নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে যেতেই নতুন ছবির ৫০ শতাংশ শুটিং সেরে ফেলেছেন পরিচালক কিংশুক দে। সোমবার বাঘাযতীন অঞ্চলের একটি বাড়িতে সেই ছবির ইন্ডোর শুটিং ছিল তাঁর। এ দিন টেকনিশিয়ানরা শুটিংয়ে যোগ না দেওয়ায় নষ্ট হল আরও একটি দিন। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীজিৎ রায়, সুদেষ্ণা রায়ের পর একই সমস্যার সম্মুখীন কিংশুকও।
এ বার কী করবেন তিনি? বাকিদের মতো মাথা নোয়াবেন? প্রশ্ন নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম।
“শুটিংয়ের সমস্যা তো আজকের নয়। মাসখানেক আগে যখন প্রথম শুটিং শুরু করেছিলাম মধ্যমগ্রামে, সে দিন থেকে নানা বাগড়া। প্রথম দিনেই সেটে হাজির ফেডারেশনের কিছু লোকজন। সারা দিন আমার কাজ বন্ধ। কাজের শুরুতেই বাধা পেলে মনের অবস্থা কী দাঁড়ায় বলুন তো?”, এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন কিংশুক। সে সব নিয়েই শুটিং করছিলেন তিনি। “ফেডারেশন এবং বাইরের টেকনিশিয়ান নিয়ে ১১৬ জনের একটি টিম নিয়ে তার পরেও লড়ে গিয়েছি”, দাবি তাঁর। কিছু আউটডোর শুটিং করেছেন ঝাড়খণ্ডে। সমস্যা কিছু পিছু ছাড়েনি। যার জেরে মাঝেমধ্যেই কাজ বন্ধ গিয়েছে তাঁর। মাঝে কয়েক দিন বিরতি দিয়েই এ দিন নতুন উদ্যমে বাকি শুটিং শুরুর জন্য মনস্থির করেছিলেন।
কিংশুক ভাবলেন এক, আর ঘটল আর এক! পরিচালকের হতাশা, “নানা ওজর-আপত্তি। নির্দিষ্ট কারণ নেই। কেউ জানাচ্ছেন, কাজ করবেন না। কেউ আসব বলেও আসছেন না! আগাম মনে হয়েছিল, সোমবার এ রকম কিছু ঘটতে পারে। আমার আন্দাজ ঠিক হল।” পরিচালকের নতুন ছবি ‘হ্যারি ওম’-এ অভিনয় করছেন বিশ্বনাথ বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সৌম্য মুখোপাধ্যায়, স্বাতী মুখোপাধ্যায়, মধুমিতা প্রমুখ। পরিচালক-ফেডারেশনের দ্বন্দ্বের জেরে ভুগছে টলিউড— এমন কথাও বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুন:
পরিচালক জানিয়েছেন, এই কাজিয়ার জেরে গত বছর ছবির সংখ্যা ১৩৬টি থেকে কমে হয়েছিল মাত্র ৩৬টি। এ বছর সে সংখ্যা যে আরও কমবে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই তাঁর। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন, তিনি দমার পাত্র নন। হাই কোর্ট পরিচালকদের স্বাধীন ভাবে কাজের অনুমতি দিয়েছে। প্রয়োজনে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিবের সহযোগিতা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে তিনি সচিবের দ্বারস্থ হবেন। তার পর ফেডারেশনের বাইরের টেকনিশিয়ানদের নিয়ে কাজ শেষ করবেন।
এত বাধা পাচ্ছেন। এ বার কি বাকি পরিচালকদের মতো কিংশুকেরও পরিচালক গিল্ড এবং হাই কোর্টের মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পালা?
“প্রশ্নই নেই!”, জোরালো কণ্ঠে জানালেন তিনি। যোগ করলেন, “সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব, এই ভাবনা থেকেই এত দিন মিটমাটের চেষ্টা করেছি। আজ সেই পথ বন্ধ হয়ে গেল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যত দূর যেতে হয় যাব। ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া বা ডিএইআই ছাড়ব না।”