ছবিতে সোহম-শুভশ্রী
দেখ কেমন লাগে
পরিচালনা: সুদেষ্ণা রায়, অভিজিৎ গুহ
অভিনয়: সোহম, শুভশ্রী
৬/১০
দেখ কেমন লাগে। না, কাউকে বিপদে পড়তে দেখে মনের রাগ মিটিয়ে নেওয়া নয়। মনে মনে আনন্দ পাওয়াও নয়। সুদেষ্ণা রায় এবং অভিজিৎ গুহর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির নাম এটাই। কমেডিতে ভরপুর এই ছবি। তবুও ট্রিটমেন্ট, গল্প বলার ধরন সব মিলিয়ে আর পাঁচটা গতানুগতিক কমেডি ছবির থেকে এটা আলাদা। গল্প সহজ পথে এগোতে এগোতেই বাঁক নেয় এখানে অন্য দিকে।
‘বেঁচে থাকার গান’-এর মতো বাস্তবধর্মী ছবির পর পরিচালকদ্বয়ের কাছ থেকে বিনোদনে ভরপুর একটি অন্য স্বাদের ছবি উপহার পেলেন দর্শক। যতই বিনোদন থাকুক, মজা থাকুক, তার অন্তরালে জীবনের বাস্তব গল্পটাই উঠে আসে সুদেষ্ণা-অভিজিতের ছবিতে। এ ছবিও তার ব্যতিক্রম নয়।
ছবির গল্পে আসা যাক। রায় পরিবারের ছোট ছেলে রাহুল (সোহম) পড়তে যায় আমেরিকায়। কলকাতায় ফিরে এলে তাকে নিয়ে মেতে ওঠে রায় পরিবার। রাহুলের ছোটবেলার বান্ধবী গুঞ্জা (শুভশ্রী)। দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরে রাহুলের আগমনে, তার এবং গুঞ্জার মধ্যে নতুন করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে এই সম্পর্কের যাত্রাপথ একেবারেই সহজ নয়। প্লেবয় গোছের দুষ্টু বুদ্ধির রাহুল প্রতিবারই কোনও না কোনও মেয়ের সঙ্গে গভীর ভাবে মেলামেশা করে বিপদে পড়ে। আর প্রতিবারই তাকে রক্ষা করতে ডাক পড়ে গুঞ্জার। এক রকম জোর-জবরদস্তি করেই গুঞ্জাকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে থাকে রাহুল।
এ ভাবেই চলছিল বেশ। কিন্তু রাহুলের জীবনে ছন্দপতন ঘটায় একটি বাচ্চা ছেলের অপ্রত্যাশিত অনুপ্রবেশ। যে কিনা নিজেকে রাহুলের সন্তান বলে দাবি করে। তাকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। সেই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই মেলে না গুঞ্জারও। না, এর বেশি গল্প বললে যে হলে গিয়ে ছবি দেখার মজাটাই চলে যাবে।এ ছবিতে শুভশ্রীকে দেখা গিয়েছে ডিগ্ল্যামারাস লুকে। কমার্শিয়াল ছবির কেতাদুরস্ত নায়িকার পরিবর্তে শুভশ্রীকে মনে হয় পাশের বাড়ির মিষ্টি মেয়েটি। তাঁর অভিনয় মন ছুঁয়ে যায়। ছটফটে লেডিকিলার রাহুলের চরিত্রে নিজের সেরাটা দিয়েছেন সোহম।
তবে যাকে ছাড়া এই ছবির গল্পই অসম্পূর্ণ থেকে যায়, সে হল শিশুশিল্পী অভীক চোংদার। রাহুলের ছেলের চরিত্রে সে আলাদা ভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করে। সোহম, শুভশ্রীর সঙ্গে একেবারে দাপিয়ে স্ক্রিন শেয়ার করেছে এই খুদেটি। এক কমিক চরিত্রে মীরকে মন্দ না লাগলেও, যেন মন ভরল না। কেন যেন মনে হল সেই মিরাক্কেলোচিত ঘরানা থেকে বেরোতে পারেননি। রাহুলের বাবার চরিত্রে সুজন মুখোপাধ্যায় এবং গুঞ্জার বাবার চরিত্রে বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের টিপিক্যাল কমিক অভিনয়ে হাসি বাঁধ মানে না। রাহুলের মায়ের চরিত্রে সুভদ্রার অভিনয়ও উল্লেখের দাবি রাখে।
হাস্যকৌতুকে ভর করে ছবির গল্প এগোচ্ছিল সহজ পথেই। কিন্তু ছবির শেষটা আগেই আঁচ করতে পারাটা একটু অপ্রত্যাশিত লেগেছে। আসলে পরিচালকদের থেকে প্রত্যাশাটা একটু বেশি থাকায় পরিণতির আগাম পূর্বাভাস যেন তার ছন্দপতন ঘটিয়েছে। তবে ছবির টানটান সম্পাদনা (সুজয় দত্তরায়) এবং গল্প বলার ধরন দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখে ছবির শেষ পর্যন্ত। প্রেমেন্দুবিকাশ চাকীর ক্যামেরাও ভাল। ছবির সংগীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরোনোর পরে যদিও কোনও গানের রেশই মনে থেকে যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy