Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘ইন্ডাস্ট্রি দিয়েছে অনেক, আবার কেড়েও নিয়েছে’

সিরিয়াল ছেড়ে বেরোনো, নিজেদের রিলেশনশিপ স্টেটাস নিয়ে সোজাসাপটা রণিতা দাস ও সৌপ্তিক চক্রবর্তী। ‘ইষ্টিকুটুম’ থেকে সরে যাওয়ার পরে রণিতাও যেন হারিয়ে গেলেন। এ দিক থেকে অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর বয়ফ্রেন্ড সৌপ্তিকের ভাগ্য এবং কেরিয়ার দুইয়েরই খুব মিল।

রণিতা-সৌপ্তিক

রণিতা-সৌপ্তিক

ঈপ্সিতা বসু 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ১২:৪৮
Share: Save:

বাহা চরিত্রটি তাঁকে রাতারাতি স্টার বানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু অভিনেত্রী রণিতা দাস শুধু সেই চরিত্রে আটকে থাকতে চাননি, চেয়েছিলেন আরও নানা ধরনের চরিত্র করতে। কিন্তু তাঁর সে ইচ্ছে পূর্ণ হয়নি। ‘ইষ্টিকুটুম’ থেকে সরে যাওয়ার পরে রণিতাও যেন হারিয়ে গেলেন। এ দিক থেকে অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর বয়ফ্রেন্ড সৌপ্তিকের ভাগ্য এবং কেরিয়ার দুইয়েরই খুব মিল। ‘জলনূপুর’ ধারাবাহিকে পরিচিতি পেয়েছিলেন সৌপ্তিক চক্রবর্তী। কিন্তু সেখান থেকে সরে যাওয়ার পরে আর উল্লেখযোগ্য কাজ করেননি।

অবশ্য ইন্ডাস্ট্রির গুজব, রণিতা ও সৌপ্তিক যা করেন, মিলেমিশে সিদ্ধান্ত নিয়ে করেন। ‘‘আমাদের পরিচয় ও প্রেম ‘ধন্যি মেয়ে’র সময় থেকে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি পদক্ষেপেই সমালোচিত হয়েছি। ‘ইষ্টিকুটুম’ ও ‘জলনূপুর’ আমরা এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছাড়ি। সেখান থেকেই আমাদের প্রতি এই ধারণার জন্ম। কিন্তু সিরিয়াল থেকে বেরিয়ে আসার পিছনে দু’জনের কারণ আলাদা ছিল। এটা আজও ইন্ডাস্ট্রির লোকেদের বোঝাতে পারিনি,’’ বললেন রণিতা।

প্রচণ্ড বায়নাক্কার কারণেই নাকি রণিতাকে আজও কাস্ট করতে ভয় পান অনেকে। ‘‘আসলে ‘ইষ্টিকুটুম’ ছাড়ার পরে আমার বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছিল। পরে তা মিটেও যায়। কিন্তু সমস্যার শুরু সেখান থেকেই। সিরিয়াল আমি অসুস্থতার কারণে ছেড়েছিলাম। মেরুদণ্ডের ব্যথায় দাঁড়াতে পারতাম না। ওজন ভীষণ বেড়ে যাচ্ছিল। ওভারিতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও হাতে টানা রিকশায় বসে শট দিয়েছি। সিরিয়াল না ছাড়লে আমি বোধহয় মরে যেতেও পারতাম। ঘটনাগুলো ক’জনই বা জানেন? তাঁদের ধারণা, আমার ট্যানট্রাম এর পিছনে দায়ী,’’ জবাব অভিনেত্রীর। আর সৌপ্তিকের ‘জলনূপুর’ ছাড়ার কারণ কী? ‘‘অভিনয়ের জায়গাটা হারিয়ে যাচ্ছিল,’’ সোজাসাপটা উত্তর সৌপ্তিকের।

আরও পড়ুন: ক্রাইম-থ্রিলারেই মজে দর্শক

এর পরই ইন্ডাস্ট্রিতে রণিতা এবং সৌপ্তিককে ব্যান করা হয়েছিল। তার ফলে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দু’জনের কেরিয়ার? ‘‘আমাকে তিনটে সিনেমা ছাড়তে হয়েছিল। এর মধ্যে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ব্যোমকেশ বক্সীতে গুরুত্বপূর্ণ খল চরিত্র করার কথা চূড়ান্ত হয়েও শুটিংয়ে যাওয়ার আগের দিন টিকিট ক্যানসেল হয়েছিল। প্রচুর বিজ্ঞাপনের কাজও হাতছাড়া হয়েছে,’’ বললেন সৌপ্তিক। নায়িকা জুড়লেন, ‘‘প্রোডিউসর গিল্ড থেকে আমাদের ব্যান করেছিল। আমার নন-ফিকশন অবধি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আর একটি চ্যানেলের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত আমরা পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পেয়েছিলাম।’’ তবে এ সব আক্ষেপ বোধহয় এ বার মিটতে চলেছে। বড় পর্দায় ফিরছেন রণিতা। এই আরবান ছবিতে তাঁর চরিত্রটা সিরিয়ালের চরিত্রের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। ছবির জন্য গিটার বাজানো আর ড্রাইভিং শিখছেন তিনি।

সৌপ্তিকও পরিচালনায় আসছেন। বললেন, ‘‘কলকাতা ছেড়ে দিল্লি চলে গিয়েছিলাম। সেখানে পরিচালনার উপরে কোর্স করে দু’-একটা কাজ করেছি। এ বার একটি হিন্দি ওয়েব সিরিজ় ও একটি বাংলা ছবি পরিচালনার কথা চূড়ান্ত হয়েছে।’’ বয়ফ্রেন্ড ইন্ডাস্ট্রিরই একজন হওয়ায় কাজ পেতে সুবিধে বা অসুবিধে দুই অভিজ্ঞতাই হয়েছে রণিতার। কম্প্রোমাইজ় না করার জন্য দুটো ছবি তাঁর হাতছাড়া হয়েছে। ‘‘সৌপ্তিকের সূত্রেই পরিচয় টলিউডের নামকরা দু’জন পরিচালক কাম প্রোডিউসরের সঙ্গে। কিন্তু ওকে আড়াল করেই আমাকে ডেকে পাঠিয়ে সুন্দর করে জানালেন, কাজটা পেতে হলে কম্প্রোমাইজ় করতে হবে। আমিও মিষ্টি হেসে সরে আসি,’’ বললেন রণিতা।

দশ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে কী পেলেন দু’জনে? অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘সৌপ্তিকের সঙ্গে অনেক অন্যায় হয়েছে।’’ আর সৌপ্তিকের কথায়, ‘‘কয়েক জন মানুষের ইগোর জন্য একটি চ্যানেলে কাজ করতে পারছি না। এটা আমার কাছে খুব কষ্টকর। আমি অভিনেতা, কাজ করতে চাই।’’

দশ বছরের সম্পর্ক কি এ বার পরিণতি পাবে? ‘‘২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে আমাদের সম্পর্কের ১০ বছর হবে। তখন এটাও সুন্দর পরিণতি পাবে।’’ ফেব্রুয়ারি মাসেই দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের দিন ঠিক করবেন রণিতা-সৌপ্তিক।

ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: প্রিয়া গুপ্ত; হেয়ার: অরূপ হালদার

স্টাইলি‌‌ং: সৌরভ দে;

পোশাক: অভিষেক দত্ত (সৌপ্তিক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ranita Das Television Star Souptik Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE