দেব। —ফাইল চিত্র।
দক্ষিণী, হিন্দি, ইংরেজি ছবির ভিড়ে বাংলা সিনেমার টিকে থাকা নিয়ে প্রতি দিন নিত্যনতুন প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত কম বাজেটের বা ‘ছোট’ পরিসরের ছবি হলে তা যে সিনেমা হলে খুব বেশি দিন চলছে, তেমনটা নয়। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে মুক্তি পেয়েছে একগুচ্ছ ছবি। যার মধ্যে দু’টি হিন্দি এবং দু’টি বাংলা। এক দিকে সানি দেওল এবং অক্ষয় কুমার অন্য দিকে দেবের ব্যোমকেশ ও মধুমিতার ‘চিনি ২’। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর তিন দিন কাটতে না কাটতে প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে ছবিটি। টিকিট বিক্রিও নেই। একই সময় মুক্তি পেয়েছে দক্ষিণী তারকা রজনীকান্তের ছবি ‘জেলর’। তা হলে কি বড় মাপের তারকাদের ভিড়ে ছোট ছবির বাজার দর পড়ে যাচ্ছে? ইন্ডাস্ট্রিতে দু’ধরনের ছবি তৈরি হয়। হয় ছবিতে থাকবেন বড় মাপের তারকা। না হলে পরিচালক এমন ভাবে ছবিটি তৈরি করবেন, যেটা দর্শকের কাছে উপস্থাপিত হবে সম্পূর্ণ অন্য ভাবে। আপাতত সেই পথেই হাঁটছেন পরিচালক-প্রযোজকেরা।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তী থেকে অভিনেতা দেব— সকলেই ঝুঁকছেন এ ধরনের কাজে। যদিও পর্দায় দেবের আগমন এখনও দর্শককে তেমনই উত্তেজনা দেয়, যেমনটা দিত ১৭ বছর আগে। একের পর এক নতুন ধরনের ছবি করে চলেছেন তিনি। গল্পের উপর জোরও দিচ্ছেন। ছবির তৈরির সব দিকে যে তাঁর সমান নজর এবং উৎসাহ থাকে, তা সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন অভিনেতা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি ‘এসভিএফ’-এর তিনটি ছবিতে নাকি একসঙ্গে সই করেছেন নায়ক।
দেব বরাবরই ‘এসভিএফ’-এর ‘কাছের মানুষ’ ছিলেন। পর পর তাঁর বহু হিট ছবি এই সংস্থা থেকেই। তবে সাত বছর আগে তিনি বেরিয়ে গিয়ে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলার সিদ্ধান্ত নেন। দু’তরফে সে সময়ে মন কষাকষি ভালই হয়েছিল বলে শোনা যায়। তবে ইদানীং চিত্রটা বদলেছে। দেবের ‘প্রজাপতি’-র সাফল্যের পার্টিতে দেখা গিয়েছিল ‘এসভিএফ’-এর কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে। সম্প্রতি ব্যোমকেশের ‘দুর্গ’ দখল নিয়েও দেব এবং ‘এসভিএফ’-এর তরফে স়ৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে বিস্তর জলঘোলা হয়। তবে শেষমেশ দেবই শ্রীকান্ত মোহতাকে ফোন করে মীমাংশা করার চেষ্টা করেন। এবং তাঁর ছবির ট্রেলার লঞ্চেই ব্যোমকেশের দুই টিমকে এক মঞ্চে এনে ইন্ডাস্ট্রিকে দেখিয়ে দেন যে, তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সে সময়ই অনেকে আন্দাজ করেছিলেন, দেব বোধহয় এ বার ‘এসভিএফ’-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছবি করবেন।
অনেকেই নিজের প্রযোজনা সংস্থার কাজ ছাড়া ছবি করতে রাজি হন না। তবে দেবের অভিনেতা সত্তা এ সবের উর্ধ্বে। তিনি ভাল গল্প এবং চরিত্র পেলে এবং তাঁর কিছু শর্ত মানলে দিব্যি শহরের যে কোনও প্রযোজকের সঙ্গেই কাজ করতে প্রস্তুত। বাংলা ছবির দর্শককে যে হলে নিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে, তা ইন্ডাস্ট্রির খুঁটিরা ভাল ভাবেই উপলব্ধি করছেন। হয়তো সে কারণেই তাঁরা বলিউডের মডেল মেনে একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘বড় পরিসর’-এ কাজ করতে উদ্যোগী হচ্ছেন। এ বছর ‘পাঠান’-এর বক্স অফিসের সাফল্যই বুঝিয়ে দিয়েছে, দর্শক পর্দায় একাধিক তারকাদের একসঙ্গে দেখতে চান। যত বড় ‘স্পেক্টাকল’ তাঁদের দেওয়া যাবে, তত বেশি হল ভরাবেন দর্শক। দেব এবং ‘এসভিএফ’-ও হয়তো সেই মন্ত্র মেনেই এগোচ্ছেন।
আপাতত দেবের উদ্দেশ্য, ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত সকলকে একজোট করা, ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই ভাবনা নিয়েই কি তবে ‘এসভিএফ’ সংস্থার তিনটি ছবিতে সই করেছেন? কোনও কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে, এই তিনটি ছবির মধ্যে একটি পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে। একটি প্রেমের ছবিতে মদ্যপ প্রেমিকের ভূমিকায় দেখা যাবে নায়ককে। সত্যিই কি তাই হবে? সবটাই ক্রমশ প্রকাশ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy