Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Mahesh Thakur

‘স্বজনপোষণ বিতর্কের অবসান তখনই ঘটবে, যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ফান্ডিং করবে ব্যাঙ্ক’

বলছেন সিনিয়র শিল্পী মহেশ ঠাকুর। ডিজিটালে তিনি নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রে।বলছেন সিনিয়র শিল্পী মহেশ ঠাকুর। ডিজিটালে তিনি নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রে।

মহেশ।

মহেশ।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০০:৩০
Share: Save:

দূরদর্শনের ‘তু তু ম্যায় ম্যায়’ থেকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ‘মোদী: জার্নি অফ আ কমন ম্যান’ সিরিজ়...দীর্ঘ সফর অভিনেতা মহেশ ঠাকুরের। সম্প্রতি স্ট্রিমিং হচ্ছে তাঁর অভিনীত সিরিজ়ের দ্বিতীয় সিজ়ন ‘মোদী: সিএম টু পিএম’। সিরিজ়ের নির্দেশনায় ‘১০২ নট আউট’-খ্যাত পরিচালক উমেশ শুক্ল।

নরেন্দ্র মোদীর চরিত্রের প্রস্তাব পাওয়ার পরে প্রথম প্রতিক্রিয়া কী ছিল? অভিনেতা শোনালেন মজার গল্প। ‘‘প্রথমেই আমাকে চরিত্রের কথা বলা হয়নি। অফিসে এসে দেখা করতে বলা হয়। যে দিন গিয়েছিলাম, সে দিন পরিচালক কোনও এক মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সেই ফাঁকে কস্টিউম বিভাগের একজন প্রথমে আমার কুর্তার মাপ নিলেন। তার পরে আমার মাথার মাপজোক নিচ্ছিলেন। সেটা একটু অদ্ভুত লেগেছিল।’’ ইতিমধ্যে পরিচালক তাঁর কেবিনে এসে গিয়েছেন, ‘‘উনি আমাকে এক-এক করে দৃশ্যের বর্ণনা দিতে থাকেন। কিছুটা ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আমি কোন চরিত্রটা করছি?’ খুব অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে উনি বলেছিলেন, ‘অবশ্যই মোদী’...’’ হাসির দমক মহেশের কণ্ঠে।

তাঁর কেরিয়ারে অন্যতম চ্যালেঞ্জিং চরিত্র ছিল এটি। ‘‘বায়োপিক করা কঠিন। দর্শকের মনে সেই বিখ্যাত ব্যক্তির যে ইমেজ থাকে, তার বাইরে কিছু করলে ভাল দেখায় না,’’ মত তাঁর। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এর জন্য তিনি দেখা করেননি। তাঁর রেফারেন্স পয়েন্ট ছিল, অডিয়ো-ভিসুয়াল নানা প্রেজ়েন্টেশন। কিশোর মকবাণার লেখা ‘কমন ম্যানস পিএম- নরেন্দ্র মোদী’ বই অবলম্বনে নির্মিত এই সিরিজ়।

গত বছর প্রথম সিজ়নের রিলিজ়ের কাছাকাছি সময়ে বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছিল বিবেক ওবেরয় অভিনীত ছবি ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’। একই বিষয়ের ছবি ও সিরিজ় পরস্পরের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলে না? ‘‘ছবিতে বিষয়টি দু’ঘণ্টার মধ্যে দেখানো হয়। সিরিজ়ে একই বিষয় হলেও দেখানোর পরিধি তুলনায় বেশি,’’ মত মহেশের।

কিন্তু এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করলে সংশ্লিষ্ট অভিনেতার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে দর্শকের মনে নানা প্রশ্ন জাগে। সেই দিকটি কী ভাবে দেখেন মহেশ? ‘‘রাজনীতি মানেই কোনও পক্ষের সমর্থন বা বিরোধিতা করা নয়। তার আসল উদ্দেশ্য, জনগণের সেবা, দেশের উন্নতি করা। যে শিল্পীই এমন চরিত্রে অভিনয় করবেন, তাঁর কাছে এটি চ্যালেঞ্জ। আর রাজনীতি তো সব কিছুর ঊর্ধ্বে নয়। তাই এরও ভাল-খারাপ দিক রয়েছে। বইতে যা বলা হয়েছে, সেই ভাবাদর্শ পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছি। ব্যক্তি মহেশের রাজনৈতিক মতাদর্শ সেখানে প্রতিফলিত হয়নি,’’ বললেন তিনি।

দীর্ঘ সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার ফলে সব মাধ্যমেই নিজস্ব ছাপ রেখেছেন মহেশ। তাঁর মতে, একটি মাধ্যম অন্যটির পরিপূরক নয়। তবে গত কয়েক মাস ধরে চলা স্বজনপোষণ বিতর্ক সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ধারার। ‘‘এই বিতর্ক আজকের নয়। কিন্তু এর যে নেতিবাচক অর্থ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে, সেটা আমি মানি না। যে কোনও বহুজাতিক কর্পোরেট সংস্থার কথা বলুন, সেই সংস্থার সিইও মালিকের ছেলে বা মেয়েকেই করা হচ্ছে। বাইরের কাউকে তো নয়। যখন কোনও পরিচালক তাঁর ছবির ফান্ডিংয়ের জন্য প্রযোজক বা অন্য কোনও ব্যক্তিবিশেষের উপরে নির্ভরশীল, তখন তাঁর মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হবে। স্বজনপোষণ বিতর্কের অবসান তখনই ঘটবে, যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ফান্ডিং করবে কোনও ব্যাঙ্ক, ব্যক্তি নয়,’’ বললেন অভিনেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE