Advertisement
E-Paper

নায়িকাকে আজও এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতে লড়তে হয়, সেখানে নতুন নায়ক দুটো হিট দিয়েই দর বাড়ান

নায়িকাকে ছকে বাঁধা গল্পে আটকে রাখবেন। সেটাকেই বলা হবে নায়িকাপ্রধান ছবি। তার পর খ্যাতনামী নায়কের সমতুল্য বাণিজ্য আশা করবেন! সম্ভব?

উপালি মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১৬
কলকাতায় বাংলাদেশের তাসনিয়া ফারিণ।

কলকাতায় বাংলাদেশের তাসনিয়া ফারিণ। নিজস্ব ছবি।

রবিবারের অলস সকাল। পার্ক সার্কাসের এক অতিথিশালায় তিনি। তাসনিয়া ফারিণ অবশেষে কলকাতায়। দেবের নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়েও হারিয়েছেন। কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ দেখে আফসোসে ভুগছেন, কেন এ রকম ছবি বেশি তৈরি হয় না?

প্রশ্ন: কলকাতায় স্বাগত।

তাসনিয়া: (খুশি গলায়) ধন্যবাদ।

প্রশ্ন: কবে এলেন?

তাসনিয়া: ২৩ তারিখে এসেছি। চলে যাওয়ার সময় হয়ে গেল। গত বছর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এসেছিলাম। অনেক দিন পরে আসায় যেন বেশি রকম ভাল লাগছে (হাসি)। সকলের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি। ঘুরছি এ দিক-সে দিক। পছন্দের খাবারগুলোও খাওয়ার চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন: আপনি যখন এলেন তখন কলকাতায় সবে কালীপুজো শেষ হয়েছে। ভাইফোঁটার উদ্‌যাপন।

তাসনিয়া: (উত্তেজিত কণ্ঠে) হ্যাঁ, এয়ারপোর্ট থেকে আসার সময়েই চারিদিকে দেখছি আতশবাজি পুড়ছে। সারা শহর আলোয় সাজানো। কী ভাল যে দেখাচ্ছিল! এর আগে কখনও এই সময় কলকাতায় আসিনি। শহর যেন অপরূপা। দেখতে দেখতে খুব আফসোস হচ্ছিল। আর একটু আগে, ধরুন, দুর্গাপুজোর সময়ে যদি আসতে পারতাম। তা হলে আরও ভাল লাগত।

প্রশ্ন: শহরে কী কারণে?

তাসনিয়া: আরও আগেই আসার কথা ছিল। ভিসা পাচ্ছিলাম না। একটি ছবিতে অভিনয় করাই হল না। এখন সে সমস্যা মিটেছে। অনেক দিন ধরেই এখানে কাজের কথা চলছে। ফোনে সে সব কথা তো হয় না। তা ছাড়া, ঘুরতেও এলাম। আসতে পারি না আপনাদের কাছে? (জোরে হাসি)।

প্রশ্ন: আপনি আর চঞ্চল চৌধুরী কি অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর আগামী ছবিতে আছেন?

তাসনিয়া: আগামী ছবি কি না জানি না। তবে অনেক আগে থেকেই টোনিদার সঙ্গে কথা চলছে। ফলে, ওঁর সঙ্গে কাজের জন্য মুখিয়ে। আর চঞ্চলদা সেই কাজে থাকবেন কি না এটাও কিন্তু জানি না।

প্রশ্ন: অনিরুদ্ধের ‘ডিয়ার মা’ দেখেছেন?

তাসনিয়া: আমি আর চঞ্চলদা টোনিদার বাড়িতে একসঙ্গে দেখেছি। জয়া আহসান আপু কী ভাল অভিনয় করেছেন। খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। প্রত্যেকটি দৃশ্য ভীষণ যত্ন করে ক্যামেরায় ধরেছেন টোনিদা।

সিরিজ় ‘কারাগার’-এ তাসনিয়া ফারিণ।

সিরিজ় ‘কারাগার’-এ তাসনিয়া ফারিণ। ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের মানুষেরা যখন আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা জানতে চাই, ও পার বাংলা কেমন আছে?

তাসনিয়া: (মিষ্টি হেসে) ভাল আছে বাংলাদেশ। ভাল ভাল কাজ হচ্ছে। আমিও কাজ করছি। এখন ওখানে ছবির বাজেট আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। যদিও হলসংখ্যা নিয়ে এখনও প্রশ্ন আছে। সব মিলিয়ে ভালই।

প্রশ্ন: মাঝখানের ‘অন্ধকার সময়’ পেরিয়ে এসেছেন আপনারা?

তাসনিয়া: দেখুন, আমি না একেবারেই রাজনীতিমনস্ক নই। বেশি কথা বলতেও ভালবাসি না। ফলে, এই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি বলতে পারব না। বলতে চাইও না। আর আমার মনে হয়, একজন শিল্পীর এত জটিল বিষয় নিয়ে কথা না বলাই শ্রেয়।

প্রশ্ন: মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিরিজ় ‘লেডিজ় অ্যান্ড জেন্টলমেন’ আপনাকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে। তাঁকে রাজনীতিতে দেখে খুশি? শিল্পীদের এই আঙিনায় পা রাখা উচিত ?

তাসনিয়া: দেখুন, আমার খুশি-অখুশি হওয়ার কিছু নেই। প্রত্যেকের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। তাই আমি কোনও দিন এই ময়দানে পা রাখব না। যিনি মনে করবেন তিনি পারবেন, অবশ্যই সেই ব্যক্তি রাজনীতিতে আসবেন।

প্রশ্ন: দেশের বাকি অভিনেতাদের মতো নিশ্চয়ই আশা করেছিলেন, বিনোদন দুনিয়া থেকে আসা রাজনীতিবিদ সেই ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিশেষ কিছু করবেন?

তাসনিয়া: আমার বিশ্বাস, উনি নিশ্চয়ই তাঁর মতো করে কিছু না কিছু করছেন। কী করছেন, সেটা যদিও জানি না। হয়তো ওঁর খুব কাছের মানুষ বা যাঁরা বোদ্ধা তাঁরা জানেন। এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলতেও চাই না।

প্রশ্ন: দেবের নায়িকা হওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন, আফসোস?

তাসনিয়া: (ফের হইহই করে উঠলেন), আর বলবেন না! ওঁরা অনেক দিন পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। আমিও আসার খুবই চেষ্টা করেছি। বেশ টানাপড়েন গিয়েছে তখন। শেষ পর্যন্ত ব্যাটে-বলে হল না। এই তো, দিন দুই আগে ‘স্বার্থপর’ ছবির প্রিমিয়ারে দেখাও হল দেবদার সঙ্গে। উনি বললেন...

প্রশ্ন: দেব নিশ্চয়ই বললেন, সেই এলে, আমার বেলায় এলে না...

তাসনিয়া: না না, তা বলেননি। বললেন, যাক! অবশেষে এলে। দেখা হল আমাদের। এর আগে দেবদার সঙ্গে সব কথা ফোনে হয়েছিল। মুখোমুখি এই প্রথম।

প্রশ্ন: দুই বাংলার কাজের ধরন কি খুব আলাদা?

তাসনিয়া: কাজের ধরন হয়তো একটু আলাদা। আমাদের স্বাধীন কাজ তুলনায় হয়তো বেশি হয়। এখানকার কাজ অনেক বেশি সুসংগঠিত, পেশাদার। এর বাইরে পার্থক্য সে রকম কিন্তু কিছুই নেই। একই ভাষা, দুই দেশের পরিবেশ এক, আমরা দেখতেও এক— পার্থক্য কই?

প্রশ্ন: ইদানীং বিষয় বা গল্পের প্রাধান্য বেশি। টলিউডে সম্প্রতি তেমনই ছবি তৈরি হচ্ছে। ঢালিউড নতুন কী ভাবছে?

তাসনিয়া: ওই যে বললাম, বাজেটে পরিবর্তন এসেছে। বড় বাজেটের কাজ হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে দেখছি, ইদকে কেন্দ্রকে করে ছবির দুনিয়ায় ভাল ব্যবসা হচ্ছে। এর কারণে প্রযোজনাতেও পেশাদারিত্ব এসেছে। এমন কিছু মানুষ এসেছেন, যাঁরা শুধুই বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এতে একটা সুবিধা হয়েছে। আমরা আগে যে গল্প বলতাম, সেটা আরও বড় করে বলতে পারছি। বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে শুটিং হচ্ছে। যে গল্প আগে বলার সাহস দেখানো হয়নি, সে গুলো এখন ছবি, সিরিজ় বা নাটকে দেখানো হচ্ছে। এগুলোই আমাদের নতুনত্ব।

প্রশ্ন: কলকাতায় কম সময়ে, কম বাজেটে ছবি তৈরি হয়। বাংলাদেশে একটি ছবি বানাতে দু’বছরও লাগে। নিজের দেশের প্রশংসা করবেন?

তাসনিয়া: (হেসে ফেলে) ভাল-মন্দ দুটোই বলব। ধরুন, কোনও পরিচালক চান, তাঁর ছবিতে সব ঋতুই দেখাবেন। সেখানে তাঁকে অপেক্ষা করতেই হবে। এটাই আবার অভিনেতাদের কাছে চাপের। এত দিন ধরে ‘প্রসেসিং’-এর মধ্যে থাকতে হয়।

অতনু ঘোষের ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবিতে তাসনিয়া ফারিণ, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।

অতনু ঘোষের ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবিতে তাসনিয়া ফারিণ, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের বেশির ভাগ অভিনেতা অনেক দিন ছোটপর্দায় কাজের পর বড়পর্দায় আসেন। এটা কি দুই পর্দার ছুতমার্গের কারণে?

তাসনিয়া: আমি অন্তত সে রকম মনে করি না। বাকিদের কথা অবশ্য বলতে পারি না। তবে আমি যখন ছোটপর্দায় কাজ করেছি, তখন বড়পর্দা থেকে এমন কোনও ডাক পাইনি যেটা রাজি হওয়ার মতো। আবার আমি যখন অতনু ঘোষদার ‘আরো এক পৃথিবী’তে কাজ করলাম তখনও ছোটপর্দায় অভিনয় করেছি। এখন কী হয়েছে, ছোটপর্দায় নতুন করে আবিষ্কার করার কিছু নেই। সেই খিদে মেটাতে পারে বড়পর্দা। সেই জন্য দুই দেশের বড়পর্দায় নিজেকে দেখতে চাইছি। সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমারও সুযোগ আসছে। তার মানে এটা নয়, আমি আর ছোটপর্দার নাটক করব না। ওই মাধ্যমই তো আমায় তাসনিয়া ফারিন বানিয়েছে।

প্রশ্ন: কোনও দিন এ দেশের ছোটপর্দায় ধারাবাহিক করবেন?

তাসনিয়া: (একটু থমকে) মনে হয় পারব না। কারণ, শুনেছি অনেক সময় ধরে সেগুলো চলে। তার জন্য সব ছেড়ে আপনাদের কাছে থাকতে হবে। অতটা সময় সত্যিই দিতে পারব না। আমায় তো নিজের দেশেও কাজ করতে হবে। তবে আমি কিন্তু আপনাদের ছোটপর্দার নায়ক ঋষি কৌশিকের সঙ্গে অভিনয় করেছি। আমাদের দেশে এসে কাজ করে গিয়েছেন।

প্রশ্ন: এই যে দুই বাংলার শিল্পীরা অন্য দেশে কাজ করতে যান, কোথাও কি চোরা ভয় কাজ করে? এই রে, আমার বাজারটা বোধহয় নিয়ে নিল...

তাসনিয়া: বিশ্বাস করুন, আমার অন্তত হয়নি। কেউ কখনও কারও জায়গা দখল করতে পারে না। যদি দখল করতেই পারত, তা হলে ও পার বাংলা থেকে আমায় অভিনয়ের ডাক পেয়ে এ পার বাংলায় আসতে হত না। এ পার বাংলার কেউ সেই কাজটা করে দিতেন। আমায় এত ঝক্কি পুইয়ে ডাকা হত না। তাই আমি কারও বা কেউ আমার ‘রিপ্লেসমেন্ট’ হতে পারব না। আমি এ ভাবে ভাবিই না। আপনাদের ইধিকা পাল আমাদের দেশে কাজ করছেন। যথেষ্ট ভাল কাজ করছেন। আবার আমাদের চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান বা মোশারফ করিম আপনাদের ছবিতে অভিনয় করছেন। এই আদানপ্রদানটাই তো দরকার। এতে দুই দেশের মঙ্গল। আমাদেরও কাজের সুযোগ বাড়বে।

প্রশ্ন: কাজের সংখ্যা বাড়লে ছবিমুক্তির সংখ্যাও বাড়ে। একটা উৎসবে একাধিক ছবি। তাই নিয়ে টানাপড়েন। কাম্য?

তাসনিয়া: পুরো বিষয়টাকে খুব ইতিবাচক হিসাবে দেখি। একটা প্রতিযোগিতা থাকা দরকার। তাতে বিনোদন দুনিয়া নিয়ে, আমাদের কাজ নিয়ে আলোচনা হবে।

প্রশ্ন: যত ক্ষণ সেটা সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকে।

তাসনিয়া: অবশ্যই সুস্থ প্রতিযোগিতা। আমি কোনও অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখিনি। গত ইদে যেমন, আমার জয়া আপা, শাকিব খান ভাইয়ের ছবি মুক্তি পেল। আমরা প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছি। সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই সবার ছবি দেখেছি। পরস্পরের প্রশংসা করছি। এটাই হওয়া উচিত ইন্ডাস্ট্রিতে। উৎসবের আনন্দ তাতে আরও বাড়ে।

রবিবাসরীয় সকালে ঘরোয়া মেজাজে তাসনিয়া ফারিণ।

রবিবাসরীয় সকালে ঘরোয়া মেজাজে তাসনিয়া ফারিণ। নিজস্ব চিত্র।

প্রশ্ন: আগে নায়িকা মানেই পরমাসুন্দরী। এখন নায়িকার সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা। নায়িকানির্ভর ছবির সংখ্যাও বাড়ছে। নারীর এই অবস্থান আশাব্যঞ্জক?

তাসনিয়া: ২০২৫-এ যতটা বদলানোর দরকার ছিল সেই অনুযায়ী সত্যিই কি নারীর অবস্থান বদলেছে? আমি তো দেখতে পাই না। পরিবর্তনটা আরও বেশি হওয়া দরকার ছিল। আমি আমার কথাই বলি। আমার লড়াই বা যাত্রাপথ খুব কঠিন ছিল। আমাদের এক টাকা পারিশ্রমিক বাড়াতে অনেকটা পথ পেরোতে হয়। সেখানে একটা নতুন নায়ক দুটো ছবি করেই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ফেলেন। তাঁর সেই দাবি গ্রাহ্যও হয়। তার উপরে কাজের সময়ের বিষয়টিও আছে। তা হলে আমরা কোথায় এগোলাম? রইল বাকি নারীকেন্দ্রিক ছবি। সেখানেও নায়িকা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ, ক্লিশে। হয় নারী নির্যাতন, নয় নারীর অধিকার। নারীর কাজ, তার লড়াই নিয়ে ছবিতে উদ্‌যাপন হয় কই? তার বাইরে আমাদের কেউ বার করতেই চান না! অথচ, সেই ছবি ভাল ব্যবসা না করলে, তখন দোষ দেওয়া হয়, নারীকেন্দ্রিক ছবি বলেই চলল না! তুমি নারীকেন্দ্রিক ছবিকে সেই বাজেট দিচ্ছ না। হিট হওয়ার মতো গল্প দিচ্ছ না। পুরুষের ক্ষেত্রে কিন্তু এসবের বিন্দুমাত্র খামতি নেই। এ দিকে, আশা করা হবে খ্যাতিনামী নায়কের সমান একজন নায়িকা ব্যবসা দেবে! এই দিকটা বিবেচনা করা উচিত। কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ যেমন। অনেক দিন পরে মন ভাল করা ছবি। এক মহিলা পরিচালক এই ধরনের ছবি বানানোর সাহস করছেন। ওঁকে, কোয়েলদিকে কুর্নিশ। এই ধরনের ছবি আরও বানানো উচিত।

প্রশ্ন: আপনি যখন এ দেশে কাজ করবেন, তখন নারীকেন্দ্রিক ছবিতে কাজ করবেন? না, নামী নায়কের বিপরীতে মশালা ছবিতে?

তাসনিয়া: সব ধরনের ছবিতে কাজ করব। সব ধারার ছবিতে। একজন অভিনেতার সব স্বাদের ছবি করা উচিত। মশালা ছবি বাণিজ্যর স্বার্থে। অন্য ধারার ছবি নিজের উৎকর্ষতার জন্য।

প্রশ্ন: সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করবেন?

তাসনিয়া: কোন দৃশ্য সাহসী? তার মাপকাঠি কী? আমার জানা নেই। তাই উত্তরও অজানা (হাসি)।

প্রশ্ন: নারীর উন্নতি দেখতে চান। অথচ, মাত্র ২৫ বছরে বিয়ে সেরে ফেললেন!

তাসনিয়া: তার মানে আমি ব্যতিক্রমী। আপনারা হয়তো আগামী দিনে আমার উদাহরণ দেবেন। বলবেন, অল্প বয়সে বিয়ে করেও অভিনয় করে গিয়েছে (হা হা হাসি)। বিয়ের সঙ্গে অভিনয়ের সত্যিই বিরোধ নেই। একজন নায়িকা কত বছর বয়সে বিয়ে করবেন, সেটাই বা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে কেন? আমার সঠিক সময় কোনটা, সেটা আমি ঠিক করব। আমি তো দেখছি, বিয়ের পর আমার কাজ বেড়েছে! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, বিশ্ব এই ট্যাবু ভাঙতে পেরেছে। হলিউড থেকে আমাদের দেশ— নায়িকার বিয়ে নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামান না! হয়তো আগে বিয়ের পর নায়িকারা সময় বার করতে পারতেন না। তাই বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল।

নবদম্পতি শেখ রিজ়ওয়ান রফিদ আহমেদ এবং তাসনিয়া ফারিণ।

নবদম্পতি শেখ রিজ়ওয়ান রফিদ আহমেদ এবং তাসনিয়া ফারিণ। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনিই তো বিয়ের পর বলেছিলেন, স্বামী-সংসারের জন্য অভিনয় ছাড়তে রাজি!

তাসনিয়া: (উত্তেজিত কণ্ঠে) না, না, আমি সেটা ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। স্বামীর গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছিলাম, ওর আগে কিছুই না। তার মানে কাজ ছেড়ে দেব? আমার স্বামী কোনও দিন যেখানে কাজ ছাড়ার কথা বলেননি।

প্রশ্ন: কোনও বিতর্কে নেই, কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করেন না-- তার পরেও তাহসান রহমান খানের সঙ্গে আপনার নাম জড়িয়েছিল!

তাসনিয়া: পুরোটাই ভুলভাল। আমি অনেক দিন প্রেমের কথা প্রকাশ্যে আনিনি। এ দিকে আমার আর আমার প্রেমিকের (তিনিই স্বামী) হাতের ছবি দিচ্ছি। লোকে কিছু না জেনে হঠাৎ করে তাহসানের নাম জড়িয়ে দিল। তার পরেই প্রেমিককে প্রকাশ্যে আনি। সবার ভুল ভাঙে।

প্রশ্ন: কাজের দুনিয়ায় নিজের দেশের কোনও নায়িকাকে ভয় পান বা ঈর্ষা করেন? যিনি যখন-তখন আপনার জায়গা কেড়ে নিতে পারেন?

তাসনিয়া: কেউ নেই। আমি ঈর্ষায় ভুগি না। তা হলে মনের শান্তি নষ্ট। তাতে কাজ খারাপ হবে। নিজের কাজ মন দিয়ে করি। তার বাইরে আর কিচ্ছু নিয়ে ভাবি না।

প্রশ্ন: একটু আগেই দুই দেশের সংস্কৃতির আদানপ্রদান নিয়ে বলছিলেন। ধরুন, যদি কাঁটাতারের বেড়া না থাকত, ভিসা সমস্যা না থাকত, দুই দেশ যদি আবার আগের মতো একটাই দেশ হত?

তাসনিয়া: (একটু থমকে) দেখুন, এটা খুব হাইপোথেটিক্যাল ভাবনা। কোনও দিন যা হওয়ার নয়। এরকম চিন্তা করতেও চাই না। আমি আমার দেশ নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। গর্ব করার কারণও আছে। আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধ আমায় গর্বিত করে। অনেক কষ্টে স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ তাই আমাদের রক্তে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য। দেখুন, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আলাদা দুটো দেশ মানেই আমরা আলাদা নই। আমাদের দেশ আমাদের মেলামেশার সুযোগ দিয়েছে বলেই আমি আপনার দেশে বসে আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারছি। সেই জায়গা থেকেই বলছি, আলাদা দেশে বাস করেও সুস্থ চিন্তা, দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে স্বাভাবিক আদানপ্রদান সম্ভব। তাতে দুই দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরও জোরালো হবে।এর জন্য দুই দেশকে এক হতে হবে না।

Tasnia Farin Aniruddha Roy Chowdhury Chanchal Chowdhury Dev
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy