Advertisement
E-Paper

বাজারে নকল ‘প্রাক্তন’ কেন নন্দন থেকে

ছবি মুক্তির এক মাসের মাথায় প্রযোজকের কাছে ফোনটা আসে গড়িয়াহাট থেকে। পরিচিত সিডি কারবারি জানান, আরে দাদা, আপনার বইয়ের ডিভিডি বেরিয়ে গিয়েছে খাস নন্দন থেকেই।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০২:৩২
 নকল: ছবি থেকে স্পষ্ট নন্দনের নাম। নিজস্ব চিত্র

নকল: ছবি থেকে স্পষ্ট নন্দনের নাম। নিজস্ব চিত্র

ছবি মুক্তির এক মাসের মাথায় প্রযোজকের কাছে ফোনটা আসে গড়িয়াহাট থেকে। পরিচিত সিডি কারবারি জানান, আরে দাদা, আপনার বইয়ের ডিভিডি বেরিয়ে গিয়েছে খাস নন্দন থেকেই।

কলকাতা বা শহরতলির ফুটপাথে যে কোনও সিডি কারবারির কাছে খুঁজলেই মিলতে পারে ‘প্রাক্তন’-এর ‘ফাস্ট ক্লাস কপি’। ফ্রেমে ঝকমক করছেন প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণারা। নীচের কোণে লেখাটাও স্পষ্ট: কপি ফর নন্দন। অভিযোগ উঠেছে, ছবি মুক্তির আগে নন্দন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ‘প্রিভিউ ডিভিডি’ থেকেই চুরি হয়ে তৈরি হয়েছে এই কপি।

টালিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রি মহলে সাড়া ফেলে দেয় এই কাণ্ড! জনৈক নামী প্রযোজকের মতে, ‘‘এ তো দেখি রক্ষকই ভক্ষক।’’ কড়া হাতে ছবির পাইরেসি ঠেকাতে রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করে আসছে টলিউড। সেই দায়িত্ব পালন দূরে থাক, খাস নন্দন কর্তৃপক্ষের জিম্মায় থাকা অবস্থায় কী ভাবে ছবি কপি হয়ে যাচ্ছে, সে-প্রশ্নও এ বার উঠছে। প্রাক্তন-এর পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায় এবং প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, নন্দন কর্তৃপক্ষকে তদন্তের অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু এত দিনেও সাড়া মেলেনি।

কেন এমন হল? ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে!’’— সংক্ষিপ্ত জবাব নন্দন অধিকর্তা যাদব মণ্ডলের। তথ্য-সংস্কৃতি সচিব অত্রি ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘সিনেমার নকলের ক্ষেত্রে কপিরাইট আইন অনুযায়ী পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ তথ্য-সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনেরও আশ্বাস, ‘‘সরকার পাইরেসি রুখতে কড়া আইন চালু করতে চলেছে।’’ কিন্তু এত বড় ঘটনার তদন্ত নিয়ে সদুত্তর নেই কারও কাছেই।

আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত জীবনেও ‘অসমাপ্ত’ সম্পর্ক রয়েছে, রয়েছে খারাপ লাগাও

তবে পাইরেসি-সঙ্কটের বিস্তৃত ছায়া নিয়ে দ্বিমত নেই টলি প্রযোজক-পরিচালকদের প্রায় কারওরই। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সিনেমাওয়ালা’ এই গল্পই বলেছিল। কৌশিকের মতে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের হাতে গোনা হলে এখন টালিগঞ্জের ছবি চলে। তার বাজার তামিল-তেলুগু-মরাঠি ছবির মাপেও নেহাতই লিলিপুট। এর মধ্যে নকল সিডি বাজারে ছয়লাপ। টলিউড কোমা থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।’’

ইন্ডাস্ট্রি সূত্রের খবর, ছবি মুক্তির কয়েক দিনের মধ্যেই নকল হলপ্রিন্ট গোটা রাজ্য-বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরে নেটে আপলোড হয়। তাতে ছবির ডিভিডি বা ভিসিডি-র কারবারের দফা রফা। টিভি চ্যানেলে স্যাটেলাইট বিক্রির দরেও কয়েক বছরে ধস নেমে একেবারে তলানিতে। প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানও চান, ‘‘কোথা থেকে কী ভাবে ছবির নকল করা হচ্ছে তা শনাক্ত করা হোক।’’ ইন্ডাস্ট্রির আশা, বেসরকারি হাসপাতালের অনাচারে লাগাম পরানোর মতোই টালিগঞ্জকে বাঁচাতেও হাল ধরুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Bengali Movie Bengali Cinema Praktan Nandan Movie piracy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy