বাবাকে শেষ বার পর্দায় দু’চোখ ভরে দেখলেন পৌলমী।
‘বেলাশুরু’ অসম্ভব মন ছুঁয়ে গিয়েছে আমার। মাঝে মাঝেই চোখ ভিজে যাচ্ছিল। এই যে অ্যালঝাইমার্স, এমন বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে যে একটা সিনেমা বানানো হয়েছে, এটা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। ছবিটার মধ্যে দিয়ে এই গভীর বিষয়কে এত সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, আমার মনে হয় সব রকমের দর্শকই তা গ্রহণ করবেন।
আমার বাপী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে পর্দায় দেখছি যখন, মনে হচ্ছে যেন ওঁকে ছুঁয়ে দেখতে পারছি। বাপীকে যত বার পর্দায় দেখছিলাম, তত বারই মনে হচ্ছিল এই সিনেমাটা একটা মাস্টার ক্লাস। এত সূক্ষ এবং এত প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া অভিনয়, সত্যি ভাবা যায় না! আমি জানি উনি আমার বাবা, কিন্তু প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছিল আমি যেন বিশ্বনাথ সরকারকে দেখতে পাচ্ছি, তার সাথে একাত্ম হতে পারছি।
তেমনই ভাল লেগেছে স্বাতী কাকিমাকে। স্বাতী কাকিমার কয়েকটা দৃশ্যে তো গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। কী অসম্ভব শক্তিশালী এক জন অভিনেত্রী! ছবিটা দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যে আমরা এই দু’জনকে চিরতরে হারিয়ে ফেললাম। ওঁরা চলে গেলেন। আর আমাদের কত কিছু শেখা, জানা যে বাকি থেকে গেল! আশা করছি, এই সিনেমাটা কিছুটা হলেও আমাদের সেই খিদে মেটাবে। যে দৃশ্যে স্বাতী কাকিমা মাথায় সিঁদুর মেখে বলছে, ‘‘আমার বরকে দেখেছো?’’, সে এক অসাধারণ মুহূর্ত।
ছবিতে এই বয়সে বাপী একটা রোম্যান্টিক চরিত্রে অভিনয় করছেন এবং একেবারেই দৃষ্টিকটু লাগছে না। বরং এত মার্জিত, এত সংবেদনশীল অভিনয় সত্যি ভাবাই যায় না। এই বয়সে এসেও যে রোম্যান্টিক নায়ক হওয়া যায়, এ ছবি তার একটা অসম্ভব সুন্দর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। আর এত ভাল অভিনেতা বাকি প্রত্যেকেই! বাপী নিজে এক দিন বলেছিল, ‘‘আমার সঙ্গে কিন্তু সব বাঘা বাঘা অভিনেতারা অভিনয় করছে।’’ আমার মতে— শুধু বাঙালি নয়, সারা ভারতের দর্শক এই সিনেমাটাকে ভালবাসবেন, কারণ প্রত্যেকের জন্যই এ ছবিতে কিছু না কিছু আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy