৩৫ বছর পর ‘আদিপুরুষ’ নির্মাণপর্বে মুখ খুললেন ১৯৮৭ সালের ধারাবাহিকে লক্ষ্মণের ভূমিকায় অভিনয় করা সুনীল লাহিড়ী।
ছোট পর্দায় রামায়ণ দেখার উন্মাদনা স্মরণীয় করে রেখেছে রামানান্দ সাগরের ধারাবাহিক। ১৯৮৭ সালের ধারাবাহিকে লক্ষ্মণের ভূমিকায় অভিনয় করতেন সুনীল লাহিড়ী। ৩৫ বছর পর ‘আদিপুরুষ’ নির্মাণপর্বে মুখ খুললেন অভিনেতা।
রামায়ণ অবলম্বনেই ছবি হচ্ছে এ যুগে। সেই একই রাম, লক্ষ্মণ, সীতা, রাবণের গল্প। কিন্তু সেই নিষ্ঠা কোথায়? প্রশ্ন তুললেন সুনীল। জানালেন, ওম রাউতের ছবির সিজিআই আর ভিএফএক্সের খেলা তাঁর ‘হজম’ হচ্ছে না।
গত ২ অক্টোবর ‘আদিপুরুষ’-এর প্রথম ঝলক মুক্তির পরই বিতর্কিত চর্চার সূত্রপাত। ছবিতে রাবণের ভূমিকায় সইফ আলি খান, কিন্তু তাঁকে দেখাচ্ছে কোনও মুসলিম যোদ্ধার মতো। চোখে নীল আইশ্যাডো, পরনে ম্যাচিং জ্যাকেট— এই কি রাবণের বেশ? প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাস-সচেতন দর্শক। ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার হুমকিও এসেছে রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। এমনকি, রামের জন্মস্থান অয্যোধ্যার পুরোহিতও ধিক্কার জানিয়েছেন এই সৃষ্টিকে। সকলেরই অভিযোগ, ইতিহাসবিকৃতি ঘটেছে। তবে আগের সময়ের রামায়ণ-অভিনেতা মুষড়ে পড়েছেন অন্য কারণে। ‘আদিপুরুষ’ হতাশ করেছে তাঁকে অন্তঃসারশূন্যতায়।
সুনীলের কথায়, “এ ছবির ভিএফএক্স হজম করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সময় তো এত প্রযুক্তি ছিল না, তবু রামায়ণ হয়েছিল পর্দায়। আমরা আমাদের সেরাটুকু দিয়ে অভিনয় করেছিলাম। সে কারণেই হয়তো ৩৫ বছর পরও মানুষ সেই রামায়ণ মনে রেখেছেন। নতুন প্রজন্মকে জিজ্ঞেস করুন, তাঁরাও সেই রামায়ণ দেখে হাসেন না। কার্টুন মনে হবে না তাঁদের, আর যা-ই হোক। যদি প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া যেত, তবে আমার বিশ্বাস রামানন্দ স্যর আরও ভাল কিছু বানাতেন, হাস্যকর কিছু নয়। আমরা ভাল কিছু করব বলেই ভিএফএক্সের শরণাপন্ন হই, তবে সে সব ছাড়াই সাগর সাহেব যেটুকু পেরেছেন সেটার পুনরাবৃত্তি কঠিন।”
সুনীলের মতে, এখন মানুষের মধ্যে তাগিদ কমে এসেছে। চেষ্টার অভাব, নিষ্ঠা নেই কোনও কাজে। তাই লক্ষ্যে পৌঁছনো কঠিন হয়ে যায়। অভিনেতার কথায়, “আমরা গ্রিন স্ক্রিন, ব্লু স্ক্রিন ব্যবহার করেছি বটে, তবে প্রতিটি খুঁটিনাটি খেয়াল রেখে। কঠোর পরিশ্রম করেছি। যে দৃশ্যে হনুমানজি রামকে ঘাড়ে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, সেই দৃশ্যের শ্যুটিং করতে আমাদের চার দিন লেগেছিল।”
আশির দশকের সেই রামায়ণ চলেছিল এক বছর। রামের ভূমিকায় দর্শকের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন অরুণ গোভিল। দীপিকা চিখালিয়া ছিলেন সীতা। রাবণের ভূমিকায় অরবিন্দ ত্রিবেদী। আর দারা সিংহ হনুমান। সেই জনপ্রিয় দলকে ঘরের লোক করে নিয়েছিলেন দর্শক।
তার জায়গায় প্রভাস অভিনীত রামচন্দ্র কি সত্যিই পারবেন নতুন যাত্রা শুরু করতে? শুরুতেই যে থমকে গেল যুদ্ধরথ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy