Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Bonding of Actresses

তৃণা এবং সোহিনীর মধ্যে তুলকালাম! তবে কি এক সেটে নায়িকাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয় না?

সম্প্রতি তৃণা সাহা এবং সোহিনী সরকারের মধ্যে ঝামেলা নিয়ে চর্চা চলছে টলিপাড়ার অন্দরে। নায়িকাদের মধ্যে কি তবে বন্ধুত্ব হয় না? স্টুডিয়োপাড়ার একাংশের মত অন্য।

Trina Saha and Sohini Sarkar

তৃণা সাহা-সোহিনী সরকার। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ২০:০৩
Share: Save:

দুই নায়িকা কখনও বন্ধু হতে পারেন না। যুগ যুগ ধরে এই ধারণাই চলে আসছে। সম্প্রতি টলিপাড়ায় ঘটে যাওয়া ঘটনা আরও বেশি করে যেন এমনটাই ভাবাচ্ছে দর্শককে। কয়েক দিন আগে প্রকাশ্যে এসেছে অভিনেত্রী তৃণা সাহা এবং সোহিনী সরকারের মধ্যে বিবাদের ঘটনা। সম্প্রতি ‘মাতঙ্গী’ সিরিজ়ের শুটিং করতে গিয়ে ঘটেছে এই ঘটনা। জানা গিয়েছে, প্রযোজনা সংস্থার তরফে সোহিনীকে যে সুবিধা দেওয়া হয়েছিল সেই একই সুবিধা দাবি করেন তৃণা। যা না-পাওয়ায় সূত্রপাত যাবতীয় সমস্যার। চার দিন বন্ধ থাকে শুটিং। টলিপাড়ার সূত্রের খবর, ওই সিরিজ়ের শিল্পীদের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে নাম না করে একটি মেসেজ করেন সোহিনী। সব কিছু মিটিয়ে শুটিং শুরুর আবেদনও করেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু তৃণার মনে হয়, তাঁকে অপমান করা হয়েছে। পরে অবশ্য তৃণা শুটিং বন্ধ থাকার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে প্রযোজনা সংস্থার মত ছিল না। শোনা যাচ্ছে, তৃণার বদলে রোশনী ভট্টাচার্যকে নিয়ে সিরিজ়ের শুটিং নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্মাতারা।

এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা একাধিক বার প্রকাশ্যে এলেও নায়িকাদের মধ্যে বন্ধুত্বের উদাহরণও কিন্তু একদম বিরল নয়। বিশেষত ছোট পর্দায় অনেক সময়ই একের অধিক নায়িকা দেখা যায়। একই ফ্লোরে কাজ করতে করতে নিজেদের অজান্তেই তাঁরা হয়তো ভাল বন্ধু হয়ে যান। যেমন ‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’ সিরিয়ালের নায়িকা ঊর্মি এবং খলনায়িকা রিনি। ক্যামেরার সামনে তাঁদের যতই সাপে নেউলে সম্পর্ক হোক না কেন, শট কাটলেই তাঁরা যেন হরিহর আত্মা। তাঁদের ইনস্টাগ্রামে ঢুঁ দিলেও তেমনটাই দেখা যায়।

এই মুহূর্তে ঊর্মি ওরফে অন্বেষা হাজরাকে দর্শক দেখছেন ‘সন্ধ্যাতারা’ সিরিয়ালে। অন্য দিকে রিনি ওরফে মিশমি দাস অভিনয় করছেন ‘খেলনা বাড়ি’ সিরিয়ালে। দু’জনে আলাদা সিরিয়ালে অভিনয় করলেও যোগাযোগ কমেনি। একে অপরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মিশমির কথায় নায়িকাদের মধ্যে ঝামেলা তখনই হয় যদি না তাঁদের নিজেদের উপর ভরসা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে মিশমি বলেন, “আমার মনে হয় যাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না, নিজেদের কাজ এবং জায়গা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট এবং আত্মবিশ্বাসী, তাঁদের মধ্যে এমনটা কখনও হয় না। আর আমাদের মধ্যে তো বিন্দুমাত্র কোনও প্রতিযোগিতা কাজ করে না। দু’জনে নিজেদের মতো কাজ করি। অন্বেষা আমার থেকে দেরিতে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করলেও খুব ভাল অভিনেত্রী। আমি এই ‘ক্যাট ফাইট’ বিষয়টাতেই বিশ্বাস করি না।”

শুধু মিশমি, অন্বেষা নয়। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক নায়িকাই নতুন বন্ধু খুঁজে পেয়েছেন। ‘পঞ্চমী’ সিরিয়ালে অভিনয়ের সূত্রে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে সুস্মিতা দে এবং শিঞ্জিনী চক্রবর্তীর মধ্যে। তাঁদের মাঝেমাঝেই একসঙ্গে রিল ভিডিয়োয় দেখা যায়। ‘সাহেবের চিঠি’ সিরিয়ালটি চলাকালীন দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়, ঐন্দ্রিলা বসু এবং দেবলীনা কুমারের মধ্যে ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সিরিয়াল শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক সময় দেবলীনার জিমে একসঙ্গে দেখা যায় তাঁদের। ঐন্দ্রিলার সঙ্গে তো ঘুরতেও গিয়েছিলেন দেবচন্দ্রিমা। অন্য দিকে, সম্প্রতি ‘গুড্ডি’ সিরিয়ালে অভিনয় করতে গিয়ে নায়িকা শ্যামৌপ্তি মুদলি এবং ঐন্দ্রিলা ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছেন।

বন্ধুত্ব প্রসঙ্গে ঐন্দ্রিলার উত্তর, “আমি মনে করি, প্রতিযোগিতা সব সময়ই থাকে। ক্যামেরা বন্ধ হলে সেই প্রতিযোগিতাও শেষ হয়ে যায়। ব্যক্তিগত জীবনের সেটা ঢুকে পড়লেই যত ঝামেলা হয়। এই সীমারেখাটা বোঝা খুবই প্রয়োজন।”

বাংলা সিরিয়াল ছাড়াও বড় পর্দার নায়িকারাও কিন্তু সময়ের সঙ্গে বন্ধু হয়ে উঠেছেন। বড় পর্দায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চললেও পর্দার বাইরে নায়িকারা অনেকেই বন্ধু। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান— কে নেই সেই তালিকায়। একসঙ্গে পুজোর আড্ডা থেকে বাড়িতে খাওয়াদাওয়া সবটাই চলে জমিয়ে। যদিও সমাজমাধ্যমের ছবি এবং বাস্তবের সমীকরণের ফারাক থেকেই যায়। সেই সমীকরণ সব সময় বোঝা দায়। তবে নায়িকাদের মধ্যে শুধুই ‘ক্যাট ফাইট’ রয়েছে, তা কিন্তু বলা যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE