Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bhaswar Chatterjee

নবমিতার সঙ্গে ঠিক করে নিয়েছি, কাদা ছোড়াছুড়ি করব না: ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়

কৈলাশে সিদ্ধিলাভ করলেন লোকনাথ। তারপর? ‘জয় বাবা লোকনাথ’ ধারাবাহিকের লোকনাথ।ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। শেয়ার করলেন ব্যক্তিজীবনও।সামনে আনন্দবাজার ডিজিটাল।

মৌসুমী বিলকিস
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:১৬
Share: Save:

এই মুহূর্তে লোকনাথের টানাপড়েন ঠিক কী?

টানাপড়েন বলতে... লোকনাথের সিদ্ধিলাভ হয়, কিন্তু তার বন্ধু বেণীর হয় না।নিজের সিদ্ধিলাভ হল, বন্ধুর হল না, এটাই এখন লোকনাথের কষ্টের জায়গা। কারণ বেণী সারাক্ষণ লোকনাথের ভালমন্দ ভেবেছে, নিজের জন্য কিছু ভাবেনি। বেণী খুশি যে লোকনাথ সিদ্ধিলাভ করেছে, কিন্তু লোকনাথের মনে হচ্ছে যে সে-ই বেণীর সিদ্ধিলাভের পথে অন্তরায়।

লোকনাথের টিআরপি বেড়েছে।

হ্যাঁ। এটা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলাম। কারণ, একজন নতুন অভিনেতা। বয়স বাড়িয়ে অভিনয় করছি। ভেবেছিলাম লোকে কী ভাবে নেবে। কিন্তু লোকনাথ বাবার অসীম আশীর্বাদ যে দু’মাস ধরে টিআরপি পড়েনি, বরং বেড়েছে। বেড়েছে মানে বোঝা যাচ্ছে, লোকে দেখছেন।

অনুরাগীদের কাছ থেকে কেমন ফিডব্যাক পাচ্ছেন?

খুবই ভাল। জানেন তো, আমিও ভাবিনি যে এরকম ফিডব্যাক পাব। খুব ভয়ে ছিলাম। আমার চেহারা, মুখের গঠন— কোনওটাই লোকনাথ বাবার মতো নয়। যা হয়... একজন সিদ্ধিলাভ করা মানুষ... প্রচণ্ড রোগাপাতলা চেহারা। তাঁর ধারেকাছেও আমি যাই না। আজকাল স্যোশাল মিডিয়া খুব অ্যাক্টিভ। কিছু হলেই মানুষ ট্রোলিং শুরু করে দেয়। কিন্তু দু’মাস হল সিরিয়ালটা করছি। এরকম কিছু হয়নি।কোথাও নিশ্চয়ইএকটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে।এমনকি বাংলাদেশ থেকেও অনেক দর্শক যোগাযোগ করেন। লোকনাথ শেষ বয়সে বাংলাদেশের বারোডি-তে ছিলেন। ওখানে তাঁর অনেক ভক্ত। অনেকে বলেছেন, ‘আমরা যেন সত্যি লোকনাথ বাবাকে দেখতে পাচ্ছি।’ শুনে মনে ভরসা বাড়ল।

আরও পড়ুন-বলিউডের এক বিখ্যাত নায়কের কথায় বাবা-মায়ের দেওয়া নামই বদলে ফেলেছিলেন ‘কবীর সিং’-এর এই নায়িকা!

নিজের থেকে অনেক বেশি বয়সের চরিত্র করার অনুভূতি কেমন?

প্রথমদিন মেকআপ করতে বসে বলছিলাম, ‘আমাকে দিয়ে হবে না।’ কিন্তু আমাদের যিনি মেকআপ আর্টিস্ট, মহম্মদ নূর, এত ভাল মেকআপ করে, এত ভাল... মুখে বলিরেখা এনে, দীর্ঘদিন সাধনা করে মুখের যেরকম চেহারা হয়... ক্লান্ত অথচ চোখে একটা দীপ্তি আছে... তার সঙ্গে উইগ-দাড়ি এগুলো তো আছেই... সব মিলিয়ে নূর ভোল পাল্টে দিয়েছে। সমস্ত ক্রেডিট ওর।মেকআপ ঠিক না হলে কিছুই হত না।

লোকনাথের চরিত্রে ভাস্বর

কেন? অভিনয়?

ও বাবা! সে তো আমি জানি না, রোজ ভয়ে কাঁপি (মৃদু হাসি)। বড় বড় সংলাপ থাকে, তাছাড়া এরকম চরিত্র... বার্ডেন থাকে মাথার ওপর। এখানে ভাষার ব্যবহারও আলাদা। ডায়লগ ভুলে মাঝখানে ‘আসলে’ যোগ করে বলে দিলাম, এসব এখানে করা যাবে না। এভরি ডে ইজ অ্যান এগজাম ফর মি।

টেলিভিশনে নারীকেন্দ্রিক গল্প। প্রধান চরিত্র পেয়ে কেমন লাগছে?

অনেক প্রধান চরিত্র করেছি। সাঁইবাবা প্রধান চরিত্র ছিল (‘ওঁ সাঁইরাম’)।‘আমলকি’ এক বাচ্চার গল্প। কিন্তু আমি সেখানে গল্পের হিরো ছিলাম। যে সিরিয়ালই করেছি সেট প্রপ্‌ (সেট প্রপার্টিজ) হয়ে কোনও দিন থাকিনি। আমাকে সব সময় ভাল রোল দেওয়া হয়েছে। হিরোইনের প্রাধান্য নিশ্চয়ই ছিল। কিন্তু আমি কখনও ফ্রেমে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য চরিত্র পাইনি। আর যখন নেগেটিভ চরিত্র করেছি তখন বেশি প্রাধান্য পেয়েছি। আমি তো বলব, নেগেটিভের যা মজা আছে সেটা পজিটিভ হিরোরও নেই। যেমন ধরুন, ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’-তে আমার চরিত্র ছিল বাবা বিশ্বলোক। একমাত্র আমার চরিত্রটাই দু’-আড়াই বছর ধরে চলেছে। চরিত্রটা গোটা গল্পে দু’বার ফিরে এসেছিল। এতটাই পপুলার ছিল। ‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’-তেও মেন নেগেটিভ চরিত্র ছিল। তার জন্য পুরস্কারও পেয়েছি। প্রচুর লোকে আমাকে বলে, ‘প্লিজ, নেগেটিভ করবেন না।’ কিন্তু অভিনেতা হিসেবে নেগেটিভ চরিত্র করতে খুব ভাললাগে।

ব্যক্তিগত জীবন কেমন চলছে?

আমার মা অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটা এনজিও করি, ‘অপর্ণা ফাউন্ডেশন’।শীতকালে অ্যাক্টিভলি কাজ করতে হয়। পুরনো, কিন্তু ভাল জামাকাপড় ইন্ডাস্ট্রি থেকে, স্যোশাল মিডিয়া থেকে, যে কমপ্লেক্সে থাকি সেখান থেকে যোগাড় করে বিভিন্ন জায়গায় ডিস্ট্রিবিউট করি। বাচ্চা থেকে বড়, সব বয়সের মানুষের জন্যই এটা করি। করতে ভাললাগে। কলকাতা ও বাইরেও যাই। ছুটির দিনে বা শুটিংয়ের ফাঁকে এসব করি। কিছু কিছু হোমে এসব পাঠাই। অন্য সাহায্যও পাঠাই।এছাড়া লিখতে ভালবাসি। আমাদের আর্টিস্ট ফোরামের ‘বাতায়ন’-এ রেগুলার লিখি। এছাড়া মেন স্ট্রিমের পত্রপত্রিকায় আমার লেখা গল্প বেরোয়।

আরও পড়ুন-মালাইকার সঙ্গে বিচ্ছেদ, সন্তানের দায়িত্ব...মুখ খুললেন আরবাজ খান

আপনার স্ত্রী নবমিতার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বলে খবর।

ডিভোর্স হয়নি। আলাদা থাকছি। কিন্তু উই আর পারফেক্টলি ওকে। আমাদের দিনে অনেকবার করে কথাবার্তা হয়। একে অন্যের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজও করি। একসঙ্গে সিনেমা যাওয়া, বাইরে খাওয়া সবই চলছে। আমরা ঠিকই করে নিয়েছি, পরস্পরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি করব না, ভালটা মনে রাখব, ভালটা নিয়েই থাকব।

‘লোকনাথ’ রূপে নবমিতা আপনাকে দেখেন?

হ্যাঁ।

নবমিতার সঙ্গে ভাস্বর

কী বলেন?

‘খুব ভাল লাগছে। ভাল করছ। তুমি তো এখন সিনিয়র সিটিজেন হয়ে গেছ’— এইসব। ঠাট্টা করে যে ‘সাদা চুল-দাড়ি লাগিয়ে কোথাও গেলে তোমাকে সবাই প্রেফারেন্স দেবে।’ হা হা হা...

অনুরাগিণীরা প্রেম প্রস্তাব দেন এখনও?

হ্যাঁ, পেয়েছি। এখনও পাই। কিন্তু অস্বস্তি লাগে। বয়স হয়ে গেছে। আগে মজা লাগত, ভাল লাগত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE