Advertisement
E-Paper

ছোট্ট ছবিতে বড়সড় ধাক্কা! একাকিত্বকে টেক্কা দিয়ে বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন দেবেশ

পরিত্যক্ত প্রবীণ বাবা-মায়ের গল্প। তবু গল্পটা আঙুল তোলে তাদের ছেলেমেয়েদের প্রতি। অসহায়তাকে টক্কর দিয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের ছবিতে পাল্টা চাল দেবেশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৩৩
ছবির এক দৃশ্যে ভদ্রা বসু।

ছবির এক দৃশ্যে ভদ্রা বসু।

ছেলেমেয়েরা বিদেশে থাকেন। কেউ তিন বছর বাড়ি আসেননি। কেউ পাঁচ বছর। কেউ আবার লকডাউনের পর বাড়ি বেচে দিয়ে বৃদ্ধ-বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়েছেন। যাঁরা বাড়িতে একলা আছেন, তাঁরা ছেলেমেয়েদের পথ চেয়ে এক বুক অভিমান নিয়ে দিনের পর দিন কাটাচ্ছেন। ভরসা শুধুই ভিডিয়ো চ্যাট। সে রকমই একটি চ্যাট দিয়ে শুরু হয় ছবি।

ছোট দৈর্ঘ্যের ছবি। পরিচালনায় দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। বাংলা চলচ্চিত্রে একাকিত্বের সমস্যা আগেও উঠে এসেছে, তবে তার ইতিবাচক দিক সামনে এনে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া এই প্রথম। প্রবীণ প্রজন্ম যেন চ্যালেঞ্জ করছেন নবীনদের। তাঁরাই বা কীসে কম?

আড়াই মিনিটের এই প্রকল্পের পিছনে কি কোনও বাস্তব ঘটনার অভিঘাত রয়েছে? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন করেছিল পরিচালককে।

ছোট ছবিতে বড় ধাক্কা দেবেশের।

ছোট ছবিতে বড় ধাক্কা দেবেশের।

দেবেশ বলেন, “ভীষণ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। সল্টলেকে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। কথা বলতে বলতে সামনের বাড়িগুলোর দিকে তাকিয়েছিলাম। সেগুলোয় অল্প অল্প আলো জ্বলছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম সবগুলোতেই বুড়োবুড়িরা থাকেন। তাঁদের ছেলেমেয়েরা সবাই বিদেশে। তাঁদের বিষাদ নিয়েই প্রাথমিক ভাবনা হচ্ছিল। কিন্তু সেটা দিয়েই যদি পাল্টা দেওয়া যায়? এটাকেই ফলপ্রসূ করা যায়? সেই ভাবনা বাস্তবায়িত হল শান্তিনিকেতনে গিয়ে।”

দেবেশ জানান, এর পর শান্তিনিকেতনে বেড়াতে গিয়ে এক আবাসন প্রকল্পের একগুচ্ছ বাংলোর মধ্যে একটায় উঠেছিলেন তিনি। সেখানেও অদ্ভুত ভাবে খেয়াল করেন বয়স্ক নর-নারীর ভিড়। তাঁদেরও ছেলেমেয়েরা বিদেশে। কিন্তু তাঁরা কেউ সেখানে একা নন। পেয়েছেন বৃহত্তর পরিবার। প্রত্যেকেই জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছেন। ব্যস্ততায় ভরেছে তাঁদের অসহায় অবসর। সেখান থেকেই ছবিটি তৈরি করে ফেলেন ‘ইয়ে’ নির্মাতা।

দেখা যায়, ছোট ছবিটিতেও একদা ছেলের অপেক্ষায় বসে থাকা বৃদ্ধা কিশোরীদের নাচ শেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ছেলের সঙ্গে চ্যাট বা ফোনে কথা বলার ফুরসত থাকে না তাঁর আর। মূল ভূমিকায় অভিনয় করছেন বর্ষীয়ান থিয়েটার অভিনেত্রী ভদ্রা বসু।

যদিও ছবিটি এখনও শিরোনামহীন। প্রযোজনায় শান্তিনিকেতনের সেই আবাসন প্রকল্পের কর্ণধার অমিতাভ সামন্ত। তাঁদের ঠিকানায় গিয়েই ডানা মেলেছিল এই ছবি। তবে এ ছবি কোনও প্রকল্পের বিজ্ঞাপন নয়, জানালেন নির্মাতা। অমিতাভ জানান, দেবেশের ভাবনার সঙ্গী হতে পেরে তাঁরাও ধন্য।

একাধারে নাট্যব্যক্তিত্ব এবং গবেষক, অন্য দিকে চলচ্চিত্র পরিচালক দেবেশের হাতে বর্তমানে একগুচ্ছ কাজ। পিরান্দেল্লোর নাটক ‘কোথাকার চরিত্র কোথায় রেখেছ’ মঞ্চে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি শ্যুটিং শুরু করছেন পরবর্তী পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘ফ্যাতাড়ু’র। নবারুণ ভট্টাচার্য সৃষ্ট বৈগ্রহিক চরিত্র ফ্যাতাড়ুকে মঞ্চের পর পর্দায় রূপ দিতে চলেছেন পরিচালক। সেই ফাঁকেই রেখে দিলেন ছোট্ট অথচ বড় এক অন্য মাত্রার ছবি।

Short Film debesh chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy