Advertisement
E-Paper

গত বছরেও হাসপাতালে শুয়ে মা গায়ে-পিঠে হাত বুলিয়েছে, এ বছর বুঝিয়ে দিল, বড় হয়েছি: কনীনিকা

“এ বছর খুব মনে হচ্ছিল, যদি টাইম মেশিনে চেপে পিছনে ফিরে যেতে পারতাম, মা-বাবা, বোন সবাইকে নিয়ে আগের মতো হই হই করতাম।”

কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ১৮:৪৮
এ বছরের জন্মদিন কেমন কাটল কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের?

এ বছরের জন্মদিন কেমন কাটল কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? ছবি: ফেসবুক।

একটা বছর জীবনটাকেই বদলে দিল! গত বছরেও জন্মদিনে মা ছিল। হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু ছিল তো। ঘুম ভেঙেই ছুটে গিয়েছিলাম। যার জন্য দুনিয়া দেখলাম তাকে আগে দেখব না! মা ঘুমোচ্ছিল। চোখ মেলেই দেখে আমি বসে। গায়ে-পিঠে হাত বুলিয়ে কী আদর! আমিও যেন গোল্লা পাকিয়ে ছোট্টটি। পারলে হাসপাতালের বিছানায় গুটিশুটি মেরে মায়ের কোলের কাছে শুয়ে পড়ি! আদর খাই। এ বছর সেই গায়ে হাত বোলানোর মানুষটাই নেই! মা চলে গিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল, একটা সময়ের পরে সন্তানকে সত্যি সত্যি বড় হতে হয়। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হয়। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকে নিতে হয়। মা-বাবার আশ্রয় ছেড়ে স্বাবলম্বী হতে হয়।

সেটাই যেন তিলে তিলে হচ্ছি। রোজ মায়ের গায়ের গন্ধ পাই। কেবল মানুষটাই নেই! নেই মানে কোথাও নেই। কপূর্রের মতো গায়েব। এ যে কী যন্ত্রণার, যার হয় সে বোঝে।

আজ সারাদিন ধরে চোখের সামনে ফ্ল্যাশব্যাক। অতীত ছায়াছবির মতো ছেলেবেলার গল্প দেখিয়েছে। তখন ছোট্টটি আমি। কোনও কালেই আমরা বড়লোক নই। কিন্তু সচ্ছল। আমার জন্মদিন মানে বাড়িতে ফুলের সমাহার। রজনীগন্ধা, বেল, জুঁই— সাধারণ ফুল দিয়ে বাড়ি সাজাত মা। নতুন জামা, পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে সাজানো ভাতের থালা। আগের দিন মায়ের হাত ধরে কেক কিনতে যাওয়া। এত ছোট, কাউন্টার দেখতে পেতাম না। পা উঁচু করে তবু দেখার চেষ্টা। রাতে বাবা-বোন-আমাকে নিয়ে মা রেস্তরাঁয়। তখন কেবল কর গুনতাম, একটা বছর বাড়ল মানে বড় হচ্ছি! এ বার খুব মনে হচ্ছিল, যদি টাইম মেশিনে চেপে পিছনে ফিরে যেতে পারতাম। মা-বাবা-বোন সবাইকে নিয়ে আগের মতো হইহই করতাম।

এ বছর মায়ের অভাব যাতে বুঝতে না পারি তার জন্য আমার কাছের-দূরের সমস্ত মানুষ সকাল থেকে তৎপর। যে চ্যানেলে রোজ শুটিং সারি সেই পরিবার, বাড়ির লোক, বন্ধুরা সারাক্ষণ আগলে রেখেছে। দুপুরে ভালমন্দ খাওয়াদাওয়া, উপহার— কেউ কিচ্ছু বাদ দেয়নি। এমনকি, আমার একরত্তি মেয়ে কিয়াও! নিজের হাতে দুটো কার্ড বানিয়ে দিয়েছে। নিজের খেলনা থেকে বেছে সব থেকে সুন্দর চাবির রিং আমায় দিয়ে দিয়েছে। পিছিয়ে নেই আমার বর সুরজিৎ হরিও। রাত ১২টায় কেক এনে কেটেছে। সঙ্গী মেয়ে আর ছেলে। সবাই মিলে আমায় ‘স্পেশাল’ বানিয়ে দিয়েছে! এই ঋণ কী করে শুধব?

রাতটা শুধুই পরিবারের জন্য। বাবার বাড়ি আর শ্বশুরবাড়ির সকলকে নিয়ে রেস্তরাঁয় যাব খেতে। বাবা-কাকা-বোন-মা, সুরজিৎ, ছেলে-মেয়ে...। ওই দেখুন, মাকে এখনও পরিবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারি না! এই ক্ষত এ জন্মে বোধহয় শুকোনোর নয়।

Koneenica Banerjee Birhday Special
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy