Advertisement
E-Paper

‘অনেক সময়ে বাবার শুটিং আটকে দিয়েছি’

তিনি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে। ফলে প্রতিভার স্ফুরণ যে তাঁর মধ্যে দেখা যাবেই, সন্দেহ ছিল না। উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখি আনন্দ প্লাসতিনি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে। ফলে প্রতিভার স্ফুরণ যে তাঁর মধ্যে দেখা যাবেই, সন্দেহ ছিল না। উজান গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখি আনন্দ প্লাস

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
উজান গঙ্গোপাধ্যায়।

উজান গঙ্গোপাধ্যায়।

প্র: অভিনয়ে আসাটা কি বরাবরই পরিকল্পনায় ছিল?

উ: পরিকল্পনায় ছিলই। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে অনেক টেলিফিল্মে কাজ করেছিলাম। তখন আমি লায়ন কিংয়ের বিরাট ভক্ত। নিজেকে সিংহের ছানা ভাবতাম। বাবাও তাতে মদত দিত! আমাকে বোঝাত, আমার একটা লেজ আছে। বড় হলে কেশরও গজাবে! এগুলোকে মোটিভেশনের মতো ব্যবহার করত বাবা। অনেক সময়ে বাবার শুটিংও আটকে দিয়েছি! ক্লাস ওয়ানে প়ড়ার সময়ে ‘উল্কা’ বলে একটা টেলিফিল্মের শুটিং করতে দার্জিলিং গিয়েছিলাম। সেখানে আমার মায়ের রোল করেছিলেন অপরাজিতা আঢ্য। ‘রসগোল্লা’তেও ওঁর সঙ্গে কাজ করলাম। দার্জিলিঙে ওঁর জোরে হা-হা হাসি শুনে খুব বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম। এত কান্নাকাটি শুরু করেছিলাম যে, শুটিং আটকে যায়! এ রকম অনেক কাণ্ড আছে আমার।

প্র: স্কুলে থাকতে থাকতেই থিয়েটার করার শুরু?

উ: ফাইভ-সিক্সে যখন পড়তাম, ইন্দ্রাশিস লাহিড়ীর কাছে আমার হাতেখ়ড়ি হয়। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই স্কুলের নাটকগুলোয় অভিনয় করতাম। পাশাপাশি বাবার ছবির কাজও করেছি। কিন্তু অদ্ভুত অদ্ভুত কাণ্ড ঘটাতাম বলে বাবার বোধহয় একটা ধারণা হয়েছিল, আমার দ্বারা হবে না (হাসি)! আমারও একটা সময়ে মনে হয়েছিল, ক্যামেরার সামনে অভিনয়টা হয়তো আমার জন্য নয়। তবে অভিনয়টা করতে যে ভালবাসি, সেটা ছোটবেলা থেকেই বুঝে গিয়েছিলাম। আর যেটা ঘটার ছিল অনিবার্য ভাবে সেটা ঘটেও গেল! ২০১৩ সালে স্কুলেরই একটি নাটকে আমাকে দেখে শিবুমামা (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) মাকে বলেছিলেন, ‘ওর ডেবিউ ছবিটা কিন্তু আমিই করব’।

প্র: এই প্রজন্মের বাকিদের সঙ্গে আপনার প্রতিযোগিতাটা কেমন?

উ: কম্পিটিশন তো সব পেশাতেই আছে। এখন আমার প্রজন্মের যারা, তারা প্রত্যেকেই ব্রিলিয়ান্ট অভিনেতা। সকলের সঙ্গেই একটা অদ্ভুত সুন্দর বোঝাপড়া এবং বন্ধুত্ব রয়েছে আমার। ঋদ্ধি যে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, ঋতব্রত ওর জন্য প্রচণ্ড খুশি। ‘নগরকীর্তন’-এ ঋদ্ধির পারফরম্যান্স দেখে আমার মনে হয়েছিল ওই রকম সূক্ষ্ম এবং সাবলীল পারফরম্যান্স, আর কেউ করতে পারত না। তার পরে ধরুন আমি ওদের ছবি প্রোমোট করি, ওরা আমার ছবি প্রোমোট করে। এই বোঝাপড়াটা যদি আমাদের বন্ধুত্বে থেকে যায়, বড় হওয়ার জটিলতা বা নামযশে হয়তো কিছু এসে যাবে না।

প্র: বাবা-মায়ের পরিচালনায় কাজ করতে ইচ্ছে হয়?

উ: খুব! যে কোনও ছবি, সিরিয়াল, গান, নাটক নিয়ে যা কিছু আলোচনা বা চর্চা, আমরা একসঙ্গেই করি। বাবাকে আমিই ‘গেম অব থ্রোনস’ দেখিয়েছিলাম। কিংবা আমার যে গান শোনা বা গান তৈরি করা, এগুলো সব সময়ে মায়ের সঙ্গে শেয়ার করি। বাবা-মা আর আমার এই ব্যাপারটা একটা কালচারাল জ়োনের মতো। আমি জানি, ওদের দু’জনের ডিরেক্টোরিয়াল স্টাইল আলাদা। অভিনয়ের ধরন আলাদা। তার মধ্যে ছবি করার কথা হলেই একটা প্রশ্ন ওঠে, পড়াশোনার কী হবে! আমি যে ছাত্র হিসেবে ভাল, সেটা মা জানে। এবং ভবিষ্যতে অ্যাকাডেমিকসে থাকার ইচ্ছেও রয়েছে আমার। তাই একটা সেফ জ়োনে থেকে যখন বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজটা করা যাবে, তখনই করব।

প্র: পাভেল নাকি খুব বদমেজাজি পরিচালক?

উ: (জোরে হাসি) রসগোল্লার কড়াইটা দেখলে লোকে ভাবে কড়াইটাই বোধহয় বুদবুদ তুলছে, আগুনটা কেউ দেখতে পায় না। পাভেলদা হচ্ছে ওই কড়াইটা। এত বিশাল বাজেটের ছবি, তার সেট, বিরাট কাস্ট— এত কিছু ম্যানেজ করতে গিয়ে মাঝে মাঝে রেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক। পাভেলদা আসলে কাঁচালঙ্কা ফ্লেভারের রসগোল্লা! যে রসগোল্লার কথা শুনলে নবীনচন্দ্র দাস হয়তো আঁতকে উঠতেন।

প্র: ‘রসগোল্লা’ তো মিষ্টি প্রেমেরও গল্প। আপনার এ রকম মিষ্টি প্রেমের গল্প আছে?

উ: এখনকার ছেলেমেয়েরা সম্পর্কের ব্যাপারে বলে, নো স্ট্রিংস অ্যাটাচড। আমার সম্পর্ক শুধু আমার গিটারের সঙ্গে— অল স্ট্রিংস অ্যাটাচড।

Interview Ujaan Ganguly Exclusive উজান গঙ্গোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy