Advertisement
E-Paper

‘কে বলেছে পার্নো আমার বিশেষ বান্ধবী?’

বিয়ে নয়, প্রেম নয়। ‘ঘুণপোকা’র বাস্তব জগৎকে সেলুলয়েডে ধরার স্বপ্নে মজে আছেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিক। তাঁর নতুন ছবি ‘জেনারেশন আমি’ প্রসঙ্গে সে কথাই বললেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।বিয়ে নয়, প্রেম নয়। ‘ঘুণপোকা’র বাস্তব জগৎকে সেলুলয়েডে ধরার স্বপ্নে মজে আছেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিক। তাঁর নতুন ছবি ‘জেনারেশন আমি’ প্রসঙ্গে সে কথাই বললেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৪৬
মৈনাক ভৌমিক এবং পার্নো মিত্র।

মৈনাক ভৌমিক এবং পার্নো মিত্র।

মৈনাক ভৌমিক মানেই শহুরে বাস্তবের সাজানো ড্রয়িংরুমে সম্পর্কের গল্প। একটু বদলাতে ইচ্ছে করে না?
চারপাশের এই জীবনে কত বৈচিত্র ভাবুন তো! যদি মনে হয় মৈনাক ভৌমিক রিয়েলিটি নিয়ে ছবি করছে। গল্প বলতে চাইছে সেটা বলুক না। প্রচুর বিষয় আছে যা নিয়ে বলাই হয়নি। অনেক বাকি। যা ঘটছে তা নিয়েই মানুষ ছবি দেখতে চায়। সেই কারণেই ‘বাধাই হো’-র মতো ছবি এত জনপ্রিয় হয়েছে। আর শুনুন, আজ মৈনাক ভৌমিক হঠাৎ ‘গোরা’ বা ‘চার অধ্যায়’ করলে লোকে মেনে নেবে? দর্শকের কথাও তো আমায় ভাবতে হবে।

রাস্তা বদলের ইচ্ছে তাহলে একেবারেই নেই? একটু রিস্ক নেওয়া যায় না?
‘জেনারেশন আমি’ রাস্তা বদলের প্রথম ধাপ।

কোথায়? ‘জেনারেশন আমি’ এই নামের মধ্যেও তো মৈনাক ভৌমিকের সিগনেচার...
এক জন পরিচালকের থাকুক না সিগনেচার। ক্ষতি কী? তবে ‘জেনারেশন আমি’ শুধু আজকের প্রজন্মের কথা বলে না। এই ছবির মধ্যে একটা চিরকালীন ভাবনা আছে। মানে আমি বলতে চাইছি, কুড়ি বছর আগেও ষোলো বছরের ছেলেকে তার বাবা যে ভাবে বকাঝকা করত, আজও সে ভাবেই করে।

আরও পড়ুন: জলসায় অভব্যতার শিকার মেখলা, তিন দিনেও শুরু হল না তদন্ত

যেমন?
এখনও বাবারা ছেলে অবাধ্য হলে বলে, ‘বাড়ি থেকে বার করে দেব’। এই ছবিতে মায়ের মতোই এক দিদির গল্পও আছে।


জেনারেশন আমি-র ট্রেলার

আপনি বলতে চাইছেন কিছুই বদল হয়নি?
নাহ্, হয়নি। হ্যাঁ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এসেছে। চোখের সামনে অনেক কিছু বদলেছে। কিন্তু ষোলো বছর বয়সে পৌঁছনোর পর ছেলে ভাবছে, আমি এখন বড় হয়ে গেলাম। আর বাবা-মা ভাবছে, ছেলে এখনও ছোট। এই দ্বন্দ্ব নিয়ে ‘জেনারেশন আমি’।

আরও পড়ুন: মা হলেন সুদীপা

আপনি ফেসবুকে নেই কেন?
আমি আজও হিউম্যান কানেকশনে বিশ্বাসী। টেকনোলজি আমাদের আড্ডা মারতে ভুলিয়ে দিচ্ছে। আমরা স্মাইলি নির্ভর জীব হয়ে উঠছি। এটা ভয়ঙ্কর।

অন্য প্রসঙ্গে আসি। এই ছবিতে শান্তিলাল আর ঋতব্রত বাবা আর ছেলের চরিত্রে...
ঋতব্রতর মধ্যে একটা ইনোসেন্ট লুক আছে। আর ওর বাবা বকলে ভয় পাওয়া লুকটাও পারফেক্ট। তাই ওকে ভেবেছিলাম। আর ওর বাবা এমন শক্তিশালী অভিনেতা। তাই রিয়েল লাইফের বাবা-ছেলে নিয়েই কাজ করলাম। তবে এ ছবিতে সাঙ্ঘাতিক কাস্টিং কিন্তু নেই। সৌরসেনী আছে একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে।

তা সত্ত্বেও এসভিএফ-এর মতো বড় ব্যানার থেকে এই ছবি মুক্তি পাচ্ছে?
এসভিএফ-এর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। আমি দেখলাম ওরা ভাল চিত্রনাট্যের জন্য যে কোনও ধরনের রিস্ক নিতে পারে। এই ছবিটার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে আমি অনেক প্রযোজককে অ্যাপ্রোচ করেছি। নতুন কাস্ট বলে কেউ রাজি হননি। আর আমারও জেদ ছিল ছবিটা করলে নতুনদের নিয়েই কাজ করব। অবশেষে এসভিএফ-এর জন্য ছবিটা হল। ওরা ভাল চিত্রনাট্যকে গুরুত্ব দেয়।

অরিন্দমের গানের ভাবনাও তো অন্য রকম এ ছবিতে?
গানকে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন মেজাজে।

বড় ব্যানারের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মনে হয় না অনেক স্টার নিয়ে একটা ছবি করি?
নাহ্। আমি শুরু থেকেই ছোট বাজেটে ছবি করে আসছি। একটা সময় তো জানতাম না ছবি করে আদৌ কত টাকা পেতে পারি! যাই হোক, ও ভাবেই শুরু। তাই ‘মহাভারত’ করার ইচ্ছে নেই আমার।

কিন্তু অন্য রকম ইচ্ছে তো থাকবে?
আমার ‘ঘুণপোকা’ করার খুব ইচ্ছে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘ঘুণপোকা’ পড়েই আমি ছবি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। একটা সময় মনে হত, এখন ‘ঘুণপোকা’র সময় নয়। আজ মনে হয়, ওই যে একটা মানুষ হঠাৎ তার স্পেস থেকে বেরিয়ে চলে যাচ্ছে...এই যে মুড সুইং, এগুলো সব এই সময়ের কথা। আমি ছবিটা করার জন্য শেষ অবধি লড়ে যাব। ছবি করার সময় কোনও দিন হিট বা ফ্লপ মাথায় রেখে তৈরি করিনি। ছবি হিট বা ফ্লপ— এই ধারা আমি মানি না।


অন্যান্য আঞ্চলিক ছবির তুলনায় বাংলা ছবি পিছিয়ে আছে। এটা মানেন?
না, একেবারেই মানি না। আমি ছোটবেলা থেকেই বলতাম উডি অ্যালেন আর ঋতুপর্ণ ঘোষের মিল আছে। তখন ঋতুপর্ণ সদ্য কাজ করছেন। লোকে মানত না। আজ চলে যাওয়ার পর সকলে মানে। বাংলা যথেষ্ট না এগোলে সুমন-অঞ্জন-নচিকেতা হত না। বাংলাতেই তো ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর মতো থ্রিলার হয়েছে। নিজের ছবি বলে বলছি না। কোন সময় আমি ‘আমার গার্লফ্রেন্ড’ করেছিলাম? বাঙালিদের স্বভাবই হল নিজেদের খাটো করে দেখা। আমি মনে করি না কোনও দিক থেকে বাংলা ছবি পিছিয়ে আছে। বরং উল্টোটাই মনে হয়।

আপনার নিজের জীবন কত দূর এগোল? বিয়ে? প্রেম?
আপাতত কাজ।

এটা সবাই বলে আসল কথা এড়িয়ে যায়।
নাহ, এখন কাজ আর ব্যক্তিজীবন ব্যালেন্স করা শক্ত। আমি সত্যি বলছি, এক কাপ কফি নিয়ে একা একটা ক্যাফেতে বসতে আমি অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি। আমার ভাবনার ওই সময়টুকু খুব মূল্যবান। প্রেম সম্পূর্ণ অন্য জগতের বিষয়। কাজ করতে করতে ওখানে প্রবেশ করা মুশকিল।

বেশ। তা হলে আপনার আর পার্নোর বিয়ে হচ্ছে না?
পার্নো কী করে চলে এল এখানে!

পার্নো তো আপনার বিশেষ বান্ধবী?
নাহ্। কে বলেছে পার্নো আমার বিশেষ বান্ধবী? যত্তসব প্রয়োজনে বানানো কথা।

Parno Mitra Mainak Bhaumik Cenebrity Tollywood Generation Aami
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy