Advertisement
E-Paper

মুহূর্তে বদলে যেত মেজাজ, ভয়ে থাকতেন স্ত্রী! কেন ভুগতেন নিরাপত্তাহীনতায়? কিশোরকুমার প্রসঙ্গে লীনা চন্দভারকর

১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর কিশোরকুমারের মৃত্যু হয়। শিল্পী হিসাবে অত্যন্ত সফল হলেও গায়কের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল চিরকালই রয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫৪
লীনার সঙ্গে কিশোরকুমার। ছবি: সংগৃহীত।

লীনার সঙ্গে কিশোরকুমার। ছবি: সংগৃহীত।

ভারতীয় সিনেমা ও সঙ্গীতজগতের এক উজ্জ্বল নাম কিশোরকুমার। তাঁর অভিনয় ও গানে পাগল হয়েছে আপামর দেশবাসী। আজও সব বয়সি মানুষের মুখে মুখে ফেরে তাঁর গান। তবে শুধু পেশা নয়, কিশোরকুমারের ব্যক্তিজীবনও চিরকাল থেকেছে চর্চায়। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অভিনেতার চরিত্র নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তাঁর চতুর্থ স্ত্রী লীনা চন্দভারকর।

১৩ অক্টোবর কিশোরকুমারের মৃত্যুদিন। শিল্পী হিসাবে কিশোরকুমারের সাফল্য আকাশচুম্বী। পাশাপাশি, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল চিরকালই রয়েছে। গায়কের মৃত্যুদিনে নতুন করে ভাইরাল হয়েছে লীনার এক পুরনো সাক্ষাৎকার। সেখানে লীনাকে বলতে শোনা যায়, এক বার কিশোরকুমারকে ছে়ড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। গায়কের হঠাৎ হঠাৎ মেজাজ বদলে যেত। তাল মেলাতে গিয়ে ভয় পেতেন লীনা। কিন্তু কেন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন তিনি? লীনার কথায়, “ওঁর ব্যবহার হঠাৎ হঠাৎ বদলে যেত। কখনও হয়তো খুব সিরিয়াস আচরণ করছেন, পরমুহূর্তেই একেবারে বাচ্চাদের মতো করতেন। কোনও বিষয়ের কী ভাবে প্রতিক্রিয়া দেবেন, আন্দাজ করা যেত না।”

এই ঘন ঘন মেজাজ বদল দেখে এক বার বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন লীনা। তিনি বলেন, “আমাকে জিজ্ঞেস করেন যে আমি ওঁর সম্পর্কে কোনও গুঞ্জন শুনেছি কি না। আমি ওঁর মুখের উপর এ সব বলতে চাইনি। আমি ঘরে একা ছিলাম। ‘পেয়ার অজনবি হ্যায়’ ছবির শুটের জন্য সাজছিলাম। আমি মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় ওঁর মুখটা পুরো পশুর মতো করেন। ওই মুখ দেখলেই ভয় করবে। আমি চেষ্টা করেও দেখাতে পারব না। ঠিক যেন, উনি উন্মাদ হয়ে গিয়েছেন! আমি এ সব কথা শুনেছিলাম ওঁর সম্পর্কে, তাই ভয় পেয়ে যাই। আমরা কেশসজ্জাশিল্পীর দিকে তাকাতে থাকি। তার পর রণে ভঙ্গ দিয়ে স্বীকারই করে নিই যে, ওঁর সম্পর্কে গুজব আমিও শুনেছি। বলি, ‘হ্যাঁ। আমি তোমার সম্পর্কে গুজব শুনেছি।’ এই শুনেই উনি সজোরে হাসতে শুরু করেন। জিজ্ঞেস করেন, ‘আগেই বললে না কেন’? বাচ্চাদের নিয়ে ভূতের সিনেমাও দেখতেন। উনি এমনই ছিলেন।”

তবে লীনা অকপটে এ কথাও স্বীকার করে নেন, যে তাঁর সঙ্গে বিয়ের পর ‘অনেকটা বদলে যান’ কিশোরকুমার। কিন্তু, তিনি যে এত বড় তারকার চতুর্থ স্ত্রী। লীনার ভিতরেই দানা বেঁধেছিল নিরাপত্তাহীনতা। এক বার ভেবেছিলেন, বিয়ে ভেঙে বেরিয়ে আসবেন। লীনা বলেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। কেন দেরি করে বাড়ি ফিরলে, কোন মহিলা ফোন করেছিল— এ সব নিয়ে ঝগড়া হয়। কিন্তু, আমি ওঁর চতুর্থ স্ত্রী ছিলাম, সেই নিয়ে প্রবল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতাম। আমার বক্তব্য ছিল, ‘পঞ্চম স্ত্রী যেন না আসে ওঁর জীবনে।’ খুব চিন্তায় থাকতাম। এক বার ওঁকে বলি যে, আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। উনিই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন খানিক, তার পর নিজেই বলেন চলে যেতে। বলেন, ‘কোনও দিন ফিরে আসবে না, আমার সঙ্গে আর কখনও কথাও বলবে না’।”

শেষমেষ সেই ঝগড়া থামান কিশোরকুমারের বন্ধুরা। লীনা ট্যাক্সি ধরতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় গায়কের বন্ধুরা এসে তাঁকে আটকান। রসিকতা করে তাঁরা লীনাকে বলেছিলেন, “আপনি কোন আক্কেলে চলে যাচ্ছেন? আপনার জন্যই তো পৃথিবীর এই অষ্টম আশ্চর্য বস্তুর (কিশোর) বদল ঘটেছে।”

রুমা গুহঠাকুরতা, মধুবালা ও যোগিতা বালির পর লীনার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন কিশোরকুমার। প্রথম বিয়ে টেকে ৮ বছর। দ্বিতীয় স্ত্রী মধুবালার মৃত্যু হয় ১৯৬৯ সালে। এর পরের বিয়ে টেকে মাত্র দুই বছর। এর পর তিনি লীনার হাত ধরেন। ১৯৮৭ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিশোরকুমার। শেষ দিন পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন লীনা।

Kishore Kumar Leena Chandavarkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy