Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘আমাদের আর আরাধ্যার শৈশবে অনেক পার্থক্য’

ব্রেক নিয়ে ফিরে এসেছেন তিনি। জীবন, দর্শন ও কেরিয়ার নিয়ে খোলামেলা অভিষেক বচ্চন অমিত ত্রিবেদী একজন উচ্চমানের সঙ্গীত পরিচালক। যে ভাবে উনি নতুন গায়কদের সুযোগ দেন, তাঁদের ট্যালেন্টকে তুলে ধরেন, তা প্রশংসনীয়। এখনকার ছবিতে গানের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। সেখানে একটা ছবিতে গানের এত বৈচিত্র সত্যিই অভিনব। আমরা বিভিন্ন শহরে গিয়ে কনসার্ট করছি। দারুণ লাগছে!

অভিষেক বচ্চন।

অভিষেক বচ্চন।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: এই প্রথম অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

উ: খুব ভাল। এই প্রথম তাপসী পান্নু, ভিকি কৌশলের সঙ্গেও কাজ করলাম। অনুরাগকে অনেক দিন ধরেই চিনি। ‘যুবা’ অনুরাগের লেখা। কিন্তু ওর নির্দেশনায় কোনও দিন কাজ করা হয়নি। আমার কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল, অনুরাগের লাভ স্টোরি ডিরেক্ট করা। ন্যারেশন শুনে বুঝতে পারছিলাম, এই ছবির ধারা অনুরাগের অন্যগুলোর চেয়ে একদম আলাদা।

প্র: ছবিতে পাগড়ি পরেছেন। নিজে বাঁধতে জানেন?

উ: না। তবে সেটে তার জন্য আলাদা লোক ছিল। অভিনেতা হিসেবে সব সময়ে খেয়াল রাখতে হয়, যেন কাউকে আঘাত না করে ফেলি। আমার দাদি সর্দারনি ছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে আমাকে দেখে খুব খুশি হতেন।

প্র: ছবিতে ১৫টা গান আছে। এই নিয়ে আপনি নাকি খুব উত্তেজিত?

উ: অমিত ত্রিবেদী একজন উচ্চমানের সঙ্গীত পরিচালক। যে ভাবে উনি নতুন গায়কদের সুযোগ দেন, তাঁদের ট্যালেন্টকে তুলে ধরেন, তা প্রশংসনীয়। এখনকার ছবিতে গানের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। সেখানে একটা ছবিতে গানের এত বৈচিত্র সত্যিই অভিনব। আমরা বিভিন্ন শহরে গিয়ে কনসার্ট করছি। দারুণ লাগছে!

প্র: আপনার প্রথম ছবি ‘রিফিউজি’ রোম্যান্টিক। ‘মনমর্জ়িয়া’ও তাই। তখন আর এখনকার রোম্যান্টিক ছবির মধ্যে পার্থক্য কী?

উ: অনেকটাই আলাদা। তখন অনস্ক্রিন রোম্যান্স লাজুক আর নিষ্পাপ ছিল। এখন খুব সোজাসাপ্টা। লাজুক তো একদমই নয়।

প্র: পঞ্জাবে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: ওখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় পাইনি। তবে আমি আর অনুরাগ মাঝে মাঝে রাতের দিকে চুপিচুপি ধাবায় গিয়ে ডিনার করে আসতাম। কেউ টের পেত না। আগে-পিছে দশ জন বডিগার্ড নিয়ে চলাফেরা করিনি। ও সব করলেই লোকজন আরও কৌতূহলী হয়ে ওঠে। তবে ভক্তদের নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। ওঁরা আমাদের থেকে কী-ই বা চান? সেলফি ব়ড়জো়র। সেটুকু তো দেওয়াই যায়। গোল্ডেন টেম্পলে অনেক বার গিয়েছি। আমরা হার্ট অফ দ্য সিটিতে শুটিং করছিলাম। গোল্ডেন টেম্পল এত শান্তিপূর্ণ জায়গা যে, মন ভাল হয়ে যায়। অভিনেতাদের জীবনের ট্র্যাজেডি হল, আমরা কাজের সূত্রে দেশ-বিদেশের অনেক জায়গায় যাই। কিন্তু শুটিং বাদ দিলে ঘুরে দেখার সময় থাকে না। অভিযোগ করছি না, বাস্তবটা বলছি।

প্র: ‘মনমর্জ়িয়া’ মানে মনের কথা শোনা। অভিনেতা হওয়ার আগে এবং পরে নিজের মনের কথা কতটা শুনেছেন?

উ: ছাত্রজীবনে খেলাধুলো আর ড্রামা নিয়ে খুব আগ্রহ ছিল। অভিনেতা হওয়ার পরেও সময় পেলেই মাঠে নেমে পড়ি। নিজের কবাডি এবং ফুটবল টিম বানিয়েছি। ভীষণ আনন্দ হয়, যখন দেখি ভারতে কবাডি খেলার প্রচলন বাড়ছে। বিশেষ করে মেট্রো সিটিতে। মনের কথা শুনেই আমি সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলাম।

প্র: ঘুরতে ভালবাসেন?

উ: খুব! নতুন দেশে যেতে, সেখানকার সংস্কৃতি উপভোগ করতে আর নতুন ধরনের খাবার খেতে ভাল লাগে।

প্র: তাপসীর সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?

উ: তাপসী ভীষণ ট্যালেন্টেড। খুব স্বাভাবিক অভিনেত্রী। ‘মনমর্জ়িয়া’র চরিত্রটা ও ছাড়া কেউ পারত না।

প্র: নেপোটিজ়ম নিয়ে এখন অনেক কথাবার্তা হয়। আপনার কী মত?

উ: আমার উপরে কোনও অতিরিক্ত প্রেশার ছিল না। আসল চাপটা তখন তৈরি হয় যখন ক্যামেরা অন হয়। তখন আপনাকে পারফর্ম করতে হবে। আপনি স্টারকিড বা অন্য কেউ কি না এই সবে কিছু এসে যাবে না। তবে এখনকার নবাগতদের কাজের ধরন আলাদা। ক্যামেরার সামনে ওঁরা সাবলীল।

প্র: স্টারডমকে কী ভাবে দেখেন?

উ: ইটস আ প্রিভিলেজ ইউ গেট ফ্রম ইয়োর অডিয়েন্স। এক জন অভিনেতার উচিত দর্শককে সব সময়ে বিনোদন দেওয়া। দর্শকের ভালবাসা আর শ্রদ্ধাই হল স্টারডমের ভিত। স্টারডম পাওয়া এবং তা বজায় রাখা দুটোই কঠিন।

প্র: বাবা হিসেবে আরাধ্যার শৈশবকে কী ভাবে দেখেন?

উ: আমাদের আর আরাধ্যার শৈশবে অনেক পার্থক্য। এখনকার বাচ্চারা অনেক স্মার্ট। ওদের জানার বা শেখার ইচ্ছেটা অন্য রকম। সময়ের স্রোতে অভিভাবকরা সেটার সঙ্গে মানিয়ে নেন। বাচ্চা বড় হওয়ার সঙ্গে আমাদেরও নানা রকম অভিজ্ঞতা হতে থাকে। আরাধ্যা বই পড়তে আর খেলতে খুব ভালবাসে।

প্র: আপনি ছোটবেলায় কতটা দুষ্টু ছিলেন?

উ: আমি ভীষণ হাইপার চাইল্ড ছিলাম। মা সব সময়ে আমার দুষ্টুমির কথা বলতেন। তবে বাবা কোনও দিন আমাকে মারেননি বা বকেননি। বাবার একটা কড়া চাউনি আমার জন্য যথেষ্ট ছিল।

প্র: খুব কম ছবিতে কাজ করেন। এত ব্রেক নেন কেন?

উ: ব্রেক এই কারণেই নিয়েছিলাম কারণ আমার মনে হয়েছিল, খুব এক ধরনের কাজ করছি। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার মতো চরিত্র আমার কাছে ছিল না। এমন একটা পর্যায়ে যেতে চাইছিলাম না, যখন আমার মনে হবে, ‘ওহ সকালে উঠে আবার কাজ করতে যেতে হবে!’ ব্রেক নিয়ে নিজেকে সময় দিয়েছি। ছবি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছি।

প্র: জীবনের এই পর্যায়ে এসে মা- বাবার জন্য কী করতে চান?

উ: দু’জনকে খুশি রাখতে চাই। ওঁদের স্বাস্থ্য যেন ভাল থাকে। ওঁদের মুখে যেন সব সময়ে হাসি থাকে।

প্র: পজ়িটিভ থাকেন কী করে?

উ: নেগেটিভ কথা চিন্তা করি না। আমি আর ঐশ্বর্যা বাড়িতে থাকলে প্রত্যেক রাতে সিনেমা দেখি। খুব ভাল সময় কাটে। তবে হরর ফিল্ম একদম দেখি না। ভীষণ ভয় পাই!

প্র: বাংলা ছবিতে কাজ করবেন?

উ: সুযোগ পেলে করব। ঋতুদাকে (ঋতুপর্ণ ঘোষ) আমরা সবাই মিস করি। মায়ের খুব ভাল বন্ধু ছিলেন। ‘অন্দরমহল’-এ কাজের অভিজ্ঞতা কোনও দিন ভুলব না। হি ওয়জ় আ সিনেম্যাটিক জিনিয়াস। উনিই প্ৰথম পরিচালক, যিনি আমাদের চার জনের সঙ্গেই ছবি করেছেন। তার পরে কর্ণর (জোহর) সঙ্গেও আমরা চার জন কাজ করেছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE