Advertisement
E-Paper

টেকনিশিয়ানেরা সরে গেলেন একে একে! এ বার কি ফেডারেশনের অসহযোগিতার মুখে সুদেষ্ণা রায়?

শুটিং শুরু হওয়ার দিন ছয়েক আগে প্রথম সরে যান প্রোডাকশন ম্যানেজার। তার পর একে একে বাকিরাও। যার জেরে শুটিং শুরু করতে পারলেন না সুদেষ্ণা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১২:১৮
শুটিং করতে পারছেন না পরিচালক সুদেষ্ণা রায়।

শুটিং করতে পারছেন না পরিচালক সুদেষ্ণা রায়। ছবি: ফেসবুক।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীজিৎ রায়ের পর পরিচালক সুদেষ্ণা রায়। বুধবার লাইভ সম্প্রচার করে পরিচালক জানালেন, আগামী ছবির শুটিং করতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন তিনিও। বুধবার উত্তর কলকাতার একটি বাড়ির ভিতর থেকে সমাজমাধ্যমে লাইভ করেন তিনি। জানান, তাঁর দীর্ঘ ২০ বছরের পুরনো প্রোডাকশন ম্যানেজার শুটিং শুরুর ছ’দিন আগে আচমকা কাজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রোডাকশন ম্যানেজার যে গিল্ডের সদস্য সেই গিল্ড এবং ফেডারেশনকে ইমেল করে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানান সুদেষ্ণা। ইমেল আদানপ্রদান হওয়ার মধ্যেই একে একে সরে দাঁড়ান তাঁর আগামী ছবির সঙ্গে যুক্ত বাকি টেকনিশিয়ানেরাও।

শুক্রবার থেকে শুটিং শুরুর কথা ছিল পরিচালকের। তিনি এ দিন শুটিং স্পট থেকে অসহায় ভাবে সরাসরি জানান, টেকনিশিয়াদের অসহযোগিতার কারণে নির্দিষ্ট দিনে শুটিং শুরু করতে পারলেন না। এ বার কি তা হলে ডিএআই সংগঠনের সম্পাদক হওয়ার সুবাদে তাঁর উপরেও ফেডারেশনের কোপ এসে পড়ল?

বিষয়টি সম্পর্কে সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কথা বলেছেন সুদেষ্ণা। তাঁর কাছে একই প্রশ্ন রাখতে তিনি বললেন, “আমারও সে রকমই মনে হচ্ছে। আচমকা একে একে টেকনিশিয়ানেরা যে ভাবে সরে দাঁড়ালেন তাতে আমি স্তম্ভিত। আমার ম্যানেজার, চিত্রগ্রাহক— এঁদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করেছি। কোনও সমস্যা হয়নি। ওঁরাই হাসিমুখে অর্ধেক দায়িত্ব সামলে দিয়েছেন। এঁরাই কি তাঁরা?”

ইতিমধ্যেই ফেডারেশনের অকারণ হস্তক্ষেপ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী, সুব্রত সেন, সুদেষ্ণা রায়-সহ ১৫ জন পরিচালক। তাঁরা সম্মিলিত ভাবে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যেই মামলার দু’টি শুনানি হয়েছে। আগামী শুনানি ১৯ মে। শুনানিতে বার বার বলা হয়েছে, পরিচালকদের কাজে ফেডারেশন হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

তার পরেও কি ফেডারেশনের এই আচরণ করতে পারে? তিনিও কি এ রকম কিছু আশঙ্কা করেছিলেন?

এই প্রশ্নের জবাবে সুদেষ্ণার বক্তব্য, “কিছুই ভাবতে পারছি না। বলার অবস্থাতেও নেই। আর আইনি বিষয়টি আইনজীবীই একমাত্র বলতে পারবেন।” তিনি এ-ও জানিয়েছেন, কিছু একটা ঘটতে পারে, ইঙ্গিত ছিল। তবে তাঁর উপরে এ ভাবে কোপ পড়বে সেটা ভাবতে পারেননি।

কিন্তু শুটিং শুরুর কয়েক দিন আগে যদি এ ভাবে একে একে টেকনিশিয়ানেরা সরে দাঁড়ানো, এবং তা যদি ফেডারেশনের অঙ্গুলি হেলনে হয়, তা হলে মামলাকারী পরিচালকদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী? এ বিষয়ে নতুন পরিচালক সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন বলেন, “পরিচালক গিল্ড কোনও ভাবে কোনও পদক্ষেপ করবে না। কারণ, পরিচালকেরা ব্যক্তিগত ভাবে মামলাটি দায়ের করেছেন। কোনও সংগঠনের তরফ থেকে নয়।” একই সঙ্গে কটাক্ষ করেন, “গত বছর কমবেশি ৪০টি ছবি হয়েছিল। এ বছর সেই সংখ্যা আরও কমে হয়তো কুড়িতে এসে দাঁড়াবে। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পর সুদেষ্ণা রায়ের ছবি বন্ধ হল। অঙ্কের হিসাব বলছে, এতে সমানুপাতের হার ২:৯০। অর্থাৎ, দু’জন পরিচালকের কাজ বন্ধ মানে ৯০ জন টেকনিশিয়ান কাজ হারালেন। এটা দুঃখজক।”

স্বাধীন ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, কাজ করতে না দেওয়ার অধিকার যেমন কারও নেই একই ভাবে কাজ করতে অনিচ্ছুক— এই মত জানানোর স্বাধীনতাও বোধহয় সকলের আছে। সুদেষ্ণার আগামী ছবির শুটিং থেকে টেকনিশিয়ানেরা সরে যাওয়া প্রসঙ্গে যদি এই দিকটি সামনে আসে তা হলে পরিচালক কী বলবেন? সুদেষ্ণার যুক্তি, “অবশ্যই কাজ না করতে চাওয়ার অধিকারও সকলের আছে। কিন্তু তাঁরা অন্তত কারণ জানাবেন। আমি প্রত্যেক টেকনিশিয়ানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, কেন তাঁরা কাজ করতে চাইছেন না? কেউ কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।” অনেকে এ-ও নাকি জানিয়েছেন, একসঙ্গে একাধিক গিল্ডের সদস্যরা কাজ না করলে তাঁদেরও কিছু করার নেই।

সুদেষ্ণার এই বক্তব্যে সিলমোহর দিয়েছেন তাঁর অনেক দিনের চেনা চিত্রগ্রাহক সৌম্যদীপ্ত গুইন। তাঁর কথায়, “আমার অধীনে লাইটম্যান, ইলেকট্রিশিয়ান, ট্রলি সেটার-সহ একাধিক গিল্ডের সদস্যরা কাজ করেন। এঁরা প্রত্যেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। আমি তা হলে কাদের নিয়ে কাজ করব? আমিও তাই সরে দাঁড়াতে বাধ্য।”

Sudeshna Roy Federation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy