Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Ranjini Mukhopadhyay

‘বয়ফ্রেন্ডের নাম বলে দিলে কি এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়া যায় না?’

আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারেপাল্টা প্রশ্ন করলেন ‘আর্টিকল ফিফটিন’-এর রঞ্জিনী চক্রবর্তী। মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে আয়ুষ্মান খুরানা থেকে সম্পর্ক, সব কিছু নিয়ে অকপট তিনি।আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারেপাল্টা প্রশ্ন করলেন ‘আর্টিকল ফিফটিন’-এর রঞ্জিনী চক্রবর্তী। মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে আয়ুষ্মান খুরানা থেকে সম্পর্ক, সব কিছু নিয়ে অকপট তিনি।

রঞ্জিনী চক্রবর্তী

রঞ্জিনী চক্রবর্তী

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:০৫
Share: Save:

আপনি এত বেপরোয়া কেন?
হঠাৎ এই প্রশ্ন?

বাড়ির প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও অভিনয় জগতে এলেন?
হুম! অনেক অনেক আপত্তি।লামার্টিনিয়ারে পড়া মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে আমি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ত্রিসীমানায় কেউ ছিল না। মা ভেবেছিল মেয়ে প্রফেসর হবে। সে কি না বলে অভিনয় করবে! শুধু অভিনয় নয়, মুম্বই গিয়ে কাজ করবে একা! এটা কে মানবে?তা-ও জোর করে এফটিআই-এর পরীক্ষা দিই। মা ভেবেছিল পাশ করব না। আমি সুযোগ পেলাম। অন্য একটা জগৎ খুলে গেল। মা-ও ভাবল যে স্কুলে নাসিরুদ্দিন শাহ, শাবানা আজমির মতো মানুষ আছেন সেখানে গেলে খারাপ কিছু হবে না। মা তো আগে ভাবত, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করলে মেয়ের কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে।

খারাপ? কেরিয়ারের প্রথমেই আয়ুষ্মান খুরানার সঙ্গে ছবি! এক্কেবারে ছক্কা!
হ্যাঁ,‘আর্টিকল ফিফটিন’-এর জন্য অডিশন নেওয়া হচ্ছিল। আমাকে ওঁদের পছন্দ হয়। আসলে এফটিআই-এর শিক্ষা আমাকে প্রচুর সাহায্য করেছে।

আরও পড়ুন-জাইরাকে বাঁচাতে লড়াইয়ে প্রিয়ঙ্কা এবং ফারহান!


আয়ুষ্মান খুরানা কেমন মানুষ?
ওরকম একজন স্টার! অথচ কী সহজ। ফ্লোরে একরকম বা ফ্লোরের বাইরে আলাদা, এমনটাও নয়। বরং ভীষণ সহযোগী। ডিনার খেতে যাচ্ছে তো আমাদের সব্বাইকে ডেকে নিয়ে যাবে। একসঙ্গে খাবে। এক খাওয়া। স্টার বলে আলাদা কিছু না।আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল, সেখানে নিয়মিত লেখা। শুটের সময় দেখেছি অন্যরা ক্রিকেট খেলছে তো আয়ুষ্মানও খেলবে। মনে হয় একেবারে পঞ্জাবের মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে। এই ছবির স্ক্রিপ্ট দেখে মনে হয়েছিল, এটা আমাদের দেশের সকলের ছবি। কারণ এই ছবি গণতন্ত্রের কথা বলে। এই ছবিতে ছোট-বড় যা-ই চরিত্র পাই আই ডোন্ট কেয়ার! এই ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকাই বড় ব্যাপার।

‘আর্টিকল ফিফটিন’-এর আগে আর কী কাজ করেছেন?
আমি প্রথম অদিতি রায়-এর ‘অবশেষে’ ছবিতে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করি। তারপরে শ্যামল কর্মকারের ছবি ‘চোখের পানি’।কলকাতা ফেস্টিভ্যালে স্ক্রিনিং হয়েছিল। পরে কাজ করলাম ‘সিডনি উইথ লাভ’। সব্যসাচী চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলাম।তারপরে মুম্বই চলে যাই।পরে‘টুমববার্ড’করলাম। এটা প্লিজ অ্যামাজনে দেখবেন।



আর্টিকেল ১৫ টিম

আপনি বাংলা ছবি দেখেন?
কলকাতায় এলে দেখি।

সম্প্রতি কী দেখলেন?
বাবা-মাকে নিয়ে ‘গোত্র’দেখতে গিয়েছিলাম। আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নগরকীর্তন’দেখে খুব ভাল লেগেছে।

বাংলায় কাজ নেই কেন আপনার?
আমি ভেবেছিলাম মুম্বই-কলকাতা করে কাজ করব। তবে দেখলাম, আমি মুম্বইতে থাকি বলে কলকাতায় কেউ নোটিস করছে না আমায়। আমি পিআর-ও তো পারি না। তবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

পিআর না করেও তো ‘লালবাজার হেডকোয়ার্টার্স’-এর মতো ওয়েব সিরিজে প্রস্টিটিউটের চরিত্র করছেন?
খুব চ্যালেঞ্জিং চরিত্র। এত ভাল কাজ হচ্ছে! সায়ন্তনের মতো পরিচালকের সঙ্গে আমি আবার কাজ করতে চাই।অসাধারণ পরিচালক।একটা মেয়ের লড়াই চমৎকার ভাবে বোঝানো হয়েছে এখানে।

মেয়ে হিসেবে একা মুম্বইয়ে থাকা। কতটা লড়াই করতে হয়েছে?
আমার বার্নিং প্যাশন সবকিছুর বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের ইচ্ছাপূরণ করতে শিখিয়েছে। আর এফটিআই-এর শিক্ষা আমায় রক্ষা করেছে।

রক্ষা বলতে?
এফটিআই থেকে পাশ করে বেরিয়েছি বললে লোকে একটু সচেতন হয়। চট করে বলতে পারে না স্লিপ ওভারের কথা।

রঞ্জিনীর অন্য লুক


এরকম কোনও অভিজ্ঞতা আছে?
একবার কেরিয়ারের প্রথম দিকে একটা জুয়েলরি শুটের জন্য আমায় পার্টিতে আসতে বলা হয়েছিল। এফটিআই থেকেই শিখেছিলাম কোনও প্রযোজক ছবিতে যদি ফিজিকাল ইন্টিমেসির কথা বলেন, সেটা আরোপিত নাকি চিত্রনাট্যের খাতিরে,সেটা যাচাই করে নিতে হবে। সেই পার্টিতে গিয়েই অন্য মেয়েদের পোশাক দেখে বুঝেছিলাম ব্যাপারটা সুবিধের নয়।দুটো বন্ধুকে বাইরে দাঁড় করিয়েও রেখেছিলাম। যাই হোক, আমি এমন এমন সব ছবির কথা বলতে শুরু করলাম, প্রযোজক বুঝে গেলেন আমাকে দিয়ে উনি যা চান হবে না।

আপনার শরীর নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ আছে?
না, শরীর নিয়ে ছুঁতমার্গ নেই।কিন্তু কোন ছবিতে আছি? কী ভাবে কাজ করছি? মানুষ এই ছবিকে কী ভাবে নিচ্ছে? সেটা খুব খেয়াল রাখি। প্রথম দিকে আমি খুব লাজুক ছিলাম।লড়াই করতে করতে লজ্জা কিছুটা ঝেড়ে ফেলেছি।চিত্রনাট্য শক্তিশালী হলে সেক্ষেত্রে ছুঁতমার্গ থাকে না আমার।

আরও পড়ুন- বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন জাহ্নবী, অনেক কিছু বললেন, কিন্তু...


আর রিলেশনশিপ?
আমি কমিটেড। আমার বয়ফ্রেন্ড আছে। আমাদের বহুকালের সম্পর্ক। আমি এই বিষয়ে একেবারে ওল্ড স্কুলের। অনেক দিনের সম্পর্ক। সে-ও অভিনেতা। এফটিআই থেকেই আমাদের প্রেম।

নামটা বলুন।
আশিস বর্মা। আচ্ছা, এই যে নাম বলে দিলাম, সম্পর্কের কথাও একবারেই বলে দিলাম। আমি কি আর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাবো না?

প্রশ্নটা করেই শটে গেলেন সোজা কথার রঞ্জিনী, নাকি ‘লালবাজার হেডকোয়ার্টার্স’-এর ফারজানা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE