Advertisement
E-Paper

কেমন হল মণি রত্নমের নতুন ছবি ‘পোন্নিয়িন সেলভান ২’? জানাচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন

ছবি জুড়ে অসাধারণ সমস্ত দৃশ্যগ্রহণ। তবে বইগুলি না পড়া থাকলে ছবির গল্প বোঝা একটু দুষ্কর।

শতরূপা বসু

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:০৮
Aishwarya Rai Bachchan and Vikram in Ponniyin Selvan 2

প্রথম ভাগের পর ‘পোন্নিয়িন সেলভান’-এর দ্বিতীয় ভাগ থেকেও দর্শকদের প্রত্যাশা বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন, কল্কি কৃষ্ণমূর্তির বইগুলি না পড়লে ‘পোন্নিয়িন সেলভান ২’ ছবিটি বোঝা খুবই দুষ্কর। এত চরিত্র, এত গল্পের ভাঁজ, শাখা-প্রশাখা, পরিস্থিতির ক্রমাগত পরিবর্তন যে, কাহিনি কোন দিকে যাচ্ছে তা বোঝা বেশ দুষ্কর। তবে মণি রত্নমের ছবি বলে কথা! কোন জাদুতে ছবিকে দাঁড় করিয়ে দিতে হয়, তা তিনি বিলক্ষণ জানেন।

এ ছবি সে রকমই। তাই আমরা যারা পূর্ব ভারতের দর্শক এবং যারা বইগুলি পড়িনি, তারা এক ভাবে ছবিটি দেখব। তবুও বলা হচ্ছে, ছবির প্রথম ভাগ, মানে ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ প্রায় মূল বইয়ের কাছাকাছিই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ভাগ মণি অনেকটাই নিজের মতো করে বানিয়েছেন।

Aishwarya Rai Bachchan and Vikram in Ponniyin Selvan 2

ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে খুব কম পরিচালকই মণি রত্নমের মতো বড় পর্দায় উপস্থাপন করতে পেরেছেন। ছবি: সংগৃহীত।

প্রথম ভাগ শেষ হয়েছিল জলের দৃশ্য দিয়ে। ছবির দ্বিতীয় ভাগও শুরু হল জল দিয়েই। কিন্তু অন্য রকম ভাবে। সেখানে দেখা যায়, নন্দিনীর কিশোরীবেলার দৃশ্য। তার প্রেমিক আদিতা কারিকালানের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার দৃশ্য। নন্দিনীর কী হয়েছিল, তা দেখিয়ে পরিচালক আমাদের নিয়ে যান আরুলমোড়ি বর্মনের (যার আর এক নাম পোন্নিয়িন সেলভান) গল্পে। প্রথম ভাগে আমরা দেখেছি, সে নদীতে ডুবতে ডুবতে কোনও মতে বেঁচে যায়। এই ছবিতে দেখি, নদী থেকে বেঁচে ফিরে সে খুবই অসুস্থ। তাকে একটি বৌদ্ধ মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে সে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে ধারালো কূটবুদ্ধিসম্পন্ন নন্দিনী পণ করে, সে সুন্দর চোল এবং আদিতা কারিকালানকে মারবে একই দিনে। সে আদিতাকে নিমন্ত্রণ করে এই বলে যে, সে আসলে মধুরান্ধাগনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। কারণ মধুরান্ধাগন চোল সিংহাসনে বসার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু কারিকালানের কাছে ফাঁস হয়ে যায় নন্দিনীর পরিকল্পনা। সে-ও এক অনবদ্য দৃশ্য।

এই ভাবেই গল্প এগোতে থাকে। একের পিঠে অন্য গল্প এসে জুড়ে যায়। চরিত্ররা আসা-যাওয়া করে। প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, কবর খুঁড়ে পুরনো কঙ্কাল বের করা— সবই আছে ছবিতে। ছবির বেশির ভাগ শটই ক্লোজ-আপে তোলা। বিশেষ করে প্রেমের দৃশ্যগুলো। সেগুলো বড় পর্দায় না দেখলে বড় মিস। অন্যান্য দৃশ্যও মিঠে গুড়ের মতো। সেখানে অন্তর্ঘাতের চোরা স্রোত আছে ঠিকই, কিন্তু সেই দৃশ্যে কোনও কাঠিন্য নেই বা উচ্চকিত দৃশ্যগ্রহণও নেই। অসাধারণ সমস্ত দৃশ্যপট এবং লোকেশন।

ছবির অভিনয় খুবই ভাল। এক গুচ্ছ দক্ষিণী সুপারস্টার— বিক্রম, তৃষা, কার্তি, প্রকাশ রাজ (ইনি যদিও এখন বলিউডি), ঐশ্বর্য লক্ষ্মী— এঁরা সবাই এক কথায় দারুণ। আর অবশ্যই ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। তাঁকে মণি রত্নম যে ভাবে বড় পর্দায় উপস্থাপন করেন, সে ভাবে খুব কম পরিচালকই পেরেছেন। এ ছবিতেও তার কোনও ব্যত্যয় হয়নি। এই বয়সে ঐশ্বর্যা যে ভাবে নিজেকে ধরে রেখেছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। তাঁর রূপকে যথাযথ ভাবে উদ্ভাসিত করতে সঙ্গত করেছে রবি বর্মনের ক্যামেরা। ছবির দৃশ্যগ্রহণ দুর্দান্ত। প্রথম ভাগের তুলনায় ‘পোন্নিয়িন সেলভান ২’ অনেক বেশি সমৃদ্ধ।

South actor Karthi and Trisha in Ponniyin Selvan 2

‘পোন্নিয়িন সেলভান ২’ ছবির একটি দৃশ্যে কার্তি এবং তৃষা। ছবি: সংগৃহীত।

তবে এটুকু না বললেই নয় যে, ছবিটি ‘বাহুবলী’র মতোই মহাকাব্যিক হওয়ার চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা যে সফল, তা ছবির প্রথম ভাগের বক্স অফিসে ৫০০ কোটি পেরিয়ে যাওয়াই প্রমাণ করে। কিন্তু মণি রত্নম তামিলেই আটকে গিয়েছেন। তাঁর সাম্প্রতিক পর্বের ছবি সর্বভারতীয় দর্শকের কাছে কতখানি পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে, তা সময়ই বলবে।

Ponniyin Selvan 2 Mani ratnam Film Review Aishwarya Rai Vikram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy