Advertisement
E-Paper

এখন পরিচিতি সাত দিনে তৈরি হয়

তো কখনও আইনজীবী হয়ে লড়ছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। বড় থেকে ছোট পরদা— অভিনয়ের দীর্ঘ সফরে কুশল চক্রবর্তী।

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ১০:১০
কুশল চক্রবর্তী। ছবি: শান্তনু দে

কুশল চক্রবর্তী। ছবি: শান্তনু দে

ছোট পরদার চেনা মুখ তিনি। কখনও বাবা হয়ে নীতিশিক্ষার পাঠ দিচ্ছেন, তো কখনও আইনজীবী হয়ে লড়ছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। বড় থেকে ছোট পরদা— অভিনয়ের দীর্ঘ সফরে কুশল চক্রবর্তী।

প্র: ‘সোনার কেল্লা’-য় মুকুল না হলে অভিনেতা হতেন?

উ: অভিনয়ে আসার পিছনে ছোটবেলার কোনও সম্পর্ক নেই। আর বড় হয়ে অভিনেতা হব,সেটাও ভাবিনি।

প্র: যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র থেকে তা হলে অভিনেতা হওয়ার গল্পটা ঠিক কী রকম?

উ: চাকরির সূত্রে আমাকে রাজ্যের বাইরে যেতে হয়েছিল। সেখানে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারলাম না। চাকরি ছেড়ে অন্য পেশা খুঁজতে খুঁজতেই অভিনয়ে আসা।

প্র: নব্বইয়ের দশকে অনেকগুলো ছবিতে বড় চরিত্রে আপনাকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তার পর আপনি প্রায় বেপাত্তা!

উ: ’৯৭ সাল থেকে নিজে প্রযোজনা-পরিচালনা শুরু করি। ধারাবাহিক ছাড়াও ৯০টা টেলিফিল্ম পরিচালনা করেছি। ক্যামেরার পিছনে এমন ভাবে জড়িয়ে গিয়েছিলাম যে, ছবিতে অভিনয়ের জন্য সময় বের করতে পারিনি।

প্র: অভিনয় ছেড়ে নির্দেশনা কেন?

উ: প্রথম কারণটা অবশ্যই রোজগার। যখন সিরিয়ালে অভিনয় করতে এসেছিলাম, তখন ক্ষেত্রটা এত বড় ছিল না। মনে হয়েছিল, শুধু ধারাবাহিক করে যদি সার্ভাইভ না করতে পারি! তাই অল্টারনেটিভ প্রফেশন খুঁজছিলাম। সেটা করতে গিয়েই স্ক্রিপ্ট, ভিস্যুয়াল, লোকেশন থেকে শুরু করে শেষ অবধি পরদায় নিয়ে যাওয়ার যে বিশাল কর্মকাণ্ড, তার প্রেমে পড়ে গেলাম।

প্র: টেলিভিশন কতটা বদলেছে?

উ: আগে শুধুই দূরদর্শন ছিল। মেগা সিরিয়ালও ছিল না। হয়তো সপ্তাহে এক দিন। তখন কত প্রতিদ্বন্দ্বী! শঙ্কর চক্রবর্তী, কুনাল ঘোষ, ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, শিলাদিত্য পত্রনবীশ, খরাজ মুখোপাধ্যায়দের মতো অভিনেতাদের পাশে সার্ভাইভ করা কঠিন ছিল। আর এখন এত চ্যানেলে প্রচুর কাজ। ইনস্ট্যান্ট পপুলারিটি। কিন্তু স্থায়িত্ব কম।

প্র: মানে বলতে চাইছেন, এখন লোকে সিরিয়াল মনে রাখে না?

উ: আগে শঙ্কর চক্রবর্তীর নাম সকলে জানত। সে ও যে চরিত্রই করুক। এখন লোকে চেনে বাহা, ওম-তোড়াকে। এখন সাত দিনে পরিচিতি তৈরি হয়। কিন্তু ভয় হয় দু’বছর বাদে কী হবে সেটা ভেবে।

প্র: অনেক সিরিয়ালেই কাজ করছেন। অভিনয়ের খিদে মেটে?

উ: টিভির প্লাস পয়েন্ট হল একই সঙ্গে অনেক ধরনের চরিত্র করা যায়। আমি যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই, ভুলে যাই কী করছি— সিনেমা, সিরিয়াল না যাত্রা! টিভি প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড হিসেবে দারুণ।

প্র: ধারাবাহিকে কখনও নিজেকে সীমাবদ্ধ মনে হয়েছে?

উ: আগে টেলিসিরিজ, এক মাসের গল্প, অলৌকিক গল্প— কত রকমের কাজ হতো। এখন ডেলি সোপের জোয়ারে আলাদা কিছু করার ভীষণ তাগিদ বোধ করি।

প্র: মেগা টিআরপি-নির্ভর। খাপ খাওয়াতে পারেন?

উ: এটা শো বিজনেস। বিজনেস কথাটা শেষে এলেও, সেটাই প্রাইমারি। আমি সিরিয়ালকে ‘ফর আর্ট সেক’ বলে বিশ্বাস করি না। দর্শককে খুশি করা আমার কাজ। নিজের ছবিতে স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু সিরিয়ালে রেভিনিউয়ের দিকটা খেয়াল রাখা জরুরি।

প্র: ১৫ বছরের পরিচালনায় ইতি টানলেন কেন?

উ: ছবি বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। চিত্রনাট্যের কাজ চলছে। তপন সিংহ, তরুণ মজুমদারদের ঘরানার মতো এমন ছবি, যা দেখলে দর্শক হাসবে, কাঁদবে। রিলেট করবে।

প্র: কাউকে ডিরেক্ট করতে চান?

উ: (হেসে) অবশ্যই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

প্র: তা হলে কী এ বার মুকুল নির্দেশনা দেবে ফেলুদাকে?

উ: এখনও অবধি ছবির গল্প অনুযায়ী সে রকম কিছু ভাবিনি। তবে চেষ্টা করব অন্তত গেস্ট রোলে ওঁকে রাখতে।

প্র: বড় হয়ে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করা হল না। আক্ষেপ হয়?

উ: আফসোস আছে। মুকুল হয়ে ছ’বছরে অনায়াসে কাজ করেছি। কোনও ভয়-ভীতি-আড়ষ্টতা ছিল না। তবে মাঝেমাঝে মনে হয়, বড় হওয়ার পর ওঁর সঙ্গে কাজ করতে হয়তো ভয় পেয়ে যেতাম!

Kushal Chakraborty Tollywood Celebrity Tollywood Actor Celebrity Interview কুশল চক্রবর্তী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy