সঙ্গীত দিবসে আনন্দবাজার অনলাইন হাজির তারকাদের কাছে।
চ্যানেলে চ্যানেলে গানের প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিরা মঞ্চে গান শুনিয়ে মন জয় করছেন শ্রোতাদের। বিচারকদের বাহবাও পাচ্ছেন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জয়ের খেতাবও পাচ্ছেন। তার পর? গানের জগতে পায়ের তলার জমি কি তাঁরা পাচ্ছেন? নাকি হারিয়ে যাচ্ছেন অসংখ্য তারার মাঝে। সঙ্গীত দিবসে এই প্রশ্ন নিয়েই আনন্দবাজার অনলাইন হাজির তারকাদের কাছে।
‘ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ৩’। কলকাতার ছেলে ইমন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেকেন্ড রানার আপ। বিচরকদেরও খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ইমন। কেন পারলেন না মুম্বইয়ের গানের জগতে টিকে থাকতে?
‘‘এই উত্তর আজও আমার জানা নেই। ওই শো শেষ হওয়ার পর সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছি। কিন্তু এখনও লড়াই করতে হচ্ছে। যখন গান গেয়েছি, সবাই বলেছেন দারুণ। ব্যস, ওই পর্যন্তই। মেনস্ট্রিমে কাজ করতে গেলে কী করতে হয়, সেটা আজও জানতে পারিনি।’’
গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে বিচারকের আসনে পঙ্কজ উদাসকে দেখা না গেলেও এই ধরনের অনুষ্ঠান দেখতে মাঝেমাঝেই টিভির পর্দায় চোখ রাখেন তিনি।ভাল শিল্পীর হারিয়ে যাওয়ার জন্য নেপথ্যে চ্যানেলের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন পঙ্কজ। ‘‘আমার মনে হয় এই ধরনের রিয়্যালিটি শোয়ের মাধ্যমে চ্যানেল তার বাণিজ্যিক দিকটায় গুরুত্ব দেয় বেশি। যারা এই প্রতিযোগিতায় আসে তারা যথেষ্ট প্রতিভাবান। কেউ কেউ তো ভীষণ ভাল গায়। প্রতিযোগিতার পরে তারা আর গানের জগতে জায়গা করতে পারে না। চ্যানেলের উচিত প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পরেও ওদের গানের জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে সাহায্য করা। কিন্তু চ্যানেল তো প্রতিযোগিতার তিন-চার মাস ওদের সঙ্গে থাকে। তারপর সাহায্যের হাত গুটিয়ে নেয়। প্রতিযোগীরাও হারিয়ে যায়। কিছু দিন পর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। রিয়্যালিটি শোয়ের এটাই খারাপ দিক।’’
কলকাতার গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান মানেই প্রশিক্ষকের ভূমিকায় রথিজিৎ। নিজেও রিয়্যালিটি শোয়ের ফাইনালিস্ট ছিলেন। তাঁর মতে, ‘‘সিনেমার গান না গাইলে একজন শিল্পী স্বীকৃতি পায় না। এটাই এই ইন্ডাস্ট্রির রীতি। নতুন ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেকেই ভাল গান গায়। কিন্তু তারা সুযোগ পাচ্ছে না। এর জন্য সিস্টেম দায়ী। যোগ্য গায়করা সুযোগের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।’’
প্রতিযোগিতামূলক গানের অনুষ্ঠানে বিচারকের আসনে দেখা গিয়েছে সঙ্গীত পরিচালক জয় সরকারকে। অরিজিৎ সিংহ বা শ্রেয়া ঘোষালের মত কোনও প্রতিভাবান শিল্পীর দেখা নেই কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে জয় মনে করেন, ভাল শিল্পীর অভাব আগেও ছিল, এখনও আছে। সেরার সংখ্যা বরাবরই কম। জয় আরও বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর বিরাট কিছু করে ফেললাম, এই মানসিকতা থেকেও অনেকে গানের জগৎ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।’’
বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক সোনু নিগমকে গানের অনুষ্ঠানে বিচারকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বহু বার।বর্তমানে তিনি বিদেশে অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত। আনন্দবাজার অনলাইনকে বার্তার মাধ্যমে সোনু জানিয়েছেন, ‘এই বিষয়টি খুবই আপেক্ষিক, আগেও তাঁর মতামত জানিয়েছেন, তাই আর নতুন করে বলার কিছু নেই।’ উঠতি গায়কদের জন্য রিয়্যালিটি শোয়ের গুরুত্ব কতখানি? নতুন মুখকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কার? সঙ্গীত দিবসে এই প্রশ্ন থেকেই গেল।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy