Advertisement
E-Paper

ফর্মুলা হিট, কিন্তু প্রশ্ন জাগবেই

অক্ষয়কুমার আবার এমন ছবি করলেন, যার উদ্দেশ্য শুধু বিনোদন নয়। বরং সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মিলিয়ে জাতীয়তাবাদের পাঁচন তৈরি করাটাই বোধহয় এ ছবির উদ্দেশ্য! ‘উরি’-‘মণিকর্ণিকা’র পরে বলিউডের সাকসেস ফর্মুলা এখন অবশ্য সেটাই।

 অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০০:০৩

অক্ষয়কুমার আবার এমন ছবি করলেন, যার উদ্দেশ্য শুধু বিনোদন নয়। বরং সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মিলিয়ে জাতীয়তাবাদের পাঁচন তৈরি করাটাই বোধহয় এ ছবির উদ্দেশ্য! ‘উরি’-‘মণিকর্ণিকা’র পরে বলিউডের সাকসেস ফর্মুলা এখন অবশ্য সেটাই। এক ঐতিহাসিক ১২ সেপ্টেম্বরে সরাগরহি ফোর্টে মোটে ২১ জন শিখ সেনা দশ হাজার পাঠান সেনার (ছবির হিসেব অনুযায়ী) বিরুদ্ধে লড়ে শহিদ হয়। ১৮৯৭-এর সেই যুদ্ধের গল্প নিয়েই ‘কেশরী’। যে যুদ্ধ আসলে ছিল ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান সেনাদের মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু ছবিটি সাদা-কালো বাইনারি দিয়ে হয়ে গেল শিখদের ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে ‘তালিবানি’ আফগানদের মৌলবাদিত্বের লড়াই!

যে ভারতীয় শিখ বীররা ওই যুদ্ধে শহিদ হন, তাঁরা ছিলেন ইংরেজ শাসকের অধীনস্থ বেতনভুক সেনা। ওই সময়ে আফগান সেনাদের সঙ্গে ভারতীয়দের সরাসরি বিরোধ ছিল বলে সাধারণে জানে না! কিন্তু ছবির একদম শুরুতে এক অসহায় মেয়েকে ধর্মের নামে খুন করতে চায় এক দল পাঠান। ব্রিটিশ কম্যান্ডারের নির্দেশ অমান্য করে তাদের সঙ্গে লড়ে মেয়েটিকে বাঁচায় ইশর সিংহ (অক্ষয়)। তার পর থেকেই ছবিটি হয়ে যায় শিখদের গরিমা আর পাঠানদের দ্বিচারিতার দ্বন্দ্ব। ছবিতে কয়েকটি সংলাপের মাধ্যমে বুঝিয়েও দেওয়া হয়, ব্রিটিশ শাসকের নিত্য অরাজকতার শিকার হয়ে ক্ষুব্ধ ভারতীয় সেনা। তাই ব্রিটিশেরই শত্রুপক্ষ পাঠানদের বিরুদ্ধে তারা লড়বে ‘আজ়াদ’ সেনা হয়ে! এ দেশের মাটিতে কাপুরুষদের জন্ম হয়— এই ব্রিটিশ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই মূলত সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধের সূত্রপাত, ছবি দেখে এমন ভ্রান্তিও হতে পারে! শিখ বনাম পাঠানদের প্রসঙ্গে কতকগুলো বিষয় চোখে লাগে। শিখরা যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের মুখে জল দেয়। পাঠানরা জলদাতাকে কোতল করে। শিখরা বীরের মতো যুদ্ধে নিহত হয়। পাঠানরা মরে যাওয়া সেনাদের জাগতিক সম্পত্তি হাতাতে ব্যস্ত থাকে। কোনও রকম সূক্ষ্ম তারতম্য ছাড়া এ রকম কিছু নিরেট ভাবনা দেগে দিলে চিত্রনাট্যের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ইচ্ছে করে।

কেশরী পরিচালনা: অনুরাগ সিংহ অভিনয়: অক্ষয়কুমার, পরিণীতি চোপড়া, সুমিত সিংহ বসরা ৫/১০

ছবির কোনও চরিত্রেরই কোনও ‘নুয়্যান্স’ নেই। অবশ্য ট্রেলার থেকেই বোঝা গিয়েছিল, ছবিটি অক্ষয়কুমারের ওয়ান ম্যান শো। কারণ বাকি অভিনেতারা পরিচিত নন তেমন। অক্ষয় প্রচুর খেটে যে বিনোদন জোগানোর চেষ্টা করেছেন, সেটা স্পষ্ট। ছবিতে অনেক অ্যাকশন করতে হয়েছে অভিনেতাকে। কসরতে তিনি ফাঁক রাখেননি, তবে যুদ্ধের নৃশংস দৃশ্যগুলোর পুনরাবৃত্তি বড্ড একঘেয়ে। প্রথম দিকে ছবির গতিও বেশ শ্লথ। কয়েকটি দৃশ্যে জোর করে হিউমর আনা হয়েছে, সেগুলো জমেনি। পরিণীতি চোপড়ার মতো ভাল অভিনেতা এই ছবিতে থাকা আর না থাকা প্রায় এক! তবে ওই... সিনেমায় নায়কের ম্যাচোইজ়ম, জাতীয়তাবাদ, স্বদেশ, ধর্মবাদ আর অ্যাকশন মিশিয়ে দিলেই তো ছবি হিট হচ্ছে! নির্মাতাদের তার বাইরে কিসের দায়?

Akshay Kumar অক্ষয় কুমার kesari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy