Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Singer

রবীন্দ্রনাথের গান ভয় পেয়ে গাইছি এটা নিশ্চয় তিনি চাইতেন না: লগ্নজিতা

সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথ নিয়ে নানা কথা বলে মানুষের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। লগ্নজিতা চক্রবর্তী। মুম্বইয়ে নতুন কাজ থেকে কলকাতার গানের জগৎ নিয়ে অকপট তিনি।মুম্বইকে প্রায়োরিটি দিচ্ছি না। চেষ্টা করছি মুম্বইতে কাজ পাওয়ার। এখন আঠাশ। সাড়ে ছাব্বিশে মুম্বই গেছি। এখনও ক্লান্তি আসেনি।

লগ্নজিতা চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।

লগ্নজিতা চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

এখন কলকাতা না মুম্বই?

এই মুহূর্তে কলকাতায়। ‘সোয়েটার’-এর প্রিমিয়ার ছিল। গানের জন্য অ্যাওয়ার্ড পেলাম তিনটে। সব মিলিয়ে কলকাতায়।

‘সোয়েটার’-এর গান জনপ্রিয় হওয়ার পর লগ্নজিতাকে বেশি করে দেখা যাচ্ছে। তার আগে দেখা যায়নি কেন?

আমি মুম্বইতে থাকি। কলকাতায় আমায় সবাই চেনে। লোকে আমার আসার জন্য অপেক্ষা করে। যেমন সৌকর্য ঘোষালের পরের ছবি ‘রক্ত রহস্য’-তে গাইলাম। প্রায় দেড় মাস ধরে কথা হয়েছে। এ বার কলকাতায় এলাম। কিছুটা সময় থাকলাম। তখন আশপাশে কাজ থাকলে সেটা করলাম। তাই এই সময় বেশি দেখা গেল। আবার মুম্বই চলে গেলে কম দেখা যাবে।

মুম্বই তা হলে আপনার প্রায়োরিটি?

নাহ্, মুম্বইকে প্রায়োরিটি দিচ্ছি না। চেষ্টা করছি মুম্বইতে কাজ পাওয়ার। এখন আঠাশ। সাড়ে ছাব্বিশে মুম্বই গেছি। এখনও ক্লান্তি আসেনি।

মুম্বইতে তা হলে কী এসেছে?

এ বছর মুম্বইয়ের কাজে দুটো নেটফ্লিক্স অরিজিনালে আমার গান থাকবে। আর একটা বড় প্রোডাকশন হাউজে কাজের জন্য চেষ্টা চলছে। দেখা যাক।

মুম্বইতে তো একা থাকেন?

হ্যাঁ। সাত্যকি থাকে না। কলকাতায় আমার জন্য প্রোডাকশন হাউজ থেকে এসি গাড়ি আসে। লোকে চেনে। আর মুম্বইতে জীবন সম্পূর্ণ আলাদা। ওখানে আমি ঘর ঝাঁট দিই, রান্না করি। কাজ করি বা কাজ খুঁজি। কলকাতায় গান গাওয়ার টাকায় এখনও আমি মুম্বইতে সাসটেন করছি।

সোশ্যাল মিডিয়ার ওই লাইক আর ভিউয়ের নিরিখে গানের মান নির্ণয়ে আমি আর বিশ্বাসী নই বললেন লগ্নজিতা।

তবুও কলকাতা ছেড়ে মুম্বই?

আমি ন্যাশনালি কাজ করতে চাই। মুম্বইতে হিসেব বুঝতে সময় লাগছে। ওখানে পিআর খুব কাজে লাগে। যেটা আমার কম।

লগ্নজিতার গান বাংলা ছবিতে হিট হলেও মাচা বা ওই ধরনের অনুষ্ঠানে আপনাকে দেখা যায় না কেন?

একটা কথা বলি। আমার প্রত্যেক বছরেই একটা গান হিট করে।

যেমন? একটু বলুন...

আগের বছর ‘হৃদয়ে রং’, তার আগে ‘বিবাহ ডায়েরিজ’-এর গান, ‘এ ভাবেই গল্প হয়’। তার আগে ‘বসন্ত এসে গেছে’। এ বছর ‘প্রেমে পড়া বারণ’। কিন্তু যাঁরা এই মাচার আয়োজক তাঁরা জানেন আমার মধ্যে একটা হালকা অ্যারোগ্যান্স স্নব ব্যাপার আছে। কিন্ত এটা আমার স্বভাব।

ইমন চক্রবর্তী যে রকম অনুষ্ঠান পান, সিনেমার গান হিট করলেও আপনি কেন সেটা পান না?

দেখুন লগ্নজিতা যেমন গান করে, যেমন দেখতে, চুলটা যেমন, তার সঙ্গে সব মিলিয়ে মিশিয়ে...ইট ডাসন্ট গো উইথ যে কোনও ধারার দর্শকের।

একটু নরম হলেও তো পারেন...

এটা আমার স্বভাব। আমি কাউকে আঘাত করার জন্য কিছু করি না। আমার ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি যে নাচের গান গাইতে বলছে বা আটকে রেখেছে। আমাকে ওই ধরনের শো-র মধ্যে কখনও ফেলাই হয়নি। আমার ভাল হয়, আমায় ফিল্টার করতেই হয় না। দশটার মধ্যে সাতটা শো আসেই না। আর আমার শো করে নিরন্তর টাকার প্রয়োজন নেই। আমি চাইলে একটা গাড়ি তো কিনতে পারতাম। কিন্তু উবার, ওলা বা স্কুটিতেই যাতায়াত করি। আনন্দবাজারকে আজ থেকে চার বছর আগে প্রথম যে সাক্ষাৎকার দিই, সে দিনও আপনি দেখেছেন আমি স্কুটি চড়ি। আজও তাই।

এই সিম্পল লিভিং কি পাঠভবনের শিক্ষা?

হয়তো...

তাও আপনাকে নিয়ে কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে অসম্ভব বিতর্ক কেন?

দেখুন আমি ফেসফুক বা টুইটারে নেই। সোশ্যাল মিডিয়ার ওই লাইক আর ভিউয়ের নিরিখে গানের মান নির্ণয়ে আমি আর বিশ্বাসী নই। এ বছরের রিয়্যালাইজেশন। গানের ক্ষেত্রে গুণগত মান গুরুত্বপূর্ণ। পরিমাণগত নয়। কী হয়েছে বলুন তো?

আপনি শোনেননি?

নাহ!

সে কী! একটি চ্যানেলে রবীন্দ্রনাথের গানে আপনার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তো সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল। লোকে বলছে আপনি উদ্ধত!

দেখলেন, সেই অ্যারোগ্যান্ট ভাবা হচ্ছে আমায়। আমি কিন্তু একটাও বাজে কথা বলিনি। আমি পাঠভবনে পড়েছি। সেখানে শিখেছি আমরা শিক্ষকদের ভয় পাব না। আমার মনে হয় রবীন্দ্রনাথের এই ধারণা ছিল। আমরা রবীন্দ্রনাথের গান খুব ভয় পেয়ে গাইছি। এটা নিশ্চয়ই তিনি চাইতেন না। আমি এই যে চ্যানেলে তিনটে কথা বললাম সেটা নিয়ে আমায় এত কিছু যদি শুনতে হয় তা হলে এটা তো ভয়ের পরিস্থিতি! আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতো কোথাও কিছু বলা যাবে না।

রবীন্দ্রনাথের গান আপনি কী ভাবে গাইবেন?

আমায় চ্যানেল বিপক্ষে বসতে বলেছে। বসেছি। একটা শোয়ের জন্য এটা করা। আমার খোল-করতাল নিয়েও রবীন্দ্রসঙ্গীত ভাল লাগে, জ্যাজের সঙ্গেও ভাল লাগে। যাঁরা আমায় চেনেন জানেন আমি উদ্ধত নই। স্ক্রিপ্টের মতো কথা বলতে ভাল লাগে না আমার।


আর প্রেম করতে ভাল লাগে?

আমি আর সাত্যকি ছোটবেলার বন্ধু। প্রেমে পড়ার মতো কিছু হলে দু’জনেই সেটা দু’জনকে বলতে পারি। ব্যস, ওইটুকুই। তার পর একটা গণ্ডি আছে। যেটা আমরা কেউ পেরোই না।

অনেকে বলে সত্রাজিৎ না থাকলে লগ্নজিতা হত না?

বাপ্পাদার (সত্রাজিৎ) সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব স্ট্রং। কিন্ত যে কাজের জন্য লোকে চেনে সেই একটা কাজও বাপ্পাদার সঙ্গে দূরদূরান্তে সম্পর্কযুক্ত নয়। বাপ্পাদা গাইড করে আজও। কিন্তু হাতে ধরে কাজ পাইয়েছে এমন নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE