Advertisement
E-Paper

অনুরাগ, এ আপনার কেমন মন মর্জি?

অনুরাগ কাশ্যপ তাঁর কমর্ফট জোন ভেঙে নতুন কিছু উপহার  দেবেন, দর্শক হিসেবে এটাই তো চাহিদা। কিন্তু ‘বম্বে ভেলভেট’-এর মতো তিনি আবারও একখানা ভুল করে বসলেন। এই প্রজন্মের খামখেয়ালিপনা, ধন্দ, আবেগের জটিলতা প্রকাশ করতে গিয়ে এমন একটি চিত্রনাট্য বাছলেন যা ইন্টারভ্যালের আগেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়।

অময় দেব রায়

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৩৩
চেনা ছকের পাতি ত্রিকোণ প্রেমই ধরা পড়েছে ছবিতে।

চেনা ছকের পাতি ত্রিকোণ প্রেমই ধরা পড়েছে ছবিতে।

ছবি: মনমর্জিয়াঁ

পরিচালক: অনুরাগ কাশ্যপ

অভিনয়: তাপসী পান্নু, ভিকি কৌশল, অভিষেক বচ্চন

না, এ ছবিতে মহল্লা কাঁপানো কোনও ডন নেই! গুলি-বন্দুকের একটা শব্দ পর্যন্ত নেই! নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি? না মশাই, তা-ও নেই। বরং আছে লিপ সং, মেলোড্রামা আর ভরপুর রোমান্স। তাতে আপত্তি কীসের? অনুরাগ কাশ্যপ তাঁর কমর্ফট জোন ভেঙে নতুন কিছু উপহার দেবেন, দর্শক হিসেবে এটাই তো চাহিদা। কিন্তু ‘বম্বে ভেলভেট’-এর মতো তিনি আবারও একখানা ভুল করে বসলেন। এই প্রজন্মের খামখেয়ালিপনা, ধন্দ, আবেগের জটিলতা প্রকাশ করতে গিয়ে এমন একটি চিত্রনাট্য বাছলেন যা ইন্টারভ্যালের আগেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়। কনিকা ধিলোঁ নাকি অনেক দিন ধরেই এই চিত্রনাট্যের জন্য পরিচালক খুঁজছিলেন। জেনেবুঝে কেন যে অনুরাগ ফাঁদে পা দিলেন!

হল অন্ধকার হতেই স্বর্ণমন্দির। আবহে পঞ্জাব। অমৃতসরের মেয়ে রুমি (তাপসী পান্নু)। একসময় হকিতে আগ্রহ থাকলেও সে পাট চুকেছে। ডিজে ভিকির (ভিকি কৌশল) সঙ্গে তার ভরপুর রোমান্স। ভিকি ছাদ টপকে মাঝেমধ্যেই হানা দেয় রুমির ঘরে। ছিটকানি আটকে আছড়ে পরে রতিরস। সম্পর্কে কোনও দায়িত্ববোধ নেই। নেই প্রতিশ্রুতি। তাতে কী? আছে জীবনকে উপভোগের উচ্ছ্বাস। জেন-ওয়াই-এর স্পর্ধিত যাপন। বিয়ের কথা উঠতেই সমস্যার সূত্রপাত। ভিকি বিয়ের জন্য প্রস্তুত নয়। এ দিকে রুমি বাড়ির লোককে জানিয়ে দিয়েছে ভিকি সম্বন্ধ নিয়ে না এলে যে কাউকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। যা-ই হয়ে যাক রুমির কথার খেলাপ হবে না।

ছবির একটি দৃশ্যে অভিষেক বচ্চন এবং তাপসী পান্নু।

এখানেই গল্পে এন্ট্রি হয় রব্বির (অভিষেক বচ্চন)। শুরু চেনা ছকের পাতি ত্রিকোণ প্রেম। শুধুমাত্র জেদের বসে রুমি, রব্বিকে বিয়ে করে বসে। আর হনিমুনে গিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। এমনকি, বিয়ের আগে একাধিক বার রুমি, ভকি পরস্পরের অপেক্ষায় থাকে পালিয়ে যাবে বলে। কিন্তু কেউই এসে পৌঁছয় না! ‘দেব ডি’-র পরেও কী ভাবে অনুরাগ এই বস্তা পচা সেন্টিমেন্টকে প্রশ্রয় দেন কে জানে! রব্বি কিন্তু দু’জনের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর। ধীরস্থির, অন্তর্মুখী। রুমির কথায় ‘রামজি টাইপ’। তার অপেক্ষা অনন্ত। স্ত্রী হনিমুনে অন্য কারও ফোনের অপেক্ষা করছে জেনেও তার অস্বস্তি হয় না! হিন্দি ছবির ইতিহাসে এমন ভাল ছেলে বোধহয় খুব কমই আছে। রব্বির মুখে কিছু সুন্দর সংলাপ আছে বটে, কিন্তু ওই পর্যন্তই। তরুণ প্রজন্মের সীমাহীন কনফিউশনের কাহিনি মোটেও শিল্পোত্তীর্ণ নয়। ‘মনমর্জিয়াঁ’ তার প্রধান চরিত্র রুমির মতোই চঞ্চলমতি, বড্ড খাপছাড়া। মনে রাখার মতো শেষ দৃশ্যটি। হাঁটতে হাঁটতে রুমি, রব্বির মিহি সংলাপের আদানপ্রদান। বাড়ি পৌঁছে যাওয়া। আর হঠাৎ একে অন্যকে আবিষ্কারের আনন্দ। অনুরাগকে খুঁজে পেতে এমনই দু’-একটি দৃশ্যের অপেক্ষা ভিন্ন পথ নেই।

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: গ্রামে ঘোরে মহিলা ভূত, পৌঁছে দেয় গভীর বার্তা

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: ফ্ল্যাট নম্বর ৬০৯ ভয়ের মহিমা!

এ ছবির প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে ভিকি কৌশল। তিনি আগেই জাত চিনিয়েছেন। ‘মনমর্জিয়াঁ’-য় সেরাটা দিলেন। প্রাণবন্ত তাপসী আর রুমি একাকার হয়ে যায়। দু’জনকে গোটা ছবিতে এক বারের জন্য আলাদা করা যায় না। অভিষেক বচ্চনকে বেশ কিছু দিনের বিরতিতে পর্দায় দেখে ভাল লাগলো। রব্বি হিসেবে মানিয়েছে ভালো। অমিত ত্রিবেদীর গান আলাদা মাত্রা যোগ করে। কিন্তু ১৫৭ মিনিট ধরে শুধুমাত্র কিছু অস্থির মনের দোদুল্যমানতা আপনাকে ক্লান্ত করতে বাধ্য।

Movie Review Film Review Manmarziyaan Bollywood Celebrities
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy