ছবি: সংগৃহীত
হাতভরা বিয়ের চূড়া। সিঁথি জুড়ে সিঁদুর। হাতে পুজোর থালি নিয়ে ভিকি কৌশলকে পুজো করছেন ক্যাটরিনা কইফ। সেই ছবি ভিক্যাট একসঙ্গেই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করলেন। সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল। অনুরাগীরাও ‘ধন্য ধন্য’ করলেন। ‘বাহ্! কী সুন্দর আদর্শ নববধূ’। পরিবারের সঙ্গে স্বামীর কল্যাণার্থে করবা চৌথের উপোস রেখেছেন। পুজো করে স্বামীর হাতে প্রথম জল-বাতাসা খেয়ে সেই উপোস ভাঙবেন। এই না হলে দিলওয়ালে দুলহন!
অনেকে অবশ্য এর চেয়ে বেশি কিছু ধরতে পারবেন না। ক্যাটরিনা যে এই ছবি তোলার জন্য সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের নতুন কালেকশনের শাড়ি, ফুলছাপা ব্লাউজ জোগাড় করেছেন, গয়না পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেশসজ্জা আর মেক আপের পিছনে দিয়েছেন, বাড়িতে আলাদা করে নিজস্ব পিআর টিমের লোক ডেকে ছবি তুলিয়েছেন, যাঁরা ভিক্যাটের সোশ্যাল মিডিয়া দেখেন, তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঠিক ১০টা বাজলে যেন দু’জনের অ্যাকাউন্ট থেকে একসঙ্গে পোস্ট করা হয়— এ সব হিসেব-নিকেশ সকলের জানার কথা নয়।
এ হল ‘ব্র্যান্ড বিল্ডিং’। ক্যাটরিনা কইফ বলিউডে বরাবরই বিদেশিনী। হিন্দি ঠিক করে বলতে পারেন না। পাকা অভিনয়ও সে ভাবে কোনও ছবিতেই হয়নি। সলমন খানের ছত্রছায়ায় ধীরে ধীরে বলিউডের সিঁড়ি বেয়ে উঠেছেন। তার পর দীর্ঘ দিন রণবীর কপূরের প্রেয়সী হওয়ার সুবাদে বলিউডের ‘ফার্স্ট ফ্যামিলি’তেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। তবে কান পাতলেই সে সময়ে শোনা যেত, নীতু কপূর সে ভাবে পছন্দ করতেন না ক্যাটরিনাকে। মা বিদেশি, জন্ম হংকংয়ে— এমন অভিনেত্রী কপূর পরিবারের বধূ হলে কি আর মানায়!
ভিকি কৌশলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই কিন্তু ভিক্যাট নিজেদের আলাদা ব্র্যান্ড বিল্ডিং শুরু করেন। ক্যাটরিনার লক্ষ্য এখন আদর্শ বধূ হয়ে ওঠা। ছন্নছাড়া বিদেশিনীর ছায়া থেকে বেরিয়ে তিনি একদম পরিবারের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চান। তাই বিয়ের পরই হালুয়া বানিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকদের খাওয়ানো থেকে দেওর-বৌদির মিষ্টি সম্পর্কের ছবি তুলে ধরা— পরিশ্রম কম করছেন না ক্যাট। করবা চৌথের মতো খাঁটি দেশি আচার-অনুষ্ঠান সেই ব্র্যান্ড বিল্ডিংয়েরই দারুণ সুযোগ। সেটাই কাজে লাগিয়েছেন।
অন্য দিকে, বলিউডের বাকি নায়িকারাও পিছিয়ে নেই। তাঁরা নিজেদের মতো সেজেগুজে করবা চৌথের ছবি সমাজমাধ্যমে ঠিক সময়ে পোস্ট করে ফেলেছেন। অনেকে আবার অনিল কপূরের বাড়িতে একজোট হয়ে ধুমধাম করে এই অনুষ্ঠান উদ্যাপন করলেন। মহীপ কপূর, নীলম কোঠারী, ভাবনা পাণ্ডে, ফারহা খান, নাতাশা দালাল (বরুণ ধবনের স্ত্রী) উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, মহীপ, নীলম, ভাবনার রিয়্যালিটি শো ‘ফ্যাবিউলাস লাইভস অফ বলিউড ওয়াইভস’ রমরমিয়ে চলেছে নেটফ্লিক্সে। ফলে দর্শকের চোখের সামনে থাকতে তাঁদের এখন বেশি করে একত্রিত হতে হচ্ছে বোধ হয়।
এই সমাগমে ছিলেন শিল্পা শেট্টি এবং রবিনা টন্ডনও। নব্বইয়ের দশকে একই মানুষের প্রেমে পড়েছিলেন দু’জনে। ‘মোহরা’র সেটে অক্ষয় কুমারের প্রেমে পড়েছিলেন রবিনা টন্ডন। নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের বাগ্দান পর্বও সারা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা রবিনা ভেঙে দেন অক্ষয়ের স্বভাবের জন্য। সে সময়ে বার বার প্রেমে পড়তেন ‘খিলাড়ি’। প্রেমে পড়েছিলেন শিল্পা শেট্টিরও। রবিনা এবং শিল্পা অবশ্য তার পর বহু বার একসঙ্গে জনসমক্ষে এসে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, তাঁদের মধ্যে যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে। এক রিয়্যালিটি শো-এ রবিনা, শিল্পা এবং অক্ষয় কুমার আবার ‘চুরা কে দিল মেরা...’ গানের সঙ্গে একসঙ্গে নেচেও চমকে দিয়েছিলেন সকলকে। করবা চৌথ তেমনই এক অজুহাত, যেখানে বলিউডের সব সমীকরণ একবার ঝালিয়ে নেওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy