’র পর থেকে অ্যাকটিভলি সোশ্যাল মিডিয়া শুরু করি আমি। কিন্তু পিআর করতে পারি না। আর আমার বাবা-মাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, দু’জনে যা-ই করুক, অ্যাটলিস্ট পিআর করার চেষ্টা করেনি (হাসি)। আমি এমন অনেককে খুব কাছ থেকে জানি, সকাল থেকে উঠে ফেসবুকটা তার চাকরি। আর পিআর করে করে শেষ করে দেয়। কিন্তু বছর শেষে গিয়ে আউটকামটা খুব নমিনাল হয়ে দাঁড়ায়। আমি সেই অর্থে লাকি। আজ অবধি যা কাজ করেছি, একটা থেকে আর একটা কাজ এসেছে।

‘নগরকীর্তন’-এর গল্পটা তো অনেক দিন আগে শুনেছিলেন?

হুম্…। গল্পটা শুনেছি ১৭ বছর বয়সে। তার পর ১৯ বছর বয়সে শুট করি।

আরও পড়ুন, ‘সোহিনীর সঙ্গে প্রেমের পর স্যারকে বলেছিলাম, ওকে বিয়ে করতে চাই’

ঋত্বিক চক্রবর্তীর মতো অভিনেতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন। অনেকেই কিন্তু ভয় পান। আপনি?

আমি ঋত্বিকদার সাংঘাতিক ফ্যান। ওয়ান অফ দ্য বেস্ট অ্যাক্টর ইন দ্য ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। নট কলকাতা। ফলে এই মানুষটার সঙ্গে এমন একটা রোল করার সুযোগ পাচ্ছি সেটা আমার কাছে অনেক বেশি এক্সাইটিং ছিল। তার সঙ্গে কমপিট করার থেকেও ইম্পর্ট্যান্ট হচ্ছে কতটা শিখলাম।

কমপিট করার কথা ভেবেছেন নাকি?

না, একেবারেই না। আসলে ভাল অভিনেতা হতে গেলে কত ভাল কো-অ্যাক্টর আমি, সেটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কারণ এখন ওই যুগটা চলে গিয়েছে, যে আমাকে লোকে কতটা দেখতে পেল। আমাকে কতটা প্রজেক্ট করা হল। আর ঋত্বিকদা এমন এক জন অভিনেতা যে পুরো ছবিটা নিয়ে ভাবে। আমাকে আজ পর্যন্ত বসিয়ে কোনও দিন বলেনি, শোন ওই সিনটা এই ভাবে কর। এটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং। দু’জনের মিউচুয়াল রেসপেক্ট থেকে আমাদের কাছে ছবিটা, ‘মধু’ (‘নগরকীর্তন’-এ ঋত্বিকের চরিত্র) আর ‘পুঁটি’ (‘নগরকীর্তন’-এ ঋদ্ধির চরিত্র) অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট। ফলে কম্পিটিশন তো আসেইনি। আর যে প্রেমের দৃশ্যগুলো হয়েছে, আমার তো মনে হয় অন্যতম সেরা প্রেমের দৃশ্য হয়ে থেকে যাবে। সেগুলো হতে পেরেছে, কারণ স্ক্রিপ্টটা আমরা বিশ্বাস করেছি।


বান্ধবী সুরঙ্গনার সঙ্গে ঋদ্ধি। ছবি: ফেসবুক থেকে গৃহীত।

অল্প বয়সে সাফল্য, তার পরেও মাটিতে পা রাখার মন্ত্রটা কী?

২০১৯-এ মানুষ যত তাড়াতাড়ি আমাকে মনে রেখেছে, তত তাড়াতাড়ি ভুলে যেতে পারে। আর আমার পরিবারে অভিনয়ের দীর্ঘ ইতিহাস থাকার জন্য এক্সট্রিম সাকসেস যেমন দেখেছি, খারাপ সময় কেমন হতে পারে, সেটাও আমার দেখা। কী হয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে জানি। এই প্রফেশনটাই খুব ইনসিকিওর। আমার পরিবারের থেকে যা শিখেছি, তাতেই মাটিতে পা রাখার মন্ত্র রয়েছে। আর অভিনয়টা আমার খুব ভাল লাগার জায়গা। মূর্খ হলেই এটাকে কেউ স্পয়েল করবে। ক্লাস টেনের পর আমার বাবা-মা বলল, ইলেভেন-টুয়েলভ প্রাইভেটে পড়। কারণ অভিনয়টা তোমার সাবজেক্ট। বাবা-মা বুঝেছিল, অঙ্ক বা ফিজিক্স পড়ে আমার লাভ নেই। ফলে এটা নষ্ট করার মানে হয় না।

আরও পড়ুন, প্রেম বা বিয়ে করার জন্য কলকাতায় ছেলে পাওয়া মুশকিল: পায়েল

এত ব্যস্ততার মধ্যে রিলেশনশিপ মেনটেন করছেন তো?

আমার তো ওপেন রিলেশনশিপ। সুরঙ্গনা।

প্রথম প্রেম?

নো। আই হ্যাড টু রিলেশনশিপস। ক্লাস এইটে একটা ছিল। আর ‘ওপেন টি…’ শুট করার সময় একটা সিরিয়াস রিলেশন ছিল। সুরঙ্গনার সঙ্গে ‘ওপেন টি…’র সময় প্রেম হয়নি। তখন অন্য এক জন গার্লফ্রেন্ড ছিল। ওরও বয়ফ্রেন্ড ছিল। এখন আমাদের চার বছর হয়ে গিয়েছে। সবটাই ওপেন। চার পাতার চিঠি লিখে প্রচন্ড ভয়ে ভয়ে ওর বাড়িতে গিয়ে বই দেওয়ার নাম করে বইয়ের ফাঁকে চিঠি দিয়ে এসেছিলাম। তার পর উত্তরের অপেক্ষায় ছিলাম…(হাসি)। ফলে রিলেশনশিপ নিয়ে আমি খুব ওপেন।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE