শহর মজেছে তাঁর কীর্তনাঙ্গের গানে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবিতে ভক্তিরসের প্লাবন তাঁরই সৌজন্যে। সেই সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে সুর ‘চুরি’র অভিযোগ!
গান শুনতে ইতিমধ্যেই বহু দর্শক একাধিক বার ছবিটি দেখছেন। ইন্দ্রদীপের হাত ধরে তাঁর ‘মানসপুত্র’ অরিজিৎ সিংহ প্রথম কীর্তন গেয়েছেন। ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে ‘জগন্নাথ স্বামী নয়ন পথগামী’ গানটি। কণ্ঠে জয়তী চক্রবর্তী, পদ্মপলাশ। এই গান নিয়েই সমস্যা। জনৈক তিতি রায়ের দাবি, তাঁর বোনের কণ্ঠে তিনি গানটি শুনেছেন। তাঁর বোন গানটি শিখেছেন শিল্পী সুনন্দা পট্টনায়েকের থেকে। তিনি তাঁর ছাত্রী। গানটি শিল্পী সুনন্দার। তাঁর অভিযোগ, ইন্দ্রদীপ সেই গানকে নিজের বলে দাবি করেছেন। নামোল্লেখ করার সৌজন্যটুকুও দেখাননি!
তিনি বিবৃতি আকারে লিখেছেন, “সৃজিতের নতুন ছবির সব গানের সুর আদৌ ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের করা নয়। আমার বোনের গলায় প্রথম শুনেছিলাম বহু বছর আগে। ও সুনন্দা পট্টনায়কের ছাত্রী ছিল। উনিই শিখিয়েছিলেন। সম্ভবত সুর ওঁর করা। তবে নিশ্চিতভাবে ইউটিউবে লেখা নেই। তবে নিশ্চিত অনেক দিনের গান। সুরকার সামান্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেননি।”
আরও পড়ুন:
বক্তব্য পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শ্রোতাদের একাংশ কাঠগড়ায় দাঁড় করায় ইন্দ্রদীপকে। আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল অভিযোগকারী তিতির সঙ্গে। ফোনে সাড়া দেননি তিনি। বার্তারও জবাব দেননি। তবে কথা বলেছেন ইন্দ্রদীপ। “৩৩ বছর হয়ে গেল গান দুনিয়ায়। এত বছর পরে অন্যের গান বা সুর ধার করতে হবে?”, আফসোস ঝরেছে সুরকারের কথায়।
পেশায় শিক্ষিকা তিতির অভিযোগ কতটা সঠিক? প্রশ্নের জবাবে ইন্দ্রদীপ বলেন, “শিল্পী সুনন্দা পট্টনায়েকের গাওয়া ‘জগন্নাথ স্বামী নয়ন পথগামী’ গানটি যতটা বহুশ্রুত, ততটা বহুশ্রুত অন্য কারও কণ্ঠে নয়। আমারও রেফারেন্স ওটাই ছিল।” কিন্তু একবারও কোথাও ইন্দ্রদীপ দাবি করেননি বা ভাবেনওনি, এটা তাঁর সুর। এটা হয়তো অভিযোগকারিণীর বুঝতে ভুল হয়েছে। এমনও হতে পারে, সুরকারের বোঝাতে ভুল হয়েছে। পুরো ঘটনাকেই তাই ‘ভুল বোঝাবুঝি’ আখ্যা দিয়েছেন ইন্দ্রদীপ। তিনি জানান, গানটি লিখেছিলেন আদিগুরু শঙ্করাচার্য। সুর প্রচলিত। “প্রকৃত সুরকার কে, সত্যিই আমি জানি না। আমার যে নয়, সেটুকু আমি জানি।”
ইন্দ্রদীপ বিনীত ভাবে এ-ও জানিয়েছেন, তিনি সুর দিয়েছেন ‘দ্যাখো দ্যাখো কানাইয়ে’, ‘ক্ষণে গোরাচাঁদ ক্ষণে কালা’র মতো কীর্তনাঙ্গের গানগুলিতে। তার পরেও সুরকার হিসাবে ছবির টাইটেল কার্ড বা ইউটিউবে নিজের নাম দেননি। ‘মিউজ়িক ডিজ়াইনার’ লিখেছেন। সম্পূর্ণ ভুল বোঝা হয়েছে তাঁকে।